আমি মুসলিম তাই আমার কাছে ধর্মালোচনা বিষয় মানেই ইসলাম। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ইসলাম মানেই শান্তি এবং জীবনের সব সমস্যার অপুর্ব সমাধান রয়েছে ইসলামে কিন্তু আজ আমরা কি দেখছি ? আমাদের চার পাশে মুসলিম নামধারী কিছু লোকের আচরণে আমি নিজেই লজ্জিত। মুসলিমরা আজ ইমেজ সংকটে। এই শিক্ষাই কি আমাদের ইসলাম দিয়েছে ? আমরা কি পারছি ইসলামের সুমহান মুক্তির বানী সবখানে ছড়িয়ে দিতে? পশ্চিমা বিশ্বে এখন মুসলিম মানেই অজানা আতঙ্ক। আসুন আমরা বের করি এর জন্য দায়ি কে?
আমি মনে করি এর জন্য ইসলাম বিরোধীরা যত না দায়ি তার চেয়েও বেশি দায়ি আমরা নিজেরা মানে আমরা মুসলিমরা । আমাদের জ্ঞানহীনতা আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবার জানা উচিত যে বিশ্বরাজনীতিতে উত্তপ্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার কারে একটা সাম্রাজ্যবাদী চক্র যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুপ ধারন করে মুসলিমদের উস্কানি দেয়। তারা কখনো বর্ণবাদের বিষবাষ্প ছড়িয়ে বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে। আর যখন খেকে মুসলিমরা প্রতিবাদ করতে শুরু করে তখন থেকেই শুরু হয় তখন সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্ত । মুসলিমদের এমন ভাবে উত্ত্যক্ত করা শুরু হয় যাতে বিক্ষুব্ধ মুসলিমরা তাদের সংযম হারিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলে এবং এর পর তারা ই আবার দরদী সেজে এগিয়ে আসে টুটি চেপে ধরে আমাদের। ইরাণ-ইরাক-আফগানিস্থানে এই একই গেমের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বার বার তবুও আমরা বোকা-নাদান মুসলিমরা বসে বসে পচা ডিমে তা দিয়ে যাচ্ছি আরামে । সামনে যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন তাই আরও একটা নাটকের দরকার তাই তো করা হল উদ্দেশ্যমূলক ছায়াছবির প্রচার। আবার ও ফাঁদ পাতা হল আর আমরা ও ধরা দিলাম । সারা বিশ্বে বিক্ষোভের ঝড় বয়ে গেল, বেনগাজিতে মার্কিন রাষ্টদূত সহ নিহত হল আরও তিন জন। এতে কি হল ? ইসলাম যে সহিংস ধর্ম তা প্রমান হয়ে গেল। মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর এই ছায়াছবি, কার্টুন প্রকাশ ও প্রচার করার উদ্দেশ্য শুধু উত্ত্যক্ত করা নয় বরং উত্তেজিত করে ষড়যন্ত্রে ফেলা। ধর্মীয় উত্তেজনায় শুধু মুসলিমরাই হয় এমন কিন্তু নয়, ফ্রান্সের খ্রিষ্টানরা প্যারিসে একটি সিনেমা হল পুড়িয়ে দিয়েছিল যখন যিশুখ্রিষ্টের অবমানাকারী সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। আজকাল চাইলেই যে কোন সম্প্রদায় কে উত্তেজিত করা যায়, ভারতের আসাম,মিয়ানমারে এবং আমাদের দেশে রামুর ঘটনাই আমরা তার প্রমান পাই। সামান্য একটা ঘটনা নিয়ে রামুতে যে নারকীয় তান্ডব চালানো হল তা একজন বিবেকবান মানুষের কাছে কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।
ইসলামের শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রের শিকার, তাই মুসলিমদের উচিত সংযত হওয়া, বুদ্ধি-বিবেক ব্যাবহার করে আসল উদ্দেশ্য বাহির করা। ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদ অবশ্যই করতে হবে,তবে অপরিণামদর্শী হওয়া চলবে না। আমাদের শত্রুরা চাচ্ছে বিভিন্নভাবে আমাদের উত্তেজিত করে পানি ঘোলা করতে এবং সেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে। পৃথিবীতে অনেক অসংখ্য মানুষ আছে যারা আল্লা-রাসূল মানেন না, এটা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। তাদের হেদায়েতের মালিক আল্লাহ। কিন্তু যারা আল্লা-রাসলের প্রকাশ্যে অবমাননা করবে তাদের অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে।
আসুন আমরা ধার্মিক হই তবে ধর্মান্ধ নয়। প্রতিবাদ করুন, প্রতিরোধ করুন তবে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ভুলে গেলে চলবে না। মন্দের জবাব ভাল দিয়ে দিতে হবে…….আবারও বলছি
উহারা প্রচার করুক হিংসা, বিদ্বেষ, নিন্দাবাদ আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ!