লেখাটি ম্যাডাম খালেদা জিয়ারই লেখা

সাকূর আনাম
Published : 3 Feb 2013, 02:09 PM
Updated : 3 Feb 2013, 02:09 PM

যে যাই বলুক,ওয়াশিংটন টাইমস নামক পত্রিকায় লেখাটি বেগম খালেদা জিয়ারই লেখা। আমি ভাল করে পড়ে দেখেছি। এ লেখা ওনার না হয়েই যায় না। অনেকে অবাক হয়ে বলবেন , সে কেমন করে হয়!যিনি মেট্রিক পাস করতে পারেননি, তিনি কেমন করে ইংরাজি লেখেন। আরে তিনি কেন লিখবেন। মালয়েশিয়া সিংগাপুর লন্ডনে বস্তা বস্তা টাকা ডলার পাউন্ড থাকলে সবই সম্ভব। ইংরাজি না জানলেও ইংরাজি হিব্রু ইহুদি ভাষায় লেখা যায়। টাকাই সব। লুটের পয়সায় সবই সম্ভব। মার্কিন পত্রিকার মালিক নিয়ে একটা নিবন্ধ পড়লাম ইন্টারনেটে। তাতে জানলাম এই দৈনিকটি মার্কিন মূলধারার কাগজ নয়। ঢাকার রূপগঞ্জে যেমন নিউইয়র্ক সিটি, ডালাস সিটি তেমনি একটি তৃতীয় ধারার কাগজ এটি। এটির মালিক হচ্ছে ইয়াহুদি নাসারা ও রক্ষণশীল খ্রিস্টানরা। যারা মুসলমানদের দেখতেই পারে না। যাদের লড়াই হচ্ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে। যারা সারা দুনিয়ায় মুসলমান জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বেড়ায়।

আমি একজন প্র্যাকটিসিং মুসলমান। আমি বিশ্বাস করি শান্তির ধর্ম ইসলামে। আমি ক্ষমতার পুঁজিধর্মের ব্যবহারে বিশ্বাসী নয়। আমি ঘরের ইসলামে বিশ্বাসী। আল্লাহকে সিজদায় বিশ্বাসী। সে কারনে যখন দেখি কোন একজন মুসলমান নামধারী ইয়াহুদির সাখে হাত মেলায়; ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মুসলমান ধ্বংসকারীদের হাত মেলায়; তখন দুখ না করে পারি না। বেগম জিয়া র এমন আচরন অবাককর নয়। এরি মধ্যে তিনি জামায়াতের মহিলা আমিরের পদ অলংকৃত করেছেন। চরম ধিক্কৃত একাত্তরের খুনিদের সঙেগ তারর রাজনৈতিক সহবত। তিনি গনহত্যাকারী দের বাচানোর জন্য তৎপর। তার কাছে গোলাম আযম, নিজামী , সাঈদী কাদের মোল্লাসহ খুনিদের বাঁচানো তার ব্রত। ইসলামে জানের বদলা জান। পরিষ্কার ফতোয়া। এই খুনিরা ৩০ লাখ বাঙালিকে খুন করেছে। ৩লাখ মাবোনকে ধর্ষন খুন করেছে। দেশের ১৬ কোটি মানূষ আওয়ামী লীগ সমর্থক নয়। কিন্তু এরা সবাই ৭১ এর খুনিদের বিচার চায়। ৩০ লাখ মানুষের জানের বিরুদ্ধে এই খুনিদের ফাসি চায়। কিন্তু বেগম খালেদা তা চান না। তিনি চান খুনিদের মুক্তি। এমন এক নেত্রী দেশের বিরুদ্ধে ইহুদি নাসারা মুসলমান বিরোধীদের পত্রিকায় হিব্রু ইংরাজি ম্লেচ্ছদের ভাষায় লিখবেন স্বনামে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

সংযুক্তি_______

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পদক্ষেপ নেয়ার এটাই সময়

খালেদা জিয়া ♦
২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্কে কী টানাপোড়েন সৃষ্টি হবে? ভারত এবং মিয়ানমারের মাঝামাঝি অবস্থিত, ১৫ কোটি মানুষের দেশ আমার। ১৯৭১ সালে যখন আমার এ দেশ স্বাধীনতা লাভ করে তখন যে রাষ্ট্রগুলো আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আলো যখন নিভে এসেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি উদীয়মান দেশগুলোর কাছে আনত হয়েছে, তখনও যুক্তরাষ্ট্র নীরব থেকেছে বলে অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অভিযোগ উঠেছে। তাই বলে এই বলছি না যে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার, কংগ্রেস বা মার্কিন সংস্থাগুলো আমাদের যে সহায়তা করেছে তা আমাদের কোন কাজে আসেনি। ছয় মাস আগে, ৪০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ১ হাজার ৬ শত কোটি টাকার (২শ বিলিয়ন ডলার) সহায়তা সরিয়ে নিয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে সংস্থাটি মন্ত্রী পর্যায়ে দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তদন্তও দাবি করেছে।

এছাড়া, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে অপসারণ করায় বাংলাদেশ সরকার বিশেষত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিন্দা করেছে মার্কিন কংগ্রেসের বাংলাদেশ ককাস। গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ক্ষুদ্রঋণদাতা একটি প্রতিষ্ঠান যা দেশের লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র বিমোচনে অবদান রেখেছে।

তাকে অপসারণের কারণ কী? অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এ পুরস্কার সঠিক ব্যক্তিকে দেয়া হয়নি। বাংলাদেশে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য কেউ থেকে থাকলে তিনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই কথার সাথে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই একমত হবেন না। জিজ্ঞেস করে দেখুন সেই সব পরিবারকে, যারা শেখ হাসিনার র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (RAB) হাতে নিরীহ আপনজনকে হারিয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তিনশ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এদের হাতে।

অথবা ভেবে দেখুন খুন হয়ে যাওয়া শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের পরিবারের কথা। আমিনুলের পক্ষ হয়ে এখন প্রচারণা চালাচ্ছে এএফএল-সিআইও, যাতে করে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য খাতে বাংলাদেশকে তার অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেয়।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নৃশংসতার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়েছে যেসব রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে, তাদের সমর্থকরাও হাসিনার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির অধিকার বা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।

এদিকে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শুধু সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিচার করায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতও শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করেছেন। গত ডিসেম্বর মাসে ইকোনমিস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত ইমেইল এবং টেলিফোন আলাপ ওই বিচারকাজ নিয়ে হাসিনা প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং তারা কিভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাঁয়তারা করছে, তারই প্রমাণ দেয়।

গত পাঁচ বছরে এশিয়ার অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ার পথ থেকে সরে এসে বাংলাদেশ এখন কেবল একটি পরিবারের ক্ষমতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে চলেছে।

এখন, নির্বাচনের ছয় মাস আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা সংবিধান থেকে মুছে ফেলার পদক্ষেপ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। অথচ, এই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান আনার জন্য তিনি নিজেই একসময় কাজ করেছেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয়। যদি ভোটাররা নতুন কোনো সরকারের জন্য ভোট দেন, তাহলে ক্ষমতার হাতবদল অবশ্যই হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের পর লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালেও নিজ অবস্থানে অটল রয়েছেন শেখ হাসিনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলে মানুষের সমর্থন না থাকলেও এভাবে তিনি ক্ষমতায় আবারও আসতে পারবেন বলে ধারণা করছেন।

পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার সফর করেছেন, যা পতনের হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছে দেশটিকে।

এদিকে, ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রিক দেশ হিসেবে তার উত্থান অব্যাহত রেখেছে। এ মুহূর্তে, যদি বাংলাদেশ একটি পরিবারের শাসনের অধীনে আটকা পড়ে যায়, তাহলে তা হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য আরও এক ধাপ পিছিয়ে যাওয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে নিয়ে বিশ্বদরবারে এখন আশা বাড়ছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলের আঞ্চলিক স্বাধীনতাকে সমর্থন দিয়েছে। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের মতকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সাধারন জনগণের মতামত প্রকাশ করার সুযোগ করে দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ ব্রিটেনের প্রভাব বিস্তারের একটি সুযোগ রয়েছে। আর, তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের কথা এবং কাজকে আরও জোরালো করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে সরে না যায়।

দারিদ্র্য দূরীকরণে মুহাম্মদ ইউনূস যে ভূমিকা রেখেছেন তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে। যদিও শেখ হাসিনাসহ আরও অনেকে এ ধরনের স্বীকৃতি পেতে আগ্রহী।

শ্রমিক অধিকারের সমর্থক এবং প্রাধনমন্ত্রীর রাজনৈতিক আদর্শের বিরোধী যারা, তাদেরকে তাদের মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া না হলে বাণিজ্য খাতে অগ্রাধিকারভিত্তিক সুযোগ সুবিধাগুলো প্রত্যাহার করা হবে- এ কথাটি শেখ হাসিনাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে হবে।

সরকারের যেসব ব্যক্তি গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারকে বিবেচনায় রাখেন না তাদের উদ্দেশ্যমুলক চলাফেরা ও অন্যান্য বিষয়ের উপর পশ্চিমা দেশগুলোকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

আর, এ কথাগুলো প্রকাশ্যেই বলা উচিত, যাতে করে এদেশের সাধারন জনগণ তা দেখতে এবং বুঝতে পায়। বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র বজায় রাখার যে মিশন যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে, তা নিশ্চিত করার এটাই পথ।

কথায় আছে, আইনের আদালতের চেয়েও বড় আদালত হলো বিবেক।' বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে এ কথা বলা অসম্ভব যে, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, বিচার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ নিরাপদ। প্রকৃতপক্ষে, তার অধীনে ওই বিষয়গুলো আরও বিপদজনক। বাংলাদেশে নিরাপদ গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্ববাসীর পদক্ষেপ নেয়ার এটাই সময়।

__
[দ্য ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে অনূদিত।

খালেদা জিয়া: জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী।