গ্রামীণ ব্যাংক এবং ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস

শিবলী
Published : 1 Sept 2016, 09:46 AM
Updated : 4 March 2011, 02:39 PM

গ্রামীণ ব্যাংক

গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে তাঁদের অবস্থা উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৭৬ সালে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চালু হয়। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট অনুমতি সাপেক্ষে ব্যাপক ভাবে চালু হয়। বর্তমানে প্রায় ২৫০০ শাখা রয়েছে এই ব্যাংকের। গ্রামীণ ব্যাংকের রয়েছে ২৪০০০ কর্মী। এই ব্যাংক ঋণ দিয়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ইউএসডি। ৯৫% ভাগ গ্রাহকই নারী। উচ্চ সুধের হার গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ শেষ হয়না এমন অভিযোগও রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক এবং এর গ্রাহকের মাঝে কোন লিখিত চুক্তি থাকেনা।

অনেক বিতর্ক অনেক অপবাদ তারপরও পথ থেমে যায়নি গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাংকের পথ চলা। গ্রামীণ ব্যাংক ডঃ ইউনুসের হাত ধরে পার করেছে প্রায় ৩৫ টি বছর। গ্রামীণ জনগণের অনেক আশা অনেক হতাশার উৎস এই ব্যাংক। অনেকই এই ব্যাংকের ঋণ নিয়ে জীবনে উন্নতি করেছেন আবার ঋনের টাকা শোধ না করতে পেরে ঘরবারি/জমিজমা বিক্রি করে ঋনের টাকা শোধ করেছেন এমন মানুষও আছেন। দেশে বিদেশে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক। বিদেশী অনেক ব্যাংক গ্রামীণ ব্যাংক কে দেখে উৎসাহীও হয়েছে।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস

১৯৪০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন চট্রগ্রামের হাঠহাজারিতে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে BA এবং MA করেন । ১৯৬১ সালে চিটাগাং ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে জয়েন করেন। পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৭১ সালে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় USA তে বাংলাদেশ ইনফর্মেশন সেন্টার পরিচালনা করেন। যুদ্ধের পর দেশে ফিরে বাংলাদেশ প্ল্যানিং কমিশন এ যোগদান করেন। পরবর্তীতে চিটাগাং ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক চালু করেন। ২০০৬ সালে তাকে এবং গ্রামীণ ব্যাংককে যৌথ ভাবে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়। অ্যাওয়ার্ডঃ ১৯৮৭ স্বাধীনতা দিবস পুরুস্কার, ১৯৯৪ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ, ২০০৬ নোবেল প্রাইজ, ২০০৯ প্রেসিডেন্ট মেডেল অফ ফ্রীডম।

গুঁজব থাকে নরওয়ে ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টেলিনরের কাছে গ্রামীণফোনের শেয়ার বিক্রি করে নোবেল পাওয়ার পথ করে নেন তিনি। এর পরই টেলিনর গ্রামীনফোনের লোগোতে পরিবর্তন আনে। বাংলাদেশের ঘটনাবহুল ১/১১ পর তিনি রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করেন।

বিগত কিছু দিন যাবত ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুস দেশে বিদেশে সমালোচিত হচ্ছিলেন। নভেম্বর ২০১০ সুইডিস পাবলিক সার্ভিস টেলিভিশন চ্যানেল ক্ষুদ্রঋনের ফাঁদে (Caught in microcredit) শিরোনামে ১টি ডকুমেন্টরি প্রকাশ করে যাতে বলা হয় ক্ষুদ্রঋনের ফাঁদে গ্রামীণ জনগণ আটকা পড়ে আছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ নামে ১টি প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে যা দারিদ্র বিমোচনের সাথে সম্পৃক্ত নয় ।

সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি না নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকার জন্য তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যা নিয়ে দেশে বিদেশে আলোচনা/সমালোচনার ঝড় উঠে।