জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের গণহত্যা

মোজাম্মেল খানমোজাম্মেল খান
Published : 6 Sept 2021, 06:53 AM
Updated : 16 Dec 2015, 09:17 AM

ইতিহাসের অসংখ্য নজির সত্ত্বেও, 'গণহত্যা' শব্দটি আইনি পণ্ডিত পোলিশ ইহুদি রাফায়েল লেমকিন ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়ার পর সৃষ্টি করেন। এর আগে এর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এরপর, ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গণহত্যার একটি কনভেনশন গৃহীত হয় যেটিতে একে এমন একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় যার সংজ্ঞা ছিল নিম্নরূপ:

"সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো জাতীয়, পৌত্তলিক গোত্র এবং ধর্মীয়ও গোষ্ঠীকে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে সংঘটিত।"

'প্রতিরোধ ও গণহত্যার অপরাধে শাস্তি কনভেনশন' নামে অভিহিত কনভেনশনটি ৯ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হলেও কার্যকর হয়েছে ১৯৫১ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে।

'গণহত্যা' শব্দটি আন্তর্জাতিক আইন শব্দকোষে প্রবেশের প্রায় ৬০ বছর পর, ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্মেনিয় ও ইহুদিদের ওপর এবং রুয়ান্ডাতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বেলায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৯১৫ এবং ১৯১৭ সালে সহস্র আর্মেনিয় হত্যা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানি কর্তৃক ইহুদিদের ওপর চালানো হলোকাস্ট এবং ১৯৯৪ সালের জুনে রুয়ান্ডায় স্বদেশি হুতুদের হাতে আনুমানিক ৮ লাখ রুয়ান্ডান টুটসির হত্যাকাণ্ডকে 'গণহত্যা' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

গণহত্যা বিশেষজ্ঞ এ ডির্ক মসেস বলেন:

"পুর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) ১৯৭১ সালে স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের নামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যা, প্রকৃতপক্ষে গণহত্যা, উপরে উল্লিখিত অন্য কোনো হত্যার চেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক মনোযোগ পেয়েছে। জাতিসংঘ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ বা নিন্দা করেনি। ১৯৭১ সালে পৃথিবীব্যাপী প্রত্যক্ষদর্শী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ দ্বারা বাংলাদেশের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করতে 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ন্যুরেমবার্গ ও টোকিও ট্রায়ালের অনুসরণে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বেশ কজন পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের স্থানীয় দোসরদের বিচারের পরিকল্পনা করা হয়। ইস্যুটি ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক আদালতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।''

ফিরে দেখা যাক আন্তর্জাতিক মিডিয়া গণহত্যার রিপোর্ট কীভাবে পরিবেশন করেছিল, সেটি। ২৭ মার্চ, ১৯৭১ ঢাকায় আমেরিকান কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাড 'সিলেকটিভ জেনোসাইড' শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে ওয়াশিংটনে একটি তারবার্তা পাঠান। ৭ এপ্রিল নিউ ইয়র্ক টাইমসে 'বাংলায় রক্তগঙ্গা' শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে 'নির্বিচারে বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ' প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনের নীরবতার তীব্র নিন্দা করা হয়। এর আগের দিন, ৬ এপ্রিল আর্চার ব্লাড ও তাঁর ঢাকাস্থ অফিসের ২০ সহকর্মী স্টেট ডিপার্টমেন্টে যে টেলিগ্রাম পাঠান তার শিরোনাম ছিল, 'পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে আমেরিকান নীতির মতদ্বৈধতা' এবং এটা সম্ভবত কূটনীতির ইতিহাসে মার্কিন বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে তার নিজের দেশের কূটনীতিকদের সবচেয়ে কড়া প্রতিবাদ। এর সার সংক্ষেপ ছিল নিম্নরূপ:

"আমেরিকা আজকে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে যে নীতি গ্রহণ করছে এটা আমাদের জাতীয় এবং নৈতিক স্বার্থ কোনোটার সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার বিষয়টি ঢাকাস্থ আমেরিকান কনস্যুলেটের অফিসের আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করছি। আমাদের সরকার গণতন্ত্র দলিত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সরকার অত্যাচার আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সরকার যা করছে তাকে অনেকেই 'নৈতিক দেউলিয়াপনা' বলে আখ্যায়িত করবেন, বিশেষ করে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ইয়াহিয়াকে বার্তা পাঠিয়েছে গণতন্ত্রের সমর্থন করে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগুরু দলের নেতাকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে (ঘটনাক্রমে তিনি পাশ্চাত্যপন্থী) এবং রক্তপাত ও দমননীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে। অথচ আমরা হস্তক্ষেপ করছি না, এমনকি নৈতিকভাবেও না, যেখানে সোজা কথায় 'গণহত্যা' চলছে সেখানে– এ অজুহাতে যে, এটা একটা সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বহু সাধারণ আমেরিকানও ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ।

আমরা পেশাদার সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানাচ্ছি এবং আকুলভাবে আশা করছি আমাদের সত্যিকার এবং স্থায়ী স্বার্থ যাতে রক্ষা হয় সে উদ্দেশে নীতি পরিবর্তিত হবে এবং আমাদের দেশ যে মুক্ত দুনিয়ার নৈতিক নেতা সেটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।"

পেগি ডারদিন মে মাসের শুরুর দিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক নিবন্ধে বাংলাদেশের গণহত্যা 'আধুনিক সময়ের সবচেয়ে রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞ' হিসেবে বর্ণনা করেন। যুগান্তকারী আরেকটি ঘটনা ঘটে জুন মাসে। করাচিতে মর্নিং নিউজের সহকারী সম্পাদক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস পূর্ব পাকিস্তানে ৯ পাকিস্তানি ডিভিশনে সংযুক্ত এক সরকারি যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসেবে বাংলাদেশ সফর করে পরে লন্ডনে পালিয়ে যান। তিনি লন্ডনের সানডে টাইমসেরও সংবাদদাতা ছিলেন। তিনি ওই দৈনিকে একই দিনে দুটো– একটি দীর্ঘ নিবন্ধ এবং একটি সম্পাদকীয়– লিখেন এবং দুটিই 'গণহত্যা' শিরোনামে প্রকাশিত হয়। মাসকারেনহাসের নিজের দেখা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে।

'হংকং স্ট্যান্ডার্ড' পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে শিরোনাম ছিল, 'আরেকটি চেঙ্গিস' এবং সেখানে 'পাকিস্তানি সামরিক জেনারেল টিক্কা খান এবং তার পোশাকধারী গলাকাটা গ্যাং একটি জাতির অর্ধেক মানুষকে ধ্বংস করার চেষ্টায় লিপ্ত' বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের আঙ্গিনায় ১ আগস্ট দ্য বিটলস বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত গণহত্যায় বাঙালিদের দুর্দশা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়াতে ৪০ হাজার শ্রোতার সামনে 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' আয়োজন করে। সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ভারত ঘুরে এসে বাংলাদেশের মানুষের উপর পরিচালিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দেন।

৩ জুন জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা 'মানবেতিহাসের অন্যতম বিয়োগান্তক পর্ব' উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে এক চিঠিতে লেখেন:

"অবশ্যই এ ঘটনার সত্যসমূহ যোগাড় এবং তার নিজস্ব মূল্যায়ন করবেন ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকেরা, কিন্তু তা মানবেতিহাসের একটি পৃষ্ঠায় একটি খুব ভয়ানক ফোঁটার সৃষ্টি করেছে।"

তবে পূর্ব পাকিস্তানে জাতিসংঘের প্রবৃত্তি মানবাধিকার নয়, মানবিক সমস্যা দ্বারা চালিত হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি উ থান্টের ইঙ্গিত আমলে নেননি। ভারতের সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে অংশ না নেওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ ঘুমিয়ে ছিল। স্পষ্টতই তত দিন উপমহাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তবে ডিসেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে যুদ্ধবিরতির, যা ছিল স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য এবং সেটার অর্থ ছিল গণহত্যা নিরিবছিন্নভাবে চলতে দেওয়া। তবে পর পর দুটো সোভিয়েত ভেটো ভারত ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে সুযোগ করে দেয় 'গণহত্যাকারী' বাহিনীকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণে বাধ্য করার, যার পরিণতিতে জন্ম হয় বাংলাদেশের এবং ঘটে পৃথিবীর অন্যতম নৃশংস গণহত্যার পরিসমাপ্তি।

১৯৭১ সালের এপ্রিল ও সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতিগত বৈষম্য বিলোপ কমিটির সভায় গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশের গণহত্যার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি। ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন বিষয়টি 'সদস্য দেশের অভ্যন্তরীন প্রশ্ন' এ রকম অজুহাত তুলে উদ্বেগ বা নিন্দা প্রকাশ থেকে বিরত থাকে বা কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপেরও উদ্যোগ নেয়নি। ক্রোধান্বিত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অকৃতকার্যভাবে 'অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন'এর জবাব দিতে যেয়ে বলেন, "এটা কোনো দেশের ক্ষুদ্র অংশ নয় যে তারা বৃহত্তর অংশ থেকে বিছিন্ন হতে চাচ্ছে। এটা হল দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যারা তাদের অধিকার দাবি করছে।"

সুদীর্ঘ ৪৪ বছর কেটে গেছে এবং উ থান্টের পর্যবেক্ষণ সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অনেক বই লেখা হয়েছে; সেমিনার ও কর্মশালা বিশ্বের বহু অংশে অনুষ্ঠিত হয়েছে; অকাট্য দলিল এবং কঠিন ও জমাটবদ্ধ প্রমাণসহ জাতিসংঘের কাছে দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশে পরিচালিত গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের গণহত্যা অনেক মার্কিন ও কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালযয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় 'সত্য এবং বিচার' শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে দাবি জানানো হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্যারি ব্যাসের The Blood Telegram: Nixon, Kissinger, and a Forgotten Genocide নামের বইয়ের ভূমিকায় তিনি লিখেছেন:

"এ বই হল পৃথিবীর দুই বৃহত্তম গণতন্ত্র, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র, বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ানক মানবিক সংকটে একে অপরের সঙ্গে কীভাবে মুখোমুখি হয়েছে তা নিয়ে। সে হত্যাযজ্ঞ– যেটা সংগঠিত হয়েছিল এখনকার বাংলাদেশ– সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক মুখ্য নৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যদিও আজ এটা আমেরিকানদের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কাছে অনেক বেশি পরিচিত। আধুনিক যুগের হিংস্রতার অন্ধকার কাহিনিতে এটা বসনিয়ার তুলনায় অধিকতর রক্তক্ষয়ী এবং অনেকটা রুয়ান্ডার সমকক্ষ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। এ ঘটনা ভারত, পাকিস্তান এবং এবং বাংলাদেশের উপর– যেখানে এক ষষ্ঠ মানবজাতি বাস করে– পর্বতসম প্রভাব ফেলেছিল।"

গিনিস বুক অব রেকর্ডসেও বিংশ শতাব্দীর শীর্ষ পাঁচ গণহত্যার অন্যতম হিসেবে তালিকাভুক্ত করা সত্ত্বেও ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশনের কর্তাদের টলানো যায়নি; ত্রিশ লাখ নিরস্ত্র মানুষ হত্যা 'গণহত্যা' হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। এর বিপরীতে, গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী আসামীদের আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচারের মুখোমুখি হবার সুযোগ যেখানে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিচারপ্রক্রিয়ার নিন্দা করার সুযোগ ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন হাতছাড়া করছে না।

১৯ নভেম্বর জেনেভায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশনের এক মুখপাত্র সরকারের আইসিটির দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়ন করা উচিত নয় বলে বিবৃতিতে বলেছিলেন, "ট্রাইব্যুনালে পরিচালিত বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে আসামীদের সন্দেহ উত্থাপিত হয়েছে।" বিবৃতিটি এসেছিল দুজন যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে। আফসোসের কথা হল, ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন এমন দুই অপরাধীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যাদের অপরাধ, আইসিটির বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভাষায়, "নিঃসন্দেহে যেমন ভয়ঙ্কর অপরাধের ধরনের মধ্যে পড়ে যা মানবজাতির সমষ্টিগত বিবেক কাঁপিয়ে তোলে।"

ত্রিশ লাখ নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে নৃশংসভাবে যখন হত্যা করা হয়েছিল, তখন এটি 'একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীন প্রশ্ন' এ অজুহাত তুলে ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন মুখ বুজে ছিল। এখন আরেকটি 'সার্বভৌম দেশের কজন নাগরিকের স্বচ্ছ ও খোলা আদালতে বিচার এবং দণ্ডিত আসামীদের দণ্ড কার্যকরণ (অভ্যন্তরীন প্রশ্ন)' নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার নৈতিক কর্তৃত্ব কি সে কমিশনের রয়েছে?

মোজাম্মেল খান: কানাডা-প্রবাসী অধ্যাপক।