অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হাবিপ্রবি

সোহানুর শুভ
Published : 24 March 2017, 02:36 AM
Updated : 24 March 2017, 02:36 AM

উত্তরবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর শহর থেকে ১০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। ১৩০ একরের এই ক্যাম্পাস সৌন্দর্যের লীলাভূমি বলে আখ্যায়িত করে যেতে পারে।

রয়েছে তিনটি প্রবেশদ্বার। সচরাচর প্রথম ও দ্বিতীয় প্রবেশদ্বারটিকেই কেন্দ্র করে সকল ব্যক্তিবর্গ। প্রবেশপথে হাতের ডানে বোটানিক্যাল গার্ডেন যা এগ্রিকালচার অনুষদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির শত শত উদ্ভিদ, রয়েছে ঔষধি বৃক্ষরাজি। আর বাঁমে জিমনেশিয়াম, একটু এগুলেই ড. এম এ ওয়াজেদ ভবন। এই ভবন হাবিপ্রবির সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ভবন। সবচেয়ে বেশি অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম চলে এখানে। একটু এগোলেই একাডেমিক ভবন- ৩।

আর পিছনে নির্মাণাধীন প্রশাসনিক ভবন।দুই ভবনের মাঝে লম্বা রাস্তা, যা একে একে তাজউদ্দীন আহমদ হল, ডরমিটরি ২ এবং এখন এগুচ্ছে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হলের দিকে, যা হবে হাবিপ্রবির সবচেয়ে বড় হল। হলের একদম সম্মুখ দিকে ময়নাদ্বীপ, যা হাবিপ্রবির অন্যতম দ্বীপ। কপোত কপোতীদের জন্য অভয়ারণ্য। তার সাথেই তিনটি পুকুর, আর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল। তাজউদ্দীন আহমেদ হলের পাশে বিশাল গবেষণার মাঠ, সেখানে কৃষি অনুষদের গবেষণা হয়। সাথে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নার্সারি ও মসজিদ।

এদিকে প্রথম গেট দিয়ে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে নানা রকমের ফুল, এর মধ্যে রয়েছে নাগ লিংগের মতো ফুল গাছ, রয়েছে দেবদারু গাছের সারি, আর হাতের ডানে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ যা একাডেমিক ভবন ২ নামে পরিচিত। কিছুদূর এগুলেই ক্যাম্পাসের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা ডি বক্স চত্বর। এর পরেই শেখ রাসেল হল, তার উল্টো দিকে শহীদ মিনার, আর একটু এগুলেই একাধারে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, মেডিকেল সেন্টার, ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবন ও বিভিন্ন টাইপ এর কোয়াটার।

একাডেমিক ভবন ১ এর পাশে লাইব্রেরি চত্বর,যেখানে নিয়মিত চলে আড্ডা। কখনো গিটার নিয়ে গান গাওয়া, কখনোবা প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসার গল্প। গল্প যেন শেষই হয় না এই চত্বরে।

অবশ্য আড্ডা দেয়ার জন্য রিয়েছে চার দেয়ালের টি এস সি । শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের মিলন স্থল এটি। এখানে যেমন হয় বিনোদনের, ঠিক তেমনি হয় পড়ালেখা। সকাল থেকে শুরু করে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলে আড্ডা,পড়ালেখা, গান, মাস্তি সব। এক কথায় বিনোদনের কারখানা।

ক্যাম্পাসের শুটিং স্পট নামে পরিচিত ও-বক্স যা ওয়াজেদ ভবনের সামনে অবস্থিত। প্রায় ২৩ প্রকারের অরনামেন্টাল গাছ লাগানো রয়েছে। শীত আসলেই যেন পরিপূর্ণ হয় ফুলে।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের কথা না বললেই নয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উত্তরবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ কর্নার অবস্থিত এই হাবিপ্রবিতে। প্রবেশ পথেই রয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র। এর রয়েছে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট। দুটি কক্ষে দুটি জোন করা হয়েছে। একটিতে কালো এলাকা যা তখনকার অবস্থা আর উজ্জ্বল করে রাখা হয়েছে সেই সময়ের দেশপ্রেমী মানুষদের। মানচিত্রের ওপর তিনটা রঙ ব্যবহার করা হয়েছে, যা তখনকার পতাকাকে বুঝায় লাল, সবুজ, হলুদ। ছয় ঋতুর দেশকে দেখানো হয়েছে প্রথম ঘরে।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই লাইব্রেরিতে বসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে কেউ বই পড়তে পারবে। এক কথায় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি।