যতদূর মনে পড়ে ১৯৯৯/০০ সালের কথা, এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সময় বাজারে একধরণের ছোট বই পাওয়া যেত আকারে পকেট ডিকশনারির মত কিন্ত পুরুত্বটা আর একটু কম। এটি কম্বুস নামেই বেশী পরিচিত ছিল। প্রতিটি বিষয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া থাকত। পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীরা এগুলো লুকিয়ে নিয়েই প্রবেশ করত। তারা মনে করত নকল পরীক্ষারই অংশ। ২০০১ সালের পর থেকে নকলের পরিমাণ কিছুটা কমতে থাকে। তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সিনেমার মত স্টাইলে বিভিন্ন কেন্দ্রে ঝটিকা ভিজিট করে অনেক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন। ফলশ্রুতিতে একধরনের ভীতি থেকেই নকলের পরিমান কমে যায় কিন্ত পাশের হার বাড়েনি। পরবর্তীতে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করার পর জিপিএ এর সাথে সা্থে পাশের হার বাড়তে থাকে। তারপর থেকে দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে নকলের তেমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্ত বিপত্তিটা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। সারা দেশের মেধাবীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত মেধাবীরা ভর্তি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্ত তাদের মধ্য থেকেই উল্লেখযোগ্য একটা অংশ নকলের মত ভয়াবহ মারাত্মক ব্যধিতে আক্রান্ত। টিউটরিয়াল পরীক্ষা থেকে শুরু করে ফাইনাল পরীক্ষা সবখানেই নকলের ছড়াছড়ি। শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা প্রতিনিয়তিই নকল করে যা্চ্ছে। ছোট চিরকুট, স্মার্ট ফোন, পরিধেয় বস্ত্র, হাত-পা সবই ব্যবহার করছে তারা নকল করার জন্য। ৯৯/২০০০ সালে নকল করত পাশ করার জন্য আর এখন নকল করে প্রথম হওয়ার জন্য। অনেকেই আবার নকলে ধরা খেয়ে ছাড়া পেয়ে যায়। অনেকে আবার নকল না করেও সাজা পায়। লঘু পাপে গুরু দন্ডের মত। এক ছেলে নকল করেনি শুধু মাত্র ফোন কভারে কয়েকটি শব্দ লিখে এনেছিল তাতেই একবছরের বহিষ্কার আর একটি মেয়ে নকল করে ধরাও খেয়েছিল ভাল শিক্ষার্থীর লেভেল থাকার কারণে কিছুই হয়নি। এইযে নকল হচ্ছে এর কি কোন প্রতিকার নেই। তোমরা নকলের জন্য যতটুকু মেধা ব্যয় কর ততটুকু মেধা যদি পড়ালেখার পেছনে ব্যয় কর তাহলে অবশ্যই পারবে। আর ১০০ তে ৮০ পেলেই তো এ+ ৯৯ না পেলেও তো চলে তাইনা? এত এত সিজিপি এর নৈতিক ভিত্তিটা কি? মনে রাখবে একটা বিল নষ্ট করার জন্য একটি কচুরি পানাই যথেষ্ট। ঠিক দশমিক শূণ্য এক বাড়াতে গিয়ে তোমার ৩.৯৯ টাকে নষ্ট করোনা।