নগরে প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত ওজনসহ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিদিন তিরিশ মিনিট থেকে এক ঘন্টা হাঁটলে এ সমস্ত রোগ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিরোধ করা যায়।
ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন একজন পথচারী মারা যায়। ঢাকা শহরে হেঁটে অধিকাংশ যাতায়াত হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিরাপত্তায় প্রশস্ত ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, পথচারী সহায়ক সিগন্যাল বাতি ও সাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেই। অথচ ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালসড়ক) ও মেট্রোরেল এর মত প্রকল্পের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব করা হচ্ছে, যা গুটিকতক ধনী মানুষের যাতায়াত সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করা হচ্ছে। যাতায়াত ব্যবহৃত উন্নয়নে গৃহীত প্রতিটি প্রকল্পে পথচারীর জন্য পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ রাখাসহ পথচারীর জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন।
নগরে পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত ওজন ও ক্যান্সার এর মত অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। যা প্রতিদিন হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে অর্ধেকের বেশি ঝূঁকি হ্রাস করা যায়।
ঢাকায় ৭৬ ভাগ যাতায়াত হয় ৫ কি.মি. এর মধ্যে, যার অর্ধেক আবার ২ কি.মি. এর কম। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এই দূরত্বে হেঁটেই যাতায়াত করা সম্ভব। কিন্তু ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং, ময়লা আবর্জনা রাখা ও কনস্ট্রাকশনের জিনিসপত্র থাকায় হাঁটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। অবিলম্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে এগুলি অপসারণ হওয়া প্রয়োজন।
গত পাঁচ মার্চ মাননীয় হাইকোর্ট কর্তৃক জারিকৃত রুল এ ফুটপাতে মোটর বাইক চলাচল ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা অমান্য হচ্ছে। অবিলম্বে এর বাস্তবায়নসহ পথচারীদের নিরাপত্তায় বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরী।
পথচারীদের জন্য সমতলে রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। কেননা শিশু, নারী, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, অসুস্থ এবং মালামাল নিয়ে যারা হেঁটে চলাচল করেন তাদের পক্ষে তিনতলা উচ্চতার ফুটওভার ব্রিজ অতিক্রম করা সম্ভব নয়।