মানবঅনধিকার

শওকত আলি
Published : 25 August 2012, 05:00 AM
Updated : 25 August 2012, 05:00 AM

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দিলেন ইকুয়েডরের সাহসী প্রেসিডেন্ট কোরেয়া। জুলিয়ানের অধিকার আছে আমেরিকার এসব গোপন তথ্য ফাঁস করার। একটি শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক! দেশ অস্ত্র ও গায়ের জোরে যখন সারা বিশ্বে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে, সাধারন জনগনকে জিম্মি করে তাদের নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত তখন অবাধ তথ্য প্রবাহের এই যুগে একজন সাংবাদিক ও সচেতন মানুষ হিসাবে এবং নিজের প্রাণনাশের ঝুঁকি আছে জেনেও সব গোপন তথ্য প্রকাশ করে আমেরিকার শাসকদের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়ে মানবাধিকার ও সাংবাদিকতার এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্হাপন করলো জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। স্যালুট তাঁকে। কোন আইন ভংগ করেনি সে,সাংবাদিকদের কাজ অপরাধের গোপন তথ্য প্রকাশ করা সে তাই করেছে কিন্তু দুর্জনের কি ছলের অভাব আছে? তাবেদার বৃটেন ও সুইডেন কে দিয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জুলিয়ানকে পাওয়ার জন্য মরিয়া আমেরিকা।এতইটা মরিয়া যে বৃটিশরা এখন কূটনৈতিক আইন ও শিষ্টাচারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বৃটেনস্হ ইকুয়েডর দূতাবাসে হানা দিতে উদ্যত। ঘেরাও করে রেখেছে ইংলেন্ডেস্হ ইকুয়েডর দূতাবাস ।

আমেরিকা আর তার তাবেদাররা তো মানবধিকার রক্ষা করেই চলছে সেই কবে থেকে! ১৯৪৫ এ হিরোশিমা নাগাশাকিতে আণবিক বোমা ফেলে লক্ষ লক্ষ সাধারন মানুষের জীবন কেড়ে নিল শুধুমাত্র বোমার কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য। ভিয়েতনামে রাসায়নিক বোমা ফেলে হাজার হাজার সাধারন মানুষের জীবন কেড়ে নিল।এখনও এ সব স্থানে জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ শিশু।ক্যানসার সেখানে সাধারন রোগ।গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে এই ধূয়া তুলে ইরাককে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েও কোন বিধ্বংসী অস্ত্র পেল না। এমনকি বিনা কারনে ইরাক আক্রমনের জন্য কোন অপরাধও স্বীকার করেনি।স্বীকার করবে কেন?তারা তো সব মানবধিকার রক্ষার জন্য করছে। মানবাধিকারের জন্যই তো আফগিনাস্তানে ড্রোন বিমান থেকে বোমা ফেলে শিশু,নারী,বৃদ্ধ, নিরীহ বরযাত্রী নির্বিশেষে সবাইকে হত্যা করা হচ্ছে।তবুও মানবধিকার রক্ষা হচ্ছে না।গাদ্দাফিকে মেরেও হয়নি।দেখা যাক ইরান আর সিরিয়াকে ধরে কিছু হয় কিনা।শত শত বছর ধরে এরা কখনও বাণিজ্যের নামে কখনও ধর্মের নামে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রুপে বিশ্বের দুর্বল দেশ গুলো শোষণ করেছে। এখন মানবাধিকারের নামে নিরীহ সাধারন মানব হত্যা করে দেশে দেশে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে এরা তৃতীয় বিশ্বকে একটি অসভ্য ও মানবঅনধিকার বিশ্বে পরিণত করার চেষ্টা করছে। শোষণ করার ক্ষেত্র তৈরী করছে। মনে হয় তারা আধুনিক ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরী করার চেষ্টা করছে।