বিএনপি, ভারতের বন্ধু না দালাল

শওকত আলি
Published : 30 Nov 2012, 11:52 AM
Updated : 30 Nov 2012, 11:52 AM

বেগম খালেদা জিয়া গত ২৮শে নভেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় সমাবেশ করলেন।প্রায় প্রতিদিন এখানে সভা হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ফকিরাপুলের মোড় থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত রাস্তাটি বিএনপির নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে, যখন ইচ্ছা তখন কোন অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সভা সমাবেশ করে যাচ্ছেন, এতে সাধারণ জনগনের কি অপরিসীম ভোগান্তি হচ্ছে তা ভাবার মত সময় কোথায়। এখন রাজনীতির জন্য সাধারণ জনগনের প্রয়োজন হয় না এখন দরকার ক্যাডার। জনগনের জন্য তৈরী থাকে দুর্ভোগ আর ক্যাডারদের জন্য তৈরী থাকে বিরিয়ানির প্যাকেট আর দল ক্ষমতায় গেলে অফুরন্ত সম্ভবনা।তারা নাকি পল্টন ময়দানে সমাবেশ করার অনুমতি না পেয়ে এই রাস্তায় সমাবেশ করেন।অনুমতির তোয়াক্কা না করে যদি ব্যস্ত রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করা যায় তা হলে পল্টন ময়দানে অনুমতির তোয়াক্কা না করে সমাবেশ করতে বাধা কোথায়।

বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য সরাসরি শোনার সৌভাগ্য আমার হয়নি তবে ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ও দলীয় কর্মসূচির খবর জানা গেল কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রিয় বক্তব্য "আওয়ামি লীগ ভারতের দালাল" কথাটি অনুপস্থিত এমনকি ভারত বিষয়ে তার কোন বক্তব্যও চোখে পড়ল না।সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য শুনেছে এমন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর পেলাম না,তারা নাকি খেয়াল করেনি। তবে কি ডিগবাজিতে ওস্তাদ মওদুদ আহাম্মদের কথাই ঠিক! ভারত নীতি পরিবর্তন করে বিএনপিকে দালালের মর্যাদা দিয়েছে! বাংলাদেশে তো ভারতের কোন বন্ধু ছিলো বলে শোনা যায়নি তবে দালাল ছিলো। অবশ্য কিছুদিন আগে বিএনপির এম কে আনোয়ার বলেছিলেন ভারত "বন্ধু" পরিবর্তন করেছে তার মানে আওয়ামি লীগ এতদিন ভারতের বন্ধু ছিলো দালাল নয়, তাহলে এখন বিএনপি ভারতের বন্ধু আওয়ামি লীগ নয়। আওয়ামি লীগ কি এখনও দালাল? একেবারে আঠারো গিট্টুর জট, কে যে বন্ধু কে যে দালাল,সবাই মিশে একাকার।

জন্মের পর থেকেই বিএনপি'র রাজনীতির প্রধান হাতিয়ার ছিল ভারত বিরোধিতা এখন হঠাৎ খালেদা জিয়া ভারত সফরে গেলেন,তারপর ভারত বিরোধিতা বন্ধ করে দিলেন। ভারতের সাথে আমাদের ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইমুখ সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে? ট্রানজিট? সীমান্ত সমস্যা? খালেদা জিয়ার ভারত সফরের পর পর আর কোন সমস্যা থাকলো না!এম কে আনোয়ারের কথা অনুযায়ি বিএনপির এখন আওয়ামি লীগের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত কারণ তারা সব সময় আওয়ামি লীগকে ভারতের বন্ধু না বলে দালাল বলত।

বিএনপির মিছিল থেকে এখন আর শ্লোগান উঠে না "ভারতের দালালেরা হুশিয়ার, সাবধান"।

অবশ্য নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেরা কি কখনো শ্লোগান দেয়?