সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র দেশ বাংলাদেশ, যে দেশের অধিবাসীরা বছরে তিনটি নববর্ষকে বরণ করি। বাংলা, ইংরেজী ও হিজরি। বাংলা নববর্ষে আনন্দ করি,ইংরেজী নববর্ষে ফূর্তি করি আর আরবী নববর্ষে ধর্ম-কর্ম করি।এই তিনটি নববর্ষের আগমনও তিনটি সময়ে।বাংলা বর্ষের আবির্ভাব গ্রীষ্মের সূর্যোদয়ে, আরবি বর্ষ শুরু হেমন্তের সূর্যাস্তে আর ইংরেজী বর্ষের আগমন শীতের মধ্যরাতে সুর্য অস্ত ও উদয়ের মাঝামাঝি।
ষড়ঋতুর দেশের বাসিন্দা আমরা। বৈচিত্র্যে ভরা আমাদের ঋতুগুলো।কোন ঋতু আনন্দের কোন ঋতু কষ্টের কোন ঋতু বিরক্তের তবু সব ঋতুকেই আমরা সাদরে বরণ করে নেই।গ্রিস্মের কাঠফাটা রোদে ফসলের মাঠে যখন আমাদের পিঠের চামড়া পুড়ে কালো হয়ে যায়!বর্ষায় যখন আমাদের ঘরের চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে ঘর সয়লাব করে দিয়ে যায়!শীতকালে প্রচন্ড শীতে যখন জড়সড় হয়ে পড়ে থাকি সকালের রৌদ্দুরের আশায় তখনও আমাদের বরণডালা সাজানো থাকে নতুনকে বরণ করার জন্য। আগামীর অদৃশ্য আশাই যে আমাদের বেঁচে থাকার ভরসা!!
নববর্ষ আর ষড়ঋতুর মত আমাদের মন,চরিত্র সবই বৈচিত্র্যভরা।সামরিকতন্ত্র,গনতন্ত্র,একনায়কতন্ত্র যে কোন কিছু বরণে আমাদের অনীহা নেই।আমরা দল ও নেতাদের প্রতি যতটা অনুরক্ত দেশের প্রতি ততোধিক বিরক্ত।কারন আমরা দেশকে ভালবাসি কিনতু দেশ আমাদেরকে কিছু দেয় না শুধু নেয় অথচ দল ও নেতাদের দুহাত ভরে দেয়, নেয় না কিছু।
তবুও সূর্যোদয়ে,সূর্যাস্তে অথবা মধ্যরাতে আমরা বরণডালা সাজিয়ে বসে থাকি নতুনকে বরন করতে, আশাপূর্নের আশায়।
নতুন বছর।নতুন সূর্য। নতুন আশা।
সবাইকে বছরের শেষ নববর্ষের ভালবাসা।