তারুণ্যের চোখে চেতনা

নিস্তব্ধ আকাশের স্বপ্ন
Published : 9 Feb 2013, 06:09 PM
Updated : 9 Feb 2013, 06:09 PM

"আমরা স্বাধীনতার সূর্যোদয় দেখি নি তাই বলে নিজেদের চোখের সামনে সূর্যাস্ত দেখতে চাই না" কথাটা কাল শাহবাগের মোড়ে দাড়িয়ে থাকা ১৫ বছর বয়সের এক তরুণের, আসলে আমরা ৫২ দেখি নি কিংবা ৭১ দেখি নি কিন্তু যারা ৫২ ও ৭১ এর স্বাধীনতার সূর্যটাকে অন্ধকারের মাঝে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল তাদের ভয়ঙ্কর দৃষ্টিগুলো আজও সেই কলঙ্কময় অধ্যায়ের সাক্ষী হিসেবে আমাদেরই দেশের মাটিতে সক্রিয়ভাবে বিরাজমান। তাই আজ সারাদেশের তরুণসমাজ একটি বিষয়ে সোচ্চার যে তারা এই দেশের মাটিতে কোন দেশদ্রোহীকে স্থান দিবে না। আমরা এমন একটা জাতি যারা সবসময় লড়াই করে এবং তাদের লড়াই করে অর্জিত দৃষ্টান্তগুলো আজ ও আমাদের এক হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার প্রধান হাতিয়ার।

বেশিদিন আগের কথা নয় যখন আমাদের দেশের এই চিহ্নিত দেশদ্রোহীরা দেশের বুকে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়িয়েছে আর আমরা মাথা নিচু করে তাদেরকে সালাম দিয়েছি। তারা এমন এক রাজনৈতিক শক্তি যারা ধর্মকে ব্যবহার করেছে তাদের রাজনৈতিক হতিয়ার হিসেবে, এত বড় মানবতাবিরোধীদের যদি আমরা বিচার করতে না পারি তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য চরম হতাশার এবং সেই সাথে অপমানের। গত মঙ্গলবার যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তারপর থেকেই ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে তাঁর মৃত্যুদণ্ড দাবি করে মঙ্গলবার বিকেলেই শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য ও ব্লগাররা। তারা সবাই তরুণ, তাদের চোখে গণজাগরণের চেতনায় জ্বালানো প্রদীপের শিখা, সেই প্রজ্বলিত শিখা ছড়িয়ে পড়েছে এখন সারা দেশে। চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রংপুর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একইভাবে আন্দোলন চলছে। এই তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, 'আপনারা এই আন্দোলন চালিয়ে যান। শাহবাগকে নাম দিন নতুন প্রজন্ম চত্বর।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, 'বাংলার মানুষ এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে।'

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'যে ৩৪৪ জনকে হত্যার ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে, তাতে কীভাবে মৃত্যুদণ্ড না হয়ে যাবজ্জীবন হতে পারে? একাত্তরের কসাইয়ের বিচারের রায় যদি এটা হয়, তাহলে অন্যদের বিচারের রায় কী হতে পারে, তা নিয়ে জনগণ আজ শঙ্কিত।'

তরুণদের এই জাগরণ এখন ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশের সর্বসাধারনের মধ্যে, আমরা যারা স্বাধীনতার পরের প্রজন্ম তাদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় সুযোগ দেশের জন্য দেশের স্বাধীনতার জন্য কিছু করা ।