ওরা ছিদ্রযুক্ত প্রাণী, মানুষ নয়?

সীমান্ত প্রধান
Published : 19 Sept 2016, 00:41 AM
Updated : 19 Sept 2016, 00:41 AM

হ্যাঁ মেয়ে মানেই ছিদ্রযুক্ত, সুডোল দেহের অধিকারী! তার উন্নত নিতম্ব, কটিদেশ, চিবুক, বুক- সবই রসালো! তাই মেয়ে মানেই ভোগের সামগ্রী! যেমন, অনেক পুরুষের কাছে স্পেশাল কিছু খাবার প্রণালী! জন্তু-জানোয়াররা যেমন ক্ষুধার্ত অবস্থায় নিজের সন্তানকেও ভক্ষণ করতে দ্বিধা করে না। ঠিক একই ভাবে পুরুষও কাম-বাসনায় উন্মাদ হয়ে উঠলে মেয়ে, বোন, শ্যালিকা বা অন্য কী সম্পর্ক (?) তারও ধার ধারে না। হ্যাঁ, দোষ মেয়েদেরই! তারা ছিদ্রযুক্ত বলে দোষটা তাদেরই!

পুরুষের শিশ্ন বারবারই এমন ছিদ্রযুক্ত প্রাণী খুঁজে বেড়ায় নানা ছলে, নানা রূপে, নানা কৌশলে। কেউ প্রলোভন দেখিয়ে, কেউ প্রেমের নামে মিথ্যে ছলনা করে উদগ্রীব হয়ে থাকে মেয়ে দেহভোগ করতে, যা স্পষ্ট ভাষায় ধর্ষণই।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমরা প্রতিদিনই খবর পাই ধর্ষণ, নির্যাতনের। একবার খবর পেয়েছিলাম আফগানিস্তানের এক অসহায় মেয়ের। যার কাছে আদালতে পাড়ায় জানতে চাওয়া হয়েছিল -তার কোলের মেয়েটি কে? মেয়েটি উত্তর দিয়েছিল, -আমার বাবা তার বাবা, কিন্তু সে আমার মেয়ে!

একবার খবর পেয়েছিলাম, ঢাকার টঙ্গি এলাকায় বাবার বিকৃত যৌন লালসা যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে একটি মেয়ে পুকুরে ডুবে মরেছিল। মেয়েটি নাকি অন্তঃসত্ত্বাও ছিল! এছাড়াও ঢাকার খিলগাঁয়ে বাবার হাতে ধর্ষিত হয়েছিল ৮ বছরের একটি মেয়ে! এই তো সম্প্রতি এমন আরো একটি খবর বেশ আলোড়ন তুলেছে। যে খবরটি ছিল, বাবার হাতে মেয়ে ধর্ষিত, ধর্ষক পিতা গ্রেপ্তার!

আরও একটি খবরে দেখেছিলাম, ভারতের জলপাইগুঁড়ি জেলার ধুপগুঁড়ি গ্রামে ১৬ বছরের একটি মেয়েকে গত ২ বছর ধরে বাবা, কাকা ও দাদা মিলে ধর্ষণ করে চলেছে। এই ঘটনার জেরে দুবার গর্ভবতী পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল সে মেয়েটি! ভাবা যায়, কতোটা নির্মমতা? মানুষ কতোটা পশু হলেও এমন কাজ করতে পারে? মানুষ বলি কেন! কথা তো হচ্ছিল পুরুষ নিয়ে। তাহলে কতটা নিষ্ঠুর আর অমানবিক হতে পারে একটা পুরুষ, সে ভাবনাটা ভাবতেই গা কাটা দিয়ে উঠছে না?

এমন ঘটনা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে অহরহ ঘটছে। যার কিছু খবর আকারে আমরা জানতে পারি আর অধিকাংশই থেকে যায় খবরের অন্তরালে। যা জানলে বা শুনলে পুরুষ হওয়ার অপরাধে নিজেকেও ধিক্কার আর থু থু দিতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে পুরুষ জন্মের ইতিটাই টেনে দিই।


আজ 'জাগরণীয়া' নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত একটি খবর দেখে জানলাম গর্ভধারিণী মা'য়ের সহযোগিতায় সৎ বাবা ১৩ বছরের মেয়েকে একবার নয় একাধিকবার ধর্ষণ করেছে! যার ফলে এটুকু একটা বাচ্চা মেয়ে অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়ে! পরে মেয়েটির গর্ভপাতও ঘটানো হয়। শুধু তাই নয়, মেয়েটিকে তার বড় বোনের জামাইও একাধিকবার ধর্ষণ করে!

খবরটি থেকে যতটা জানা যায়, জন্মের পরপরই মেয়েটির বাবা বিদেশে চলে যান। সে থাকত গ্রামে, তার মায়ের কাছেই। এরই মধ্যে ঢাকাস্থ এক লোকের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে মায়ের। মেয়ের বয়স যখন ৮-৯ বছর, তখন থেকেই মায়ের সেই প্রেমিক মামা পরিচয়ে বাসায় আসা শুরু করে। ১০ বছর বয়সে মা জোর করে তাকে রাতে পাঠিয়ে দেন ওই প্রেমিকের ঘরে। এখান থেকেই শুরু হয় সেই কথিত মামার নানা বিকৃত যৌন আচরণ। ২০১১ সালে মা সেই প্রেমিককে বিয়ে করার পর মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজের সৎ বাবার কাছে ধর্ষিত হয় মেয়েটি।

সেই থেকে দিনের পর দিন ধর্ষিত হতে থাকে মেয়েটি! সৎ বাবার কাছে ধর্ষণের কথা সে মাকে জানালেও তাতে সে কোনো ভালো ফলাফল পায় নি। তখন তাকে জোর করে এবরশন করানো হয় মালিবাগ'র মেডিনোভা থেকে যেখানে তার বয়স জানানো হয় ১৭, অথচ তার বয়স ছিলো ১৩ মাত্র! তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, মেয়েটি যখন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন তাকে এবরশন করানো হয়!

আমরা জানি, পৃথিবীতে প্রতিটি সন্তানই সব 'চে বেশী নিরাপদ তার মায়ের কাছে। তাহলে এখানে সে মায়ের ভূমিকাটা কী দাঁড়ালো? হতে পারে কোন মায়ের ক্ষেত্রে এটি ব্যতিক্রম। তাই বলে এড়িয়ে যাওয়ারও নয় কিন্তু, তাই না? একই ভাবে প্রতিটি বাবার কোলই প্রতিটি কন্যা সন্তানের জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্য। কিন্তু, এসব ঘটনার পর কী দাঁড়ালো? ধরে নিলাম, আপনি তার মত অমন লম্পট বাবা নন, তারপরও ভেবে দেখুন তো, লজ্জায় কী আপনার মাথা নত হবে না? দাঁড়াতে পারবেন কী, মেয়ের কাছে গিয়ে?