হাওরের কান্না, অথচ অধিদপ্তরের ৪ জন বিদেশ সফর স্থগিত করলেন না

শেখ মিজানুর রহমান
Published : 28 April 2017, 11:08 AM
Updated : 28 April 2017, 11:08 AM

প্রথমে পরিচয় হই 'হাওর উন্নয়ন অধিপ্তর' এর সাথে –

নাম: বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর, ওয়েব সাইট www.dbhwd.gov.bd, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১৭.১১.২০১৪ তারিখের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অত্র প্রতিষ্ঠানকে পানি সম্পদ মন্ত্রনালযের একটি দপ্তর হিসবে ঘোষণা করা হয় (মন্ত্রিসভার বৈঠকের প্রজ্ঞাপন লিংক)। এ লক্ষ্যে সুনামঞ্জে আঞ্চলিক কার্যালয় ভবন নির্মাণের ৩ বছর পর ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ যাত্রা শুরু করেন।

কর্মকতাদের তালিকা –
১৮ এপ্রিল ২০১৭ থেকে বিদেশ সফরে থাকা মহামান্য কর্মকর্তাগণ হলেন – ১। মো. মজিবুর রহমান, মহাপরিচালক, হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তর। ২ মো. নুরুল আমিন, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তর। ৩। মো. রুহুল আমীন, পরিচালক (জলাভূমি) এবং হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তর ৪। মোহাম্মদ নাজমূল আহসান, উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তর।

বর্তমান একমাত্র কর্মতার তত্ত্ববধানে চলছে অধিদপ্তর তিনি হলেন-  মো. নুরুল আলম। তিনি বর্তমানে, অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছেন, তিনি উপ-পরিচালক (কৃষি ও মৎস্য), হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তরের বর্তমান অবস্থা ও বিদেশ সফরতদের বর্ণনা দেন এভাবে- অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক মজিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তা গত ১৮ এপ্রিল কানাডা সফরে যান। তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের আরো ৫ কর্মকর্তা রয়েছেন। কানাডা সফরে যাওয়া অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) নুরুল আমিন, পরিচালক (জলাভূমি) ড. রুহুল আমিন এবং উপ-পরিচালক (প্রশাসন) নাজমুল আহসান।

এ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কৃষি ও মৎস্য) ড. মো. নুরুল আলম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পূর্ব নির্ধারিত একটি বিশেষ সফরে অধিদপ্তরের এ সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত ১৮ এপ্রিল কানাডায় রওনা দেন।

তিনি বলেন, এ সফর পূর্ব নির্ধারিত ছিল, এর আগেও দুইবার সফরের দিন পরিবর্তন করা হয়। তবে আর পরিবর্তনের কোন সুযোগ না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে তারা কানাডা সফরে গিয়েছেন।  (সূত্র: sylhettoday24)

দুর্যোগকালীন সময়ে তাদের সৌখিন বিদেশ সফরে সচেতন মানুষের সাথে আমিও মর্মাহত, তাহারা কেন সফর বাতিল করে দেশে ফিরলেন না, সে এক অলৈকিক ব্যাপার হবে হয়তো, ধারার ছিল সফরকালীন সময় কানাডায় অবস্থিত পানি উন্নয়নের বোর্ডের সাথে হাওর অধিদপ্তরের মহামান্যগণ ভার্চুয়াল মিডিয়ার নিউজগুলি অন্তত দেখবেন, দু:খের ব্যপার তেনাদের দৃষ্টিগোচর করাতে জাতি ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে হয়? নাকি দায়ীত্ব এড়িয়ে চলতেই সাচ্ছন্দ বোধ করছেন, সেটিও বোধগম্য নহে।

আগামী ৩০ এপ্রিল ২০১৭ "অকাল বন্যায় বিধ্বস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শনে যাবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, গত প্রায় এক মাস আগে ২৯ মার্চ থেকে অতিবৃষ্টি ও আগাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জসহ সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল। সরকারের সুদৃষ্টির জন্য ১ মাস অপেক্ষা করতে হয়, পৃথিবীতে এমন হতভাগা জাতী দ্বিতীয়টি আছে বলে আমার জানা নেই। হয়তো দায়ীত্বহীন কালচারের চুড়ান্ত পর্যায় পৌছলেই এটি সম্ভব হয়।

'সুনামগঞ্জ ইয়ুথ ফোরাম' সিলেটের মানববন্ধনে বক্তাদের অভিযোও খন্ডন করার সাহস রাখেন নাই কোন উর্ধতন কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জের দুর্দশা নিয়ে ত্রাণ সচিবের বক্তব্য হাওরবাসীর হৃদয়ে রক্তক্ষরনের শামিল বলেলেও সচিব মহোদয়ের কোন প্রতিকৃয়া দৃষ্টিগোচর হলো না।

হাওরের কান্নার ঘটানা প্রবহ এবং কিছু জিজ্ঞাসা: শিরোনাম দেখলে হয়ত ধারনা হবে কতটা ক্ষতিগ্রস্থ  কৃষক পরিবার।


হাওরে ১২৭৬ টন মাছ ও ৩৮৪৪টি হাঁসের মৃত্যু ২৪ এপ্রিল, ২০১৭। সুনামগঞ্জে তলিয়ে গেছে ৯০ ভাগ ফসল ২৪/০৪/১৭ । হাওরাঞ্চলের কৃষিঋণ আদায় স্থগিত।

২৪ এপ্রিল, ২০১৭ হাওর এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর,
প্রশ্ন: কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে? তা জাতির কাছে আদৌ বোধগম্য নহে।

২৩ এপ্রিল, ২০১৭ হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পাবে মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা,
প্রশ্ন: হাওরবাসীয় কারো করুনা চায় নাই, তারা ন্যয্যমূল্য চাউল এবং বাঁধ চেয়েছিল, বিনিময়ে কেন তাদের অনুগ্রহণ গ্রহণ করতে হবে, এর দায়ভার কার?

২৩ তারিখ নতুন করে শনির হাওরের বাঁধে ভাঙে, হাওরের বাঁধের দুর্নীতিতে জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত:_ বদিউল আলম
প্রশ্ন: সরকারের মন্ত্রী বলেছেন দূর্নীতি হয়েছে, আদৌকি সেই অভিযোগে কেহু গ্রেফতার হয়েছে?

প্রাথমিক পরীক্ষায় হাওরে তেজস্ক্রিয়া মেলেনি,
প্রশ্ন: ঘটনা গঠেছে আরো সপ্তাহ খানেক আগে, যখন বৃষ্টির জল হাওলকে পরিশুদ্ধ করেছে, তখন কেন বিজ্ঞানিদের দৌড়জাপ, জাতি এহেন অযোগ্যতা ও দায়ীত্ব জ্ঞানহীন কর্মকান্ডকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে।

হাওরে মাছের পর হাঁসের মড়ক,
প্রশ্ন: মরকের কারণ বের করতে কি যুগ যুগ পার করতে হবে? নাকি জাতি এর রহস্য খুঁজে পাবেন?

সুনামগঞ্জে অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ৮০ হাজার হেক্টর জমির ধান, হাওরের উপযোগী ফসল পাট চাষ কেন বন্ধ করা হলো? সোনালী আঁশ কেন উধাও হলো দেশ থেকে, দায় কার?

শনির হাওর রক্ষায় হাজারো কৃষকের যুদ্ধ, অতপর আমার কৃষক ব্যর্থ হয়, কৃষকদের স্যালূট, তারা সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছিল।

চলুন দেখে নেই কিছু নিউজ রিপোর্ট –

পরিশেষে বলতে চাই, একজন অসহায় মানুষের প্রতিটি সেকেন্ড সুখী মানুষের তুলনায় অত্যান্ত দীর্ঘ, আশা করি প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রীতার যাতাকলে আমার হাওরবাসীর উপর না পরুক, ইতি পূর্বে যা অবহেলা করছেন সব ভূলে যাব, যদি আজ থেকেই দ্রুত কার্যকম গ্রহণের পণ করেন, অন্যথায় এ জাতি কাউকে ক্ষমা করতে শিখে নাই, সে যত বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তিই থাকুন না কেন, জাতির নৈতিক বিষ্ফোরণে সব অপরাধ ধুয়ে যাবে নিশ্চিত থাকেন। আর নয়, এবার সভ্য হউক, ক্ষান্ত হোক দুর্নীতির ট্রেনের ঝিক ঝিক শব্দ।

জয় বাংলা, জয় জনতা
বাংলাদেশ চিরজীবি হউক।