রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ খুরশেদ আলম (অব.)
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব
কিছু লেখার আগে গবেষণা করা প্রয়োজন ,যদি আপনি না জানেন লেখা বন্ধ করুন.আমাদের যারা ব্লগ লেখেন, আমরা মনোযোগী হতে হবে.
সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তিতে অগ্রগতি না হওয়ায় জাতিসংঘের সমুদ্রসীমা-সংক্রান্ত আইন (আনক্লজ)-১৯৮২-এর অধীনে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর জাতিসংঘের সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ।
ভারত ও মিয়ানমারের দাবি, সমদূরত্বের ভিত্তিতে সীমা নির্ধারণ হোক। এ হিসাবে বাংলাদেশ পেত মাত্র ১৩০ নটিক্যাল মাইল। সমুদ্রে যে ২৮টি গ্যাস ব্লকের রূপরেখা রয়েছে, তার ১৭টিই দাবি করে মিয়নমার, ১০টির দাবি ভারতের। বাংলাদেশের হাতে থাকে কেবল একটি, যেখানে এখন কনোকো-ফিলিপ্স অনুসন্ধান চালাচ্ছে। সীমানা নির্ধারণের আগে এ ধরনের গ্যাস ব্লকের পক্ষে দাবি জোরালো হয় না বলে জানিয়েছিলেন খুরশেদ আলম। মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি হলে বাংলাদেশের দাবি জোরালো হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে লড়বে ফোলি হগ
লিংকজাতিসংঘ আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিষয়ক জটিলতা নিরসনে আন্তর্জাতিক এক আইনি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ফোলি হগ এলএলপি (লিমিটেড লায়াবিলিটি পার্টনারশিপ) নামের যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিষ্ঠান বঙ্গোপসাগরে ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার জটিলতার বিষয়টি জাতিসংঘ আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের পক্ষে নিষ্পত্তি করবে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী দলটিতে থাকছেন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ আইনজীবী পল রেইকলার, ফোলি হগের সহযোগী লরেন্স মার্টিন ও অ্যান্ড্রু লোয়েনস্টেইন, যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস ক্রফোর্ড
এবং কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পায়াম আখাভান। যুক্তরাজ্যে রেজিস্ট্রেশন করা পিআরনিউজওয়্যারের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স। ফোলি হগের আইনজীবী পল রেইকলার বলেছেন, বিদেশি তেল কোম্পানিকে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অনুসন্ধানে বাধা দিয়েছে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ।
লিংক
আমীন কাদীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়া আমার কথায় কষ্ট পেতে পারেন- তবুও আমি সবিনয়ে বলবো- ওনার উচিত ছিলো ২/৪ জন জানাশোনাঅলা মেরিটাইম এক্সপার্ট ও সলিসিটর সঙ্গে নিয়ে যাওয়া। কেননা এ ধরনের আদালতের আর্গুমেন্ট মানে কিন্তু কোন সেমিনারে লিখিত বক্তব্য দেখে দেখে ইংরাজী বানান উচ্চারণ করে গড়গড়িয়ে বলে যাওয়া নয়। বাদানুবাদ-বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যর বাচনশক্তিও পকেটে থাকা চাই।
আমীন কাদীর ,আপনি দুঃখিত যে বাংলাদেশ মামলা জয়?
নোংরা রাজনীতির স্বার্থে বিএনপির কিছু নেতা, আমার দেশ ও জামাতের সোনার বাংলা পত্রিকা আমাদের সমুদ্র জয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জনগণকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অধ্যাপক জেমস ক্রফোর্ড ১৫ মার্চ ই-মেইলে এই লেখককে নিশ্চিত করেন যে সমুদ্র বিরোধের বিচারিক ইতিহাসে বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার মামলার রায় একটি নতুন ঘটনা। এই প্রথম সমুদ্রসীমা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধের রফা হলো ইটলস বা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে। অধ্যাপক ক্রফোর্ড ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার হাইকোর্টে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হিসেবে পেশা শুরু করেছিলেন। হামবুর্গে বাংলাদেশের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের তিনি অন্যতম কুশলীব। রায় সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এটুকু বলেছেন, 'বাংলাদেশের জন্য এটা এক মহান জয়।'
লিংক
সমুদ্রসীমা নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় সংসদে 'টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোন্স অ্যাক্ট' আইন পাস করেছিল তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার। এ ধরনের আইনের কথা তখন ভারত বা মিয়ানমার চিন্তাও করেনি। দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ নিয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক আলোচনাও শুরু হয়েছিল তখন থেকে। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার যে প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা নিয়ে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছিল, পরবর্তী সরকারগুলো তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশীদের চেয়ে অনেক আগে উদ্যোগ নিয়েও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।
২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে আমি যখন দায়িত্ব নিলাম, ততদিনে নয় বছর শেষ হয়ে গেছে। ওই এক-দেড় বছরের মধ্যে সব তথ্য-উপাত্ত, নথিপত্র প্রস্তুত করতে হবে এবং প্রমাণ করতে হবে যে, বাংলাদেশের উপকূল থেকে সমুদ্রের তলদেশে একই ধরনের সেডিমেন্ট অব্যাহত রয়েছে। এটা প্রমাণ করার জন্য সিসমিক ও বেজমেন্ট সার্ভে করা দরকার। আগে আমাদের দেশে কখনও সিসমিক সার্ভে হয়নি। উপযুক্ত জাহাজও নেই, তা ভাড়া করতে হবে। আমি অনেকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দেখলাম এ জন্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা লাগে। মাননীয় মন্ত্রী প্রস্তাবটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান। তখন বাজেট পাস হয়ে গেছে; কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিশেষ ব্যবস্থায় ওই অর্থের ব্যবস্থা করলেন। বরাদ্দ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিলাম। কারণ সার্ভের জন্য কেবল একটি সিজন ছিল_ ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে মার্চ ২০১০। এর মধ্যে করতে না পারলে জাতিসংঘে যথাসময়ে দাবি পেশ করা যাবে না। আমরা ডাচ সরকারকে কাজটি করে দেওয়ার অনুরোধ জানালাম। তাদের একটি জাহাজ তখন প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ফিরছিল। ২০১০ সালের মার্চে সার্ভে সম্পন্ন হয়। আমরা প্রমাণ করলাম বাংলাদেশের মাটি ও বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ এলাকার তলদেশ একই উপাদানে গঠিত। এ সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর জন্য বিএনএস অনুসন্ধান নামে একটি জরিপ জাহাজ কিনে দেন। পরে আমরা সব তথ্য-উপাত্ত জাতিসংঘের একজন কমিশনারকে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিলাম
রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ খুরশেদ আলম (অব.)
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব