যে সংবাদগুলো পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে মিডিয়ায় নজর রাখি

সবাক
Published : 26 May 2011, 08:08 PM
Updated : 26 May 2011, 08:08 PM

(১)
ঢাকার পল্টনে গণধোলাইয়ে ৩৭ জামায়াত নেতা নিহত

লাশের পর লাশ শুয়ে আছে প্রেস ক্লাবের সামনে। লাশের নিচে পিছ ঢালা রাস্তা এবং উপরে ছেঁড়া জুতা, থুথুর দলা'র স্তুপ। উৎসুক জনতার উচ্ছাসে উন্মাতাল ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ প্রবেশ করতে পারেনি। আজ বিকেলে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আটক জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করতে গেলে জামায়াতের শীর্ষসারির নেতারা বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে প্রাণ হারান। ঘটনা শুরু হয় পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া দিয়ে। অনুমতিহীন মানববন্ধনের দোহাই দিয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে পুলিশ এসে বাধা দেয়। এসময় জামায়াত নেতারা নারায়ে তাকবীর শ্লোগান দিয়ে পুলিশের উপর হামলে পড়ে। নিকটবর্তী দূরে অবস্থানরত রিজার্ভ পুলিশের দল এসে আক্রান্ত পুলিশের সাথে যোগ দেয়। শুরু হয় এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ। ঘটনাস্থলে জমতে থাকে সাধারণ মানুষ। এক পর্যায়ে কয়েকজন রিকশাওয়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত জনতা অ্যাকশনে নামে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। খবর পৌঁছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মিছিলে মিছিলে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকে। কেউ লাঠি হাতে, কেউবা খালি হাতে এসে বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে যোগ দেয়। মানববন্ধন করতে আসা ৫০ জন জামায়াত নেতার মধ্যে কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। বাকিরা সবাই নিহত হয়েছেন। এ সময় পুরো এলাকা জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে।

(নোট : রাজাকার ইস্যুতে, মানবতা মুছে ফেলো টয়টেল টিস্যুতে)

(২)
এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১১ শতাংশ ।। সরকার গঠন করতে পারছে না কেউ

বহুল আলোচিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ভোট পড়েছে মাত্র ১১ শতাংশ। যার কারণে কোন দলই সরকার গঠন করতে পারছে না। জামানত হারিয়েছেন ৮৮ ভাগ প্রার্থী। সব মিলিয়ে গভীর সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজের সাথে ইতোমধ্যে বৈঠকে বসেছেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু এখনো কোন সমাধানের পথ বের হয়নি। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনীর দপ্তর থেকে দেশের জনগনকে সামরিক শাসনের শংকামুক্ত থাকার নিশ্চয়তা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাবাহিনী রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে সম্পৃক্ত হবে না। এরকম কোন সম্ভাবনা নেই। এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। স্বপ্রণোদিত হয়ে জারি করা রুলে জনগনের প্রত্যাশা জানতে চাওয়ার জন্য কোন ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কেন গৃহীত হবে না, এ মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এদিকে গতকাল বিকেলে শাহাবাগ মোড়ে এক বিশাল মানবপ্রাচীর গড়ে তোলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আপাতত তাদের দাবি গুটিকয়েক। রাষ্ট্রের আগামী ৫ বছরের সামগ্রিক উন্নয়ন চাহিদা নিরূপন করে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এ নিরিখে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহার প্রকাশ করবে। যেখানে এসব চাহিদা কিভাবে মেটাবে, তার পদ্ধতি থাকবে। জনগণ যাদের পদ্ধতিতে আস্থা রাখবে, তাদেরকেই ভোট দিবে। নির্বাচিত দল ক্ষমতা গ্রহণ করবে এবং প্রতি ৬ মাস পরপর তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের খতিয়ান অবমুক্ত করবে। এভাবে করে প্রাথমিকভাবে জবাবদিহিতায় আসতে হবে। এটাই আমাদের প্রাথমিক দাবি। নির্বাচনে নজিরবিহীন এ ঘটনার পর এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

(নোট : গণতন্ত্র ভেঙ্গে পড়লো বলে চিৎকার করে লাভ নেই। রক্তাক্ত জনরোষের চেয়ে এ ধরনের ঘটনা অনেক প্রত্যাশিত।)

(৩)
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় এসে যোগ দিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিব

প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলী নেত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সর্বস্তরের জনগণের সাথে পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় এসে যোগ দিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিবসহ ঢাকা ইমাম সমিতির প্রায় সব ইমাম। এবারের শোভাযাত্রা বাঙালি মুসলমানের শোভাযাত্রার পূর্ণতা পেয়েছে বলে অনেককে মন্তব্য করতে শোনা যায়। অন্য সববারের চেয়ে এবারের শোভাযাত্রায় অধিক প্রাণের স্পন্দন শুনতে পেয়েছে রাজধানী ঢাকা। শোভাযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বায়তুল মোকাররমের খতিব বলেন, "বাঙালি মুসলমান হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি। ইরান, তুরস্কের মতো আমাদেরও আছে সমৃদ্ধ জাতিগত সংস্কৃতি। এই একটা দিনে সবধর্মের মানুষরা একই সুরে একই সাথে সংস্কৃতির সংগীত গাইতে পারি।" উল্লেখ্য গতবারের শোভাযাত্রায় প্রথম সরকার প্রধান এবং বিরোধী দলীয় প্রধান একই সাথে পাশাপাশি শোভাযাত্রায় অংশ নেন। অন্তত পহেলা বৈশাখের এ দিনে মনে হয়েছে রাজধানীতে কোন আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রয়োজন নেই। কারোরই প্রাণ রহিত হওয়ার কোন শংকা নেই।

(নোট: বাঙালি মুসলমান সংস্কৃতিই শেষমেষ প্রতিষ্ঠিত হবে। এমন প্রত্যাশা করি।)

(৪)
বিরোধী দলীয় নেতার পর এবার প্রধানমন্ত্রীও ব্যক্তিগত ব্লগ খুললেন

অবাধ তথ্যপ্রবাহ, জনসাধারণের ভাবনার নৈকট্যলাভের আশায় অনলাইনে ব্যক্তিগত ব্লগ সাইট খুললেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গতমাসে বিরোধীদলীয় নেতা ব্লগিং শুরু করেন। তাঁর ব্লগ সাইটে অস্বাভাবিক সাড়া পড়ার পর প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগকে সর্বস্তরের মহল সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম ব্লগে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন। সম্প্রীতির অতুলনীয় নজির স্থাপন করে তাঁর ব্লগে প্রথম মন্তব্যটি করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা। অবশ্য মন্তব্যের জবাব পড়ে বুঝা গেছে পোস্ট দেয়ার আগেই বিরোধী দলীয় নেতাকে মেইল করেছিলেন এবং পোস্ট দেয়ার পর ফোন করে জানিয়েছেন। দেশের বিজ্ঞমহল আশা করছেন রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ইতিবাচক জবাবদিহিতা সৃষ্টির ফলে সুষম উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন ঢেউ লাগবে। প্রধানমন্ত্রী ব্লগ লেখার ১ ঘন্টার মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক ভিজিটর ব্লগ ভিজিট করেছেন এবং মন্তব্য পেয়েছেন প্রায় দশ হাজার। যার মধ্যে অধিকাংশই প্রধানমন্ত্রীকে ফিরতি শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানিয়ে করা।

(নোট : তরুনরা যদি আরো সক্রিয় হয়, তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো দিবাস্বপ্নের গন্ডিতে থাকবে না।)