পূর্ত প্রতিমন্ত্রীর রক্ত বিসর্জনের পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সবাক
Published : 8 Feb 2010, 02:37 AM
Updated : 5 Jan 2011, 10:50 PM

তারপর দেখতে দেখতে একদিন পূর্ত প্রতিমন্ত্রী মান্নান সাহেব বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের জন্য রক্ত দিয়ে দিলেন। প্রথমে তিনি ৯০০ মি.লি দিলেন। তারপর এক কুয়া রক্ত দিলেন। তারপর এক দিঘী রক্ত। অবশেষে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর কোমর তুলে দাঁড়ালো। এভাবেই বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের জন্ম হলো। বিমানবন্দরটি দূর্ভাগ্যজনকভাবে নানার বাড়ি বা দাদার বাড়ি, এমনকি কোন নার্সিং হোমেও জন্ম নেয়ার সুযোগ পায়নি রক্ত ত্যাগী মন্ত্রীর কারণে। নিতান্ত অবহেলায় কোন এক বিলের মাঝখানে বড্ড অসময়ে জন্ম নিলো। তবে ভাগ্য ভালো যে ওই এলাকায় একজন মন্ত্রীর বাড়ি আছে। এবার অন্তত শান্তনার খুঁটি ধরে কোনমতে জিন্দেগী পার করা যাবে (হয়তো আগামীবার বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত)।

একদিন কোন রকম আওয়াজ না করে প্রত্যাশিতভাবে রক্তশূন্যতায় মন্ত্রী মহোদয় তার যন্ত্রীর ক্ষমতা হারিয়ে মারা গেলেন। মারা যাবার সময় তিনি আপন বলতে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর এবং আড়িয়াল বিলের ৯৯ শতাংশ জনগন রেখে গেলেন। তার মৃত্যুর পর বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান তিন দিনের নফল রোজা রাখার ঘোষনা দিলেন। শেষে তাকে সাংসদ নামক বিশেষ প্রাণীদের যেখানে কবর দেয়া হয়, সেখানে কবর দেয়া হলো।

তো, মন্ত্রী মরে গেলেন! মরে গিয়ে তিনি মাটির নীচে গেলেন। মাটির নীচে প্রথমেই মন্ত্রীকে ব্লাড রিচার্জ করা হলো। তারপর তিনি বিশ্রাম নিলেন এবং নিজের অজান্তে ঘুমিয়ে পড়লেন। তারপর মন্ত্রী ঘুমাচ্ছেন।

মাটির নীচে ঈদের আনন্দ। গ্রুপিং আর প্রতিপক্ষের কোপাকুপি, গোলাগুলিতে রক্তবিসর্জন দেয়া আল্লাহর আওয়ামী বান্দারা এই প্রথম একজন প্রতিমন্ত্রী পেলো যিনি জাতির জনকের নামে বিমানবন্দর করার জন্য রক্ত দিলেন এবং রক্ত দিতে দিতে দিতে রক্তশূন্যতায় মারা গেলেন।

ঘুম থেকে উঠে প্রতিমন্ত্রী দেখলেন পাশে বসে বসে পপকর্ণ খাচ্ছেন জিল্লুর রহমান সাহেব। ভদ্রলোক ভৈরবকে জেলা বানানোর জন্য রক্ত দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পৃথিবী ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর সময় তাঁর কোন দলীয় পরিচয় না থাকার কারণে এখানে আওয়ামী মৃতরা উৎসব করেনি।

তারপর হাতমুখ ধুয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতির সাথে বসে বসে পপকর্ণ খেতে খেতে "জাতীয় জীবনে রক্ত বিসর্জনের ইতিবাচক দিক" শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মিলিত হলেন। আর ওইদিকে পৃথিবীর বুকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামফলক ভেঙ্গেচুরে, যত্ন সহকারে নামানো হচ্ছিলো এবং "জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর" নামফলক উপরে উঠানো হচ্ছিলো। এবং তখনো দেশের সর্বস্তরের জনগন নাম পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।