মাশুল আরোপ করে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া হচ্ছে। ট্রানজিট বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে এটা সবাই চায়। কিন্তু ভারতের সাথে কোন কিছু দর-কষাকষির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গলার স্বর নিচু হয়ে যায়। বিশেষ করে আওয়ামীলীগের সাথে। ভারত বাংলাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু(?) তাহলে তাদের সাথে কেন সমানভাবে কথা বলতে পারছে না বাংলাদেশ। কারন ভারত এমন একটা দেশ যারা নিজের দেশে গনতন্ত্র পছন্দ করে কিন্তু নিজ দেশের স্বার্থে প্রতিবশেী দেশে গনতন্ত্র না রাখার জন্য যা করার তাই করে থাকে।
যাই হোক ট্রানজিট নিয়ে যে কথা তা হলো, 'নৌপথেই প্রথম এ ধরনের ট্রানজিট হবে। মাশুল নেওয়া হবে টনপ্রতি ১৯২ টাকা। ইতিমধ্যে কলকাতা থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় পণ্য নিতে দুই দেশের নৌ প্রটোকলের আওতায় ট্রানজিটের অনুমতি দেওয়া শুরু হয়েছে। ট্রানজিটের প্রথম চালান হিসেবে আগরতলায় যাবে এক হাজার টন ঢেউটিন। যদিও ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিট-সংক্রান্ত কোর কমিটির টনপ্রতি ১ হাজার ৫৮ টাকা মাশুল আদায়ের সুপারিশ ছিল। সুপারিশ মেনে নিলে বাংলাদেশ এক হাজার টন পণ্য ট্রানজিটে কেবল মাশুল হিসেবেই পেত ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আর এখন পাবে মাত্র ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।-আমাদের সময়
ভারতের সাথে বাংলাদেশের অফিসিয়াল বাণিজ্য ঘাটতি ৫.৫৮ বিলিয়ন সেখানে যদি এভাবে আমরা ছাড় দিতে থাকি তাদেরকে তাহলে এঘাটতি দিন দিন বাড়তেই থাকবে আর আমরা একসময় ভারতে নিচে চাপা পড়ে যাব।
গতকাল বিভিন্ন অনলাইন নিউজে বিএনপি নেতা রিজভীর একটি বক্তব্য জানলাম, তিনি সরকারকে জিজ্ঞেস করেছেন– বাংলাদেশকে কত টাকার বিনিময়ে ভারতের কাছে বিক্রি করেছেন?
রিজভী সাহেবের প্রশ্ন বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থার সাথে কতটা সংগতিপূর্ন তা সাধারন মানুষই ভাল জানে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেট ম্যাচ হলে বাংলাদেশের মানুষ যে ভারত বিদ্বেষ মনোভাব পোষন করে তা মূলত এসব কারনেই। ভারত বিদ্বেষ মনোভাব এখন যতটা বেশী তা আমার মনে হয় আগে কখনও ছিল না বাংলাদেশের মানুষের। এটা ভারতকে বুঝতে হবে।
প্রখ্যাত লেখক আহমেদ ছফা লিখেছেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ নির্মাণে অবশ্যই ভারতের বিরোধিতা করতে হবে। কথাটির যে সত্যতা আছে তা বর্তমান বাংলাদেশ-ভারত বানিজ্য সম্পর্ক দেখলেই বোঝা যায়।
পরিশেষে আশা করব, ভারতের সাথে সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বানিজ্যের পরিবেশ তৈরি করার জন্য বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের বোধদয় হবে! (তবে বোধদয় হতে গেলে আগে অবশ্যই বাংলাদেশ প্রেমিক হতে হবে)।