সুবীর
Published : 17 Dec 2011, 02:48 PM
Updated : 17 Dec 2011, 02:48 PM

নবান্ন একটি বিশেষ লোকউৎসব। নতুন ফসল ওঠার পর অগ্রহায়ন মাসে এ উৎসবটি এক সময় হিন্দুদের মধ্যে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হতো। উৎসবের দিন ভোর না হতেই ছেলেমেয়েরা ঘরের বাইরে এসে ছড়া কেটে দাঁড়কাকদের নেমন্তন্ন করতো: 'কো কো কো, আমাগো বাড়ি শুভ নবান্ন/ শুভ নবান্ন খাবা কাকবলি লবা/ পাতি কাউয়া লাথি খায়/ দাঁড় কাউয়া কলা খায়/ কো কো কো, মোরগো বাড়ি শুভ নবান্ন"।
এদিন নতুন চাল ঢেঁকিতে কোটা হয়। বেলা দশটার দিকে বাড়ির প্রবীণগণ পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করেন এবং ছেলেমেয়েরা নতুন জামা-কাপড় পরে। এরপর বাড়ির উঠানে গর্ত করে জ্যান্ত কৈ মাছ ও কিছু দুধ দিয়ে একটি বাঁশ পোতা হয়। একে বলে বীর বাঁশ'। বীর বাঁশের চারপাশে চালের গুড়া দিয়ে আলপনা আঁকা হয়। বীর বাঁশের প্রতিটি কঞ্চিতে নতওন ধানের ছড়া বাঁধা হয়। বীর বাঁশ পোঁতার পরে একটি কলার খোলে চালমাখা কলা ওনারকেল নাড়ু কাককে খেতে দেয়া হয়। কলাটি মুখে নিয়ে কাক কোন দিকে যায় তা লক্ষ্য করা হয়; কারণ তাদের বিশ্বাস, বছরের শুভাশুভ অনেকটা এর ওপর নির্ভর করে। কাককে কেন্দ্র করে এই পর্বটির নাম কাকবলি'। এই অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আহার করেনা। শস্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষীকে পূজা এবং নবান্ন দিয়ে তারপর সকলে আহার গ্রহন করে। এদিন প্রত্যেক পরিবারেই উন্নত মানের খাবার তৈরী হয়। নবান্ন শেষ হয় পরের দিন "বাসি নবান্ন' দিয়ে।