জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ

সুবীর
Published : 28 Dec 2011, 04:38 AM
Updated : 28 Dec 2011, 04:38 AM

ভূমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির (গ্লোবাল ওয়ার্ম) ফলে সারা বিশ্বে ঝলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ও এর গতি প্রকৃতিতে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে, আবহাওয়ার ধরণ এবং ঋৃতু বৈচিত্র্য পালটে দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি নিয়ত প্রাকৃতিক ঘটনা যা মানুষের কর্মকান্ড দ্বারা ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত। উষ্ণতা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তরাষ্ট্রীয় কমিটি প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী জলবায়ুর পরিবর্তনে ভুপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা- দু'ই বাড়বে,শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টি কমে যাবে এবং বর্ষায় আরও বৃষ্টি বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্নের ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিপদাপন্ন বলে চিহ্নিত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে (মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ২০০৭/২০০৮, ইউএনডিপি)। ভৌগলিক অবস্থান, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো, প্রাকৃতিক সম্পদের খুব বেশি ব্যবহার, বন্যাপ্রবণ এলাকার প্রাধান্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতা, আবহাওয়ার ওপর মৌসুমী বায়ুর প্রবল প্রভাব, ঘন বসতি এবং সার্বিকভাবে কৃষির ওপর অধিক নির্ভরশীলতাই জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ।

দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের কৃষিই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টর এবং এর জন্য বাংলাদেশকে দিতে হবে চরম মূল্য। কৃষি বাংলাদেশের ২২% জিডিপি এবং ৬০% মানুষের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক পরিবেশের বিরূপ পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবন ও জীবিকা ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে সমাজ বা জনগোষ্ঠী ভয়াবহ বিপদ ও ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাজার হাজার গবাদি পশু মারা যায়, ফসলাদি ধ্বংস হয়, প্রাণহানি হয়, জ্বালানি সংকট দেখা দেয়, লোকজনের আয়ের পথ কমে যায়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি দেখা দেয় এবং এসব কারণে দেশে দুর্ভক্ষ ও সামাজিক সমস্যা দেখা বেড়ে যায়। অতএব, বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন শুধুমাত্র পরিবেশ সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়, উন্নয়ন ও জীবিকা সংশ্লিষ্ট বিষয়ও। "জলবায়ু পরিবর্থনের কারণে বাংলাদেশে তাপমাত্র বৃদ্ধি, আগাম শীত মৌসুমের আগমন ও বিদায়ে বিলম্ব, গড়পরতা দৈনিক সূর্যালোকের পরিমান কমে যাচ্ছে যা কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় মারাত্মক ঝুঁকি বয়ে আনছে"

(সূত্র:কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা) চলবে…