কার্বাইড দিয়ে ফল পাকানো জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

সুবীর
Published : 15 May 2012, 04:38 AM
Updated : 15 May 2012, 04:38 AM

ফল আমাদের খাদ্য ও পুষ্টির একটি অন্যতম উৎস। কিন্তু দেশের একশ্রেণীর মধ্যস্বত্ত্বভোগী, মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে ফল পাকিয়ে ফলের খাদ্যমান বিনষ্ট করছে। হরহামেশা ক্যালসিয়াম কার্বাইড বিভিন্ন প্রকারের বিষাক্ত রাসানিক পদার্থ দিয়ে আম, কলা, কাঁঠাল, আনারস সহ অন্যান্য আকর্ষণীয় ফল পাকানো হচ্ছে। এতে ক্রেতাসাধারণ ও ভোক্তা প্রতারিত হয়ে আর্থিক এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে।

কার্বাইড কী?
ক্যালসিয়াম কার্বাইড এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ। এটি এক ধরণের যৌগ যা বাতাসে বা জলীয় সংস্পর্শে এলেই উৎপন্ন করে এসিটিলিন গ্যাস। যা ফলে প্রয়োগ করলে এসিটিলিন ইথানল নামক বিষাক্ত পদার্থে রুপান্তরিত হয়।

কিভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়ঃ
কেমিকেল মিশ্রিত ফল খেলে মানুষ দীর্ঘমেয়াদি নানা রকম রোগে বিশেষ করে বদহজম, পেটের পীড়া, পাতলা পায়খানা, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, লিভার ও কিডনি নষ্ট হওয়াসহ ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়া মহিলারা এর প্রভাবে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিতে পারে। শিশুরা বিষাক্ত পদার্থের বিষক্রিয়ার ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ফলের স্বাদ কেমন হয়ঃ
কার্বাইড বিক্রিয়ায় ফলকে কাঁচা থেকে পাকা অবস্থায় নিয়ে আসে। ফলটি কাঁচা, কিংবা আধাপাকা অবস্থায় থাকুক না কেন কিছু কিছু ফলের বাইরে এবং ভেতরে কেমিক্যালের প্রভাব এতটাই ঘটে যে ভেতরে বাইরে ফলটির রঙে ও স্বাদে স্বাভাবিকভাবে পাকা ফলের মতো হয়ে যায়। কোনো কোনো ফলের বেলায় কেবল তার বাহ্যিক বর্ণ আকর্ষণীয় হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক পাকা ফলের মত দৃষ্টি নন্দন টকটকে লাল, হলুদ, গোলাপী বর্ণ দেখে মানুষ আগ্রহ করে এসব কৃত্রিমভাবে পাকানো ফল পছন্দ করে কিনে নিয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তিনি হয়তো জানেন না যে, তিনি টাকা দিয়ে বিষ কিনলেন। এতে একদিকে যেমন ফলের পুষ্টি গুণাগুণ নষ্ট হয় অপরদিকে ফল খেতে বিষাদ, পানসা, শক্ত ও তেতো স্বাদযুক্ত মনে হয়।

কৃত্রিমভাবে পাকানো ফল চেনার উপায়ঃ
টমোটো, আম, পেঁপে ইত্যাদি ফলকে কৃত্রিমভাবে পাকানো হলে ফলত্বক সুষম রঙ ধারণ করে। কলার ক্ষেত্রে ফলত্বক হলুদ বর্ণের থাকলেও কাণ্ডের অংশ গাঢ় সবুজ রঙের থাকে।

প্রত্যাশা/মতামতঃ
ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ভোক্তা আইন আরও কঠিন ভাবে প্রয়োগের নিমিত্তে বিভিন্ন সংবাদপত্র, রেডিও, টিভিতে ব্যাপক প্রপার করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আরও বেশি মোবাইল টিমের মাধ্যমে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনাপূর্বক ফল, শাকসবজি ও খাদ্যদ্রব্যে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ রোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।