প্রসঙ্গ সমকালীন বাংলাদেশঃ প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা ভেঙ্গে সমগ্র জাতির অবস্থার পরিবর্তন

সুকান্ত পার্থিব
Published : 26 July 2011, 11:31 AM
Updated : 26 July 2011, 11:31 AM

অধিকাংশ মানুষ যে কোন বিষয়ে কিংবা কাজে ব্যর্থ হলে তার ভাগ্যকে দায়ী করে। এ ব্যর্থতা তাদের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলে ব্যক্ত করে! সফলতার দিক বিবেচনা করলেও দেখা যায় মানুষ কোন কাজ সম্পাদনে সফল হলে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে সাধুবাদ জানায় মহান স্রষ্টাকে তার সফলতায় ভরা ভাগ্য লিখনের জন্যে । কেউ যদি কোন কাজ সম্পাদনে নিজের চেষ্টা, অধ্যবসায় অব্যাহত না রেখে ধৈর্য্যশীল, পরিশ্রমী ও অটুট লক্ষ্যের অধিকারি না হয় তাহলে সফল হবার জন্যে স্রষ্টার কাছে শুধু প্রার্থনা জানালেই কি সফলতার দেখা পাওয়া সম্ভব ? কিংবা ব্যর্থতার ক্ষেত্রে নিজের ভুল ত্রুটি চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ না করে অদৃষ্ট মানব কল্পিত ভাগ্যের লিখন বলে চালিয়ে দিয়ে কি ব্যর্থতার দায় থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ? ধরা যাক, কেউ অসুস্থ হয়ে আরোগ্য লাভের জন্যে শুধু যদি তার মানসলোকে কল্পিত সৃষ্টিকর্তার শরণাপন্ন হয়ে সর্বদাই প্রার্থনায় মুখরিত থাকে; তবে কি সেই জন তার অসুস্থতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না করে ? এ ধরনের অবস্থার ব্যবস্থা অনেকেরই জানা, ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না !

অব্যশই কোন কাজের প্রতি চেষ্টা-পরিশ্রম-অধ্যবসায় এর উপর নির্ভর করে কাজের সফলতা ও ব্যর্থতা । মানুষ তার দূরবস্থার জন্যে দোষ দেয় তার ভাগ্যকে । একবারের জন্যে ভুল করেও ভাবে না তার এই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার সবচেয়ে বড় কারন এই পরাধীন ব্যবস্থায় পোষা কুকুরের মতো হাতে-পায়ে শিকল পড়ে মস্তিষ্ককে বিকল করে নুব্জ্য হয়ে পড়ে থাকা। ক্ষমতাশালী শাসক, বিত্তশালী সমাজপতিদের নিয়ন্ত্রনে এই সমাজ-রাষ্ট্রযন্ত্র, যারা নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে শোষণের স্টিমরোলার নিরীহ মানুষদের উপর চালিয়ে এই ব্যবস্থার ভাগ্যের নিয়ন্ত্রনের চালকের আসনে বসে একে একে গ্রাস করছে সমাজ-রাষ্ট্র-সভ্যতা-শিক্ষা-সংস্কৃতি-অর্থনীতি । এখন যারা দারিদ্র্যতার শিকার, আগেও কি তারা পিষ্ট ছিল দারিদ্র্যতার কষাঘাতে ? যারা বিত্তবান তারা কি রাতারাতি অঢেল সম্পদের অধিকারী ? দারিদ্রতাকে নিরীহ মানুষের সঙ্গী বানিয়ে ক্ষমতালিপ্সুরা ধীরে ধীরে জোঁকের মতো শোষণের তাড়না গরীবের রক্তের মধ্যে ধাবিত করে অর্থের যশ প্রতিপত্তিতে সেজেছে বিত্তবান । যে প্রতিপত্তিশালী সে মহাশূন্যে আবাস বানানোর স্বপ্ন দেখে, যে দারিদ্র্যতার কষাঘাতে মৃত্যু অভিমুখী সে দু'বেলা দু'মুঠো ভাতের আশায় বাঁচার চিন্তায় ঘুরপাক খায় সর্বদা।

প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়া কোন কাজে যেমন সফল হওয়া যায় না তেমন অসতর্কতার ফলে ব্যর্থতার দায়ভার ভাগ্যকে দেয়াটা শোভা পায় না । তাহলে, ভাগ্যই কি আমাদের নিয়ন্ত্রন করে নাকি চারপাশের পরিবেশ-পরিস্থিতি তথা এই প্রচলিত ব্যবস্থা অনুকূলে রেখে আমরাই নিয়ন্ত্রন করতে পারি ভাগ্যকে ? অবশ্যই স্পষ্টভাবে বলা যায়- আমাদের বসবাসরত ব্যবস্থার সাপেক্ষে আমরা অনবরত যেসব অবস্থার সম্মুখীন তা এই ব্যবস্থা ও আমাদের কাজের উপর নির্ভরশীল; কখনই তা কোন পরিকল্পিত ভাগ্যের পর্যায়ক্রমিক ফলাফল নয় ।

এ বিষয়টি যুক্তিসহকারে পর্যালোচনা করার জন্যে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করছি! বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চতুর্থ দশক অতিক্রম করে পঞ্চম দশকে পা রেখেছে। আমরা কি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন? একবারও সচেতন প্রাণে জাগে না আমরা কি দুর্নীতিগ্রস্ত্র, সন্ত্রাসকবলিত, শোষিত, ধর্মান্ধ, প্রতিক্রিয়াশীল, অতীত গামী, গণতন্ত্র নামধারী স্বৈরাচারী অস্থিতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্যে স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ন হয়েছিলাম? পরাধীন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শোষণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ থেকে যখন আমাদের মেরুদন্ড দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল তখনই আমরা অন্য উপায় না পেয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির আশায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম স্বাধীনতা সংগ্রামে। নতুন প্রজন্মের জন্যে হলেও নিজের প্রাণ উৎসর্গ করে বীরচেতাগন বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের। তারপর, কি পেয়েছি আমরা? কতটুকু মুল্যায়ন করা হয়েছে জনমানুষের মৌলিক অধিকারের? আমরা অন্ধকারচ্ছন্ন গভীর সুড়ঙ্গে নিক্ষিপ্ত হয়ে বিগত প্রায় চল্লিশ বছর সম্মুখীন হয়েছি বিভিন্ন তথাকথিত শাসন ব্যবস্থার।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম স্থপতির একক অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত সরিয়ে দিয়েছে অনেক দূরে, স্বৈরাচারীর নির্যাতনে প্রাণ দিয়ে মিছে বিপ্লবের নামে রক্তোৎসবে মেতেছে, গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে রাজপথে ছাত্রসমাজ-বুদ্ধিজীবী-শ্রমজীবীদের রক্তের বন্যা বয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে নতুন প্রকরণে ফ্যাসিবাদের পথে হেঁটেছে পর্যায়ক্রমিকভাবে, ভালো মানুষের লেবাসধারী রাজনীতিবিদেরা গণমানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে পেটে লাথি মেরে নিজেদের ঝুলি-ভান্ডার ভরিয়ে দূর্নীতি-সন্ত্রাস-হত্যা-ধর্ষণ-চাঁদাবাজিতে দীক্ষিত হয়ে জনগনের ন্যুনতম প্রাপ্তি কেড়ে নিয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে লাগামহীন অর্থনীতিকে আরও বিপর্যস্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে গণমানুষের অন্নের সন্ধানের ব্যবস্থা না করে মুখে ডিজিটালাইজেশনের বাণী বিক্রি করে দূর্নীতি-সন্ত্রাসবাদ-দলীয়করণে মেতে আছে চলমান সরকার।

একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থার উপর জনগনের অর্থনৈতিক মুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশ পরিচালনার সুষ্ঠু ও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা পদ্ধতি পরিবর্তন করে দিতে পারে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির; গড়ে তুলতে পারে এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে গণমানুষের মৌলিক অধিকার ও শ্রমের সুষম বন্টন সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হয় যাতে সামাজিক-নাগরিক সাম্যতা বজায় থাকে । আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ মূর্খ হওয়া সত্বেও তাদের মধ্যে ঐ বোধশক্তি অবশ্যই আছে যে ভাত-কাপড়-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসা এর অধিকার তাদের কাছে অতিব প্রয়োজন যা স্বাধীনতার প্রায় চল্লিশ বছর পরেও অর্জিত হয়নি । রাজনীতিবিদগণ শুধুই মুখের বুলি আওড়াচ্ছে, প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে ছাই করছে গণমানুষের খড়ের ঘর ! বাংলা সাহিত্যের স্বনামধন্য কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত যেমন ব্রিটিশ শাসনকে "ঈশ্বরের দান" বলে গ্রহন করেছিলেন তেমনি প্রকৃত শিক্ষার আলো বঞ্চিত এদেশের মানুষ তাদের বঞ্চনা-গঞ্জনা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলে প্রতিনিয়ত নিশ্চুপ সহ্য করে যাচ্ছে ।

পাকিস্তান আমলে আমরা গোলামের মতো জীবিকা নির্বাহ করেছি, এখন তার চেয়ে কোন অংশে কম আছি; বেঁচে আছি হাত-পা-মস্তিষ্ক-স্নায়ুতন্ত্র-বিবেক বিসর্জন দিয়ে। বারেবারে একে না হলে ওকে ভোগ বিলাসের জন্যে এই দেশের রাজত্বে বসিয়ে কি লাভ পেয়েছি আমরা? সবকিছুই তো ভালভাবেই দেখা হয়ে গেছে আমাদের। এই সমাজ ব্যবস্থায় জন্মের পর মানুষকে খুঁজতে হয় জীবন বাঁচানোর উপায় । তাই, তথাকথিত প্রথাবদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলেও তা স্পর্শ করতে পারে না সেই সব বঞ্চিত মানুষের হৃদয়কে। মূর্খতার বশে পর্যবসিত না হয়ে এই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার জন্যে আর ভাগ্যকে দোষারোপ না করে সার্বিক মুক্তির জন্যে খুঁজে বের করতেই হবে অন্য উপায়। সাধারণ জনগনের হাতেই তাদের ভোটাধিকার আবদ্ধ, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্যে পুনরায় ভুল কোন কিছুর প্রয়োগ করা মানেই নিজেদের অবস্থার আরও চরম অবনতি অর্থাৎ এরপর নিজেদের অস্তিত্বের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকবে!

বাঙালি জাতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চল্লিশ বছর অতিক্রমের পথে এসে ক্ষমতাসীন সরকারের বিবেক জাগ্রত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী অকৃত্রিম বন্ধু ভারতকে সাড়ম্বরে কৃতজ্ঞতা জানানোর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে সে সরকারই সবসময় অস্বীকৃতি ও অকৃতজ্ঞতা বোধ ব্যক্ত করেছে ভারতের প্রতি। এখনো গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ পান্তায় ভারতের পেঁয়াজ (সাশ্রয়ী হওয়ায়) মুখে দিয়ে খাওয়া শুরু করে আর শহরের মানুষ চায়ে ভারতের চিনি ব্যবহার করে তৃপ্তি সহকারে পান করে। কিন্তু, সারাদিন ভারতের নিন্দায় মুখর থাকে এই দেশের অধিকাংশ জনগণ। এই হলো পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রতি আমাদের দেশের মানুষের চরম ভালোবাসার নিদর্শন! মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা আগের টার্মে ক্ষমতায় এসেও কোন বিবেকবোধ জাগেনি ভারতকে তার অশেষ অবদানের জন্যে অভ্যর্থনা জানানোর। কিন্তু, এবার ক্ষমতায় এসে হয়ত কোন বিশেষ কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে সেই কাজটি করে প্রমাণ করলো। সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে নিক্ষিপ্ত হয়ে দুই দেশে দুই অন্যতম প্রধান ধর্মের মানুষের ঐতিহ্যগত বিভেদ, পারস্পরিক বৈষম্য ও বিদ্বেষের কারণে নিজেদেরকে পারস্পরিক বন্ধনের কক্ষপথ হতে সর্বদাই বিচ্যুত রাখে। যদিও দুই দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের খুব একটা পার্থক্য নেই বললেই চলে। বিজ্ঞানের এই সাফল্যমণ্ডিত যুগে বসবাস করেও আমরা ১৯৪৭ সালের যুক্তিহীন দেশ বিভাগের সেই ব্যবধান এখনো কমিয়ে আনতে পারিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে হাতের মুঠোতে এনেও! এই কি মানুষ হিশেবে নিকটবর্তী দু'দেশের নাগরিকের মানবিক মূল্যবোধ ও চেতনার উন্নয়ন?

প্রত্যেক মানুষ যদি নিজেদের ভুল-ত্রুটি বুঝতে পারে অর্থাৎ মহান গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস এর মহাবাণী- "নিজেকে জানো"-এর মতো নিজেকে অনুধাবন ও উপলব্ধির মাধ্যমে সঠিকভাবে জানতে ও চিনতে পারে, তবেই নিজের ভেতরের পশুগুলোকে হত্ত্যা করে চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনয়ন সম্ভব। নিজেকে যে সঠিকভাবে জানতে পারে অন্যকেও সে উপলব্ধি করবার ক্ষমতা রাখে। একে একে এভাবেই উপলব্ধিবোধ জাগরণের মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষ নিজের ভেতরে পরিবর্তনের ধারা প্রবাহিত করতে পারে। কিন্তু, সব বুঝে জেগে ঘুমের ভাব করে থাকলে তার পরিবর্তন ঘটানো কখনো সম্ভব নয়। যেমন-সবকিছু বুঝেও কোন কিছুই না বোঝার ভান করে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে এই দেশের তথাকথিত শিক্ষিত সুশীল সমাজ!

বস্তুনিষ্ঠ গনমাধ্যমগুলোর অবশ্যই সচেষ্ট ভুমিকা রাখা উচিত তরুন সমাজ ও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা ও সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে দেশাত্মবোধের প্রত্যয়ে শোষণমুক্ত, বিভেদ-বৈষম্যহীন, মৌলবাদ-জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অভিপ্রায়ে।

তরুন প্রজন্মের অগাধ প্রজ্ঞা-মেধা-মনন, নৈতিকতা ও মানবতাকে ভিত্তি করে মুক্ত জ্ঞান বুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার বিস্তরণ ঘটিয়ে, সৎ-সাহসী উদ্যোগ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলিষ্ঠ জনকল্যাণমুখী নের্তৃত্ব। জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে এই চেতনাকে তবেই সেই নেতৃত্বের হাত ধরেই গণমানুষ পেতে পারে তাদের কাঙ্খিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি। স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবে রূপায়িত করে শোষণমুক্ত, দারিদ্রতাহীন, বিভেদ-বৈষম্যহীন, স্বনির্ভর, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে প্রথাবদ্ধ এই সমাজ ব্যবস্থাকে ভাঙ্গনের স্রোতে ভেসে দিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় আলোকিত করতে পারে আমাদের চারপাশের পরিবেশ। মানবাধিকার লঙ্ঘিত প্রথাবদ্ধ প্রতিক্রিয়াশীল পরাধীন এই সমাজ ও রাষ্ট্র-এর চিরাচরিত ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অবশ্যই সম্ভব যদি আমরা আমাদের অতীতের ভুলগুলোকে দূরে সরিয়ে ফেলে নিজেদের যথাযথ অধিকার ও পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থেকে প্রগতিশীল চেতনায় উদ্বুদ্ধ থেকে সামনে এগিয়ে যাই দূরদর্শী তরুন প্রজন্মের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর "সভ্যতার সংকট" নামক প্রবন্ধে উল্লেখ্য ভাষ্য এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতের সাথে তুলনা করে লেখার ইতি টানছি । তিনি স্পষ্টভাবে বলে গেছেন- "মনুষত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপরাধ মনে করি । এই কথা আজ বলে যাব, প্রবল প্রতাপশালীরাও ক্ষমতা মদমত্ততা আত্মম্ভরিতা যে নিরাপদ নয় তারই প্রমাণ হবার দিন আজ সম্মুখে উপস্থিত হয়েছে; নিশ্চিত এ সত্য প্রমাণিত হবে" ।