একটা সময় আমি প্রথম আলো'র 'বদলে যাও বদলে দাও মিছিল' ব্লগে নিয়মিত লিখতাম। এখানে প্রায় আমার ৭০ টার মত লেখা পোষ্ট করা ছিল। তারপর এটা একদিন ঘোষণা দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল 'ব্লগ মানুষের উৎসাহ হারাচ্ছে' এই অজুহাতে; আসলে সেখানে রিডিং কম হচ্ছিল আর কোন আয় ছিল না। সর্বোপরি তাদের ব্লগ নিয়ে কোন ইনোভেটিভ আইডিয়া অন্তত আমি দেখিনি একটা ফেসবুক পেজে পোষ্টগুলো শেয়ার দেওয়া ছাড়া।
যাকগে- যে গেছে সে গেছে। ব্লগ বন্ধ করাটা একদিন প্রথম আলোর জন্য বুমেরাং হয়ে যাবে হয়ত; যেভাবে কোডাক নিজে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রথম সারির উদ্ভাবক হয়েও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণে তা অবহেলা করেছিল আর জাপানীরা তা নিয়েছিল লুফে। ফলশ্রুতিতে শত বছরের জায়ান্ট কোডাক আজ দেউলিয়া, বিলুপ্ত।
পৃথিবী আজ যেভাবে এগোচ্ছে তাতে করে ছোটখাটো ব্রেন, প্রতিষ্ঠান বা দেশের পক্ষে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা মুশকিল হবে আগামীতে। এমনও হতে পারে সারা পৃথিবীতে প্রতিটা সেক্টরে শুধুমাত্র একটা করে প্রতিষ্ঠান থাকবে। বাকিগুলো হয় প্রতিযোগিতায় হেরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে; আর না হলে এক্যুজিশন হয়ে যাবে প্রতিযোগীর কাছে। অথবা সমগোত্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা মিলে কার্টেল তৈরি করবে।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে- অল্প কিছুকাল আগ থেকে কাগজে ছাপানো পত্রিকা বিলুপ্ত হতে শুরু করলেও বর্তমানে তা ব্যাপক গতি লাভ করেছে এবং ক্রমান্বয়ে তা বিলুপ্ত হয়ে যাবে পৃথিবী থেকে। এই বিলুপ্তি প্রতিস্থাপিত করবে অনলাইন পত্রিকার রাজত্বকে। আর এই অনলাইন পত্রিকাগুলোও সাংবাদিকতার প্রচলিত বিধি মানবে না বা তার প্রয়োজন হবে না কারণ সংবাদ উপস্থাপনের প্রচলিত ফর্মুলাও আর কাজ করবে না। পাঠকেরাই নিবে সংবাদ উপস্থাপক ও পরিবেশকের ভূমিকা। ফলশ্রুতিতে আগামীর সাংবাদিকতা হবে ব্লগার/নাগরিক নির্ভর আর পত্রিকা'র ভূমিকা হবে একটা প্লাটফর্ম হিসেবে।
ধুর! যে কথা বলার জন্য এই লেখার অবতারণা করেছিলাম; তার ধারের কাছেও নাই এখন-
বলছিলাম, প্রথম আলো তার অনলাইন ভার্সনে ব্লগ উইন্ডোগুলো বন্ধ করে দিলেও ফেসবুকের ফ্যান পেজটা কিন্তু ঠিকই রেখে দিয়েছে। আর তাই তো মাঝে মাঝে 'আমি আছি' জানান দিতে সেখানে মূল পত্রিকার লেখা শেয়ার দেওয়া হয়!
কাউকে কতটুকু বদলাতে পেরেছে সেটা জানতে না পারলেও এটা বুঝেছি- প্রথম আলো নিজে অন্তত বদলে গেছে!
না হলে মেরে ফেলা পেজে পোষ্ট শেয়ার কেন?
২৯/১২/২০১৪ রাত: ১০.৪০