গত কয়েকদিনে দেশে কিছু কিছু সর্বাধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িক বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই; যা হয়ত অনেকেরই মতের বিপক্ষে যাবে।
এই বিষয়ে আলোচনায় যাওয়ার আগে আমি কয়েকটি নুমুনাকে উদাহরণ হিসেবে দিতে চাই-
১) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জনাব ওবামা দিল্লীতে আসবেন বলে সেখানকার সব হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে; পাশাপাশি দিল্লীকে নো ফ্লাইজোনও ঘোষণার দাবী জানিয়েছে আমেরিকা! জনাব ক্লিনটন যখন আমাদের দেশে এসেছিলেন- তখনও আমরা এইরকম পরিস্থিতি দেখেছি।
২) আমেরিকা তার নিরাপত্তার জন্য পৃথিবীর প্রায় সব ইমেইল, ফোনকল ট্র্যাক করে এমনকি তাদের বন্ধু রাষ্ট্র- জার্মান চ্যাঞ্চেলরের ফোনও ট্র্যাপ করেছিল।
৩) সম্প্রতি আমেরিকা, উত্তর কোরিয়া থেকে আমেরিকায় অবস্থিত সনি পিকচারের হেডকোয়ার্টারে হ্যাকিং ঠেকাতে না পেরে; উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট লাইন দুইবার ডিসকানেক্ট করে দিয়েছিল অবৈধভাবে।
আমি উপরের তিনটা নমুনাকে উদাহরণ হিসেবে দিলাম এই কারণে যে, নিরাপত্তার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও বাড়াবাড়ি করে; যদিও তাদের যেকোনো ধরণের অপরাধ মোকাবিলা করার মত সক্ষমতা রয়েছে। তারপরেও তা করে কারণ তারা নিরাপত্তাটাকে নিচ্ছিদ্র করতে চায় সবসময়!
এরকম বাড়াবাড়ির নমুনা আরও ভুড়িভুড়ি আছে- ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও বেলজিয়ামের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট দেখা যাবে। এমকি ভারতও সম্প্রতি অনেকগুলো ওয়েব সাইট বন্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তান পেশোয়ায়ের স্কুলে আক্রমণের পর তাদের সেই অঞ্চলের মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রেখেছিল বলে নিউজে জেনেছি।
ধারণা করি, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের দেশের ভিতরে-বাহিরে আদান-প্রদানকৃৎ সব ই-মেইল, ভয়েস কল, ফোন কল, ম্যাসেঞ্জারে আড়িপাতা বা তা সার্বক্ষণিক মনিটর করার সক্ষমতা নেই। তাই জন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেয়ে যদি সরকার ভাইবার বা হোয়াটসআপসহ সর্বাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সাময়িক বন্ধ রাখে তাহলে তাকে সমালোচনা না করে সাময়িক ব্যক্তি অসুবিধা মেনে নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত। যেখানে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার ধারণা নেই- দেশে অপরাধ কিভাবে সংগঠিত হচ্ছে বা কোন মাধ্যমে তার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
একটা বিষয় আমাদের সবারই মনে রাখা উচিত যে, অপরাধীরা সবসময়ই একধাপ এগিয়ে থাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে!
আমাদের চিন্তা থেকেও —
ধন্যবাদ !!!
২০/০১/২০১৪ সকাল ১১.১২