ডিসকভারি টিভি চ্যানেলে আমি সুযোগ পেলেই প্রাণী জগতের কীর্তিকলাপ দেখতে পছন্দ করি। এতে নির্মল আনন্দের পাশাপাশি জানার আছে অনেক কিছুই। এই যেমন- সিংহদের দিনলিপিতে প্রায়ই দেখা যায় দলছুট এক নয়া মর্দ সিংহ কোত্থেকে এসে আগে থেকে সেই অঞ্চলে অবস্থানকারী সর্বদা ললনাবেষ্টিত সিংহ মহারাজকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আগন্তুক সিংহ যুবাটি যুদ্ধে জয় লাভ করতে পারে না। অর্থাৎ সিংহটি বৃদ্ধের কাছে পরাজিত হয়ে ফিরে যায় নতুন কোন রাজ্য দখল করতে অথবা মারা যায় চিরকুমার থেকেই। মোদ্দাকথা সে সারাজীবনে তার শুক্রাণু সিংহীর জরায়ুতে বপন করতে পারে না।
— বড়ই দুঃখের ব্যাপার!
বৃদ্ধ সিংহের কাছে যুবার এই হারের অন্যতম কারণ হলো সিংহীরা সদলবলে বৃদ্ধ সিংহকে সাপোর্ট করে যাওয়াটা- যার কারণে আগন্তুক সিংহ যতই শক্তিশালী হোক না কেন তার একার পক্ষে মিলিত শক্তির কাছে জয় লাভ করা সম্ভবপর হয় না। কেন বোকা সিংহীরা যুবা সিংহকে রাজা না বানিয়ে বৃদ্ধের ঘর সংসার করে- এটা একটা প্রশ্ন। তবে যেটা বোঝা যায়, তা হলো- এর মূলে রয়েছে মহারাজের ঔরসে জন্ম নেওয়া তাদের বাচ্চাগুলোকে বাঁচানো। প্রথাগতভাবে আগন্তুক সিংহটা জিততে পারলে সর্বপ্রথম তার কাজ হবে আগের পুরুষের ঔরসে জন্ম নেওয়া সকল শিশুকে হত্যা করা। তারপর সে নেমে পড়বে তার দখলে যাওয়া সব সিংহীদের একে একে গর্ভবতী বানানোর কাজে। অর্থাৎ নিজের বংশ বিস্তার করার এক মহৎসব চালায় সে। অবশেষে শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে তবেই থামে; অন্য কাজে মন দেয়।
— আই মিন শিকারে!
প্রায় একই রকমের ঘটনা প্রাণী জগতের আরও অনেক প্রানীর মধ্যেই দেখা যায়। প্রায় কাছাকাছি চরিত্র ভল্লুকদেরও। আছে মানুষের মধ্যেও। প্রায়ই শোনা যায় সতীনের সন্তানকে হত্যা করছে তার সৎ মা বা স্বামী হত্যা করছে তার স্ত্রী'র আগের পক্ষের সন্তানকে।
শোনা যায় চেঙ্গিস খান নাকি ছিল এই লাইনের সবচেয়ে সিংহ পুরুষ। যুদ্ধ জয় করে যে এলাকাটাই সে দখলে নিত, সেইসব এলাকার সব মানুষকে হত্যা করলেও সবচেয়ে সুন্দরী কুমারীদের বেছে বেছে তার প্রাসাদে পাঠানোর এক স্থায়ী দায়িত্ব ছিল তার সেনাপতিদের। আর উনি সময় অসময়ে এক এক করে সব মেয়েকেই গর্ভবতী বানানোর কাজে লিপ্ত থাকতো। এ করে করেই নাকি বর্তমান পৃথিবীর প্রায় চার পার্সেন্ট মানুষের জেনেটিক বাবা সে।
— মারাত্মক ব্যাপার!
তা চেঙ্গিসপুতেরা চার পার্সেন্ট হোক আর দশ পার্সেন্ট হোক! আমার কি? তেনারা বাপের চরিত্র না পেলেই হলো!
ধুর! লেখার আর বিষয় পেলাম না! অনেকদিন পর লিখতে বসে সত্যি বলতে কি আমি বিষয় খুঁজে পাচ্ছি না! কি নিয়ে লিখবো বলে ল্যাপটপ খুললাম! আর লিখছি কি?
বলছিলাম, নামি নামি করে করে পুতিন সাহেব কিন্তু নেমে পড়েছেন ময়দানে! আইমিন রাশিয়ান ভল্লুকের ঘুম ভেঙেছে।
যারা খুব খুশি, তাদের জন্য বলি, ট্যাঁকের পয়সা রেডি রাখেন, রাশিয়ান অস্ত্র কিনতে হবে না? নাকি শুধু আমেরিকানটার দিকে চেয়ে থাকলেই হবে? বিজ্ঞাপনটা দেখছেন না? বাড়ী পোড়ানো ঠেকাতে হবে না! নাকি খালি হাতেই যুদ্ধ করবেন?
আর যারা খুব কষ্ট পেয়েছেন, তারা আর কি করবেন? আমেরিকা মুল্লুকে জমানো ডলারগুলোকে রুবলে কনভার্টের ব্যবস্থা করেন! না পারলে বোমা খান! জল আর তেলকে এক লাইনে নিয়ে আসার সময় বেহুঁশ ছিলেন; আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ভল্লুকের ঘুম ভাঙালেন! লন এবার ঠ্যালা সামলান!
এক জীবনে ইলেকশন ক্যাম্পেইন শুনেছেন, মার্কেটিং ক্যাম্পেইনও শুনেছেন! শুনেছেন টিকা ক্যাম্পেইনের নামও! এবার এসেছে বোম্বিং ক্যাম্পেইন!
বলছিলাম কি, সিংহরা ঝগড়া করে কিন্তু সবশেষে গর্ভবতী হয় সিংহীরাই! মধ্যথেকে কিছু বাচ্চাকাচ্চা মারা যায়; এই আর কি!
বুঝলেন না, দিন বদলাইছে তাই স্টাইলও পাল্টাইছে!
সো! নো বেহুঁশ; ডু হুঁশ!
১৫/১০/১৫ রাতঃ ১১.২০