ভোগান্তির জন্য কাকে দুষবো- মানুষ না পৌর কর্তৃপক্ষকে?

সুমিত বণিক
Published : 10 May 2016, 02:03 AM
Updated : 10 May 2016, 02:03 AM

কটিয়াদী উপজেলা সদরের পৌরসভা এলাকার অন্যতম পরিচিত রাস্তাটি হচ্ছে উপজেলা পরিষদ রোডে হিরালাল সাহার বাড়ি সংলগ্ন মোড় থেকে সান লাইট স্টুডিও পর্যন্ত রাস্তাটি। এ রাস্তাটি একটি সংযোগ রাস্তা হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। রাস্তাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাটি নামেই রয়েছে, কার্যত এটি এই রাস্তার দুই পাশের অধিকাংশ মানুষের কোন উপকারেই লাগছে না, বরং ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাটির বেহাল দশা ফুটে উঠে । ড্রেন ভরে গিয়ে রাস্তার উভয় দিকেই ড্রেনের দূষিত পানিতে একাকার হয়ে যায়। হাটু পর্যন্ত কাপড় ভাঁজ করে তবেই রাস্তা পার হতে হয়!

বিষয়টির জন্য প্রথমেই আমি কোন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ বা জনপ্রতিনিধিকে দোষারোপ করছি না, প্রথম দোষ হলো, এ রাস্তার পাশে বসবাসরত মানুষদের। ড্রেনের মধ্যে এহেন পদার্থ বাকি নেই যে ড্রেনের পাশের মানুষগুলো ফেলেন না! ছোট বাচ্চার পায়খানা থেকে শুরু করে বাড়ির সকল আবর্জনা ঠাঁই পায় এই ড্রেনে। এই কি আমাদের সচেতনতার লেভেল? দেখে শুনে মনে হয়,যেন সর্ষের মাঝেই ভূত লুকিয়ে আছে!

সম্প্রতি রাস্তার পাশে অনেকেই বিশাল অট্টালিকা গড়ে তুলেছেন, কিন্তু এ স্থাপনা নির্মাণকালে সকল মালামাল রাখার স্থানও হয় এই রাস্তা। ফলে পাকা রাস্তায় মাটি জমে গিয়ে তৈরি হয় উচু-নিচু ও জলাবদ্ধতা। সমস্যা হলো দিন দিন আমাদের শিক্ষাগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পেলেও, নাগরিক দায়িত্বশীলতার জায়গায় ভর করেছে আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব ও কাণ্ডজ্ঞানহীনতা। কাকে বলবো? কে শুনবে কার কথা?

এ ব্যাপারে বর্তমান ৩ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিপ্লব কুমার সাহা (বিপদ) এর সাথে কথা হলে তিনি ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তার নির্বাচনী ওয়াদার মধ্যে ছিল। পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতার ব্যাপারেও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উত্তরণে বরাদ্দ না পেলেও স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনে এলাকার মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে কাজটি করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে পৌর উন্নয়নের কাজের তালিকায় এই রাস্তার ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজটি বিবেচনায় রয়েছে।

সর্বোপরি সমস্যাটা তাদের কাছে ততোটা গুরুত্ব বহন করেনা, যারা এই সমস্যার অনুঘটক। কিন্তু যারা এই রাস্তাটির নিত্য পথচারি বা এই ড্রেনেজ ব্যবস্থার সুফল ভোগকারি তাদের কাছে এটি একটি নাগরিক ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আশাকরি সংশ্লিষ্ট মহল এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সুমিত বণিক, উন্নয়নকর্মী।