কালের স্বাক্ষী মুক্তাগাছার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রাজবাড়ী ও দেবালয়ের জরাজীর্ণ ভবনগুলো

সুমিত বণিক
Published : 14 Sept 2016, 05:02 PM
Updated : 14 Sept 2016, 05:02 PM

ময়মনসিংহের জেলার অন্যতম প্রত্নতাত্বিক সম্পদ সমৃদ্ধ উপজেলা হলো মুক্তাগাছা। অন্ততঃ মুক্তাগাছার 'মন্ডার' সুখ্যাতি বাংলাদেশের সীমানা পেড়িয়ে আরো অনেক বিস্তৃত।

মুক্তাগাছার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দিরসহ বিভিন্ন বাড়ির দিকে তাকালে রাজা-জমিদারদের অতীত স্মৃতির চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি সনাতন ধর্মালম্বী রাজা-জমিদারদের নামে অনেক বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠিত আছে।


রয়েছে অনেক পুরোনো স্মৃতি বিজরিত ও শত-শত বছরের পুরোনো মন্দির। যা দেখলে প্রাচীন নিপুণ স্থাপত্য নকশাঁ সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যায়।


আমি আমার সাধ্যমতো রাজবাড়ী ও কিছু মন্দির দর্শন করেছি। আত্মতৃপ্তি পেয়েছি প্রাচীন ও নতুন মন্দিরগুলো দেখে। কিন্তু যেটি দেখে কষ্ট লেগেছে, সেটি হলো- রাজবাড়ী ও পুরোনো মন্দিরগুলোর অধিকাংশই ভগ্নদশায়!


এসবের অধিকাংশগুলোতে রয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তির আইনী বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড! লোকমুখে শুনেছি, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নাকি এই নিদর্শনগুলো সংরক্ষণে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে!


যাই হোক আমার প্রত্যাশা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মুক্তাগাছার পুরোনো এসকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শণগুলো বাঁচিয়ে রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, না হয় রাজবাড়ীসহ পুরোনা মন্দিরগুলোর ভগ্ন ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলে, পুণরায় দৃষ্টিনন্দন শৈল্পিক স্থাপনা গড়ে করে গড়ে তুলুন।


পুরোনো জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবণগুলোকে দাড়িয়ে রেখে কি লাভ? এতে তরুণ প্রজন্মের মাঝে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সম্পর্কে আরো বিরূপ ধারণা জন্ম দিচ্ছে!


তাই এগুলোর সঠিক ইতিহাস সম্বলিত করে আধুনিকায়ন ও দৃষ্টিনন্দন করতে পারলে একদিকে সুরক্ষিত হবে প্রাচীন প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ অন্যদিকে বাড়বে রাজস্ব আয়। নাকি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রাজবাড়ী ও দেবালয়ের জরাজীর্ণ ভবনগুলো এভাবেই কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়েই থাকবে?


আমাদের প্রত্যাশা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রাজবাড়ীসহ পুরোনো মন্দিরগুলোর অতীত স্মৃতি ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে এই স্থাপত্যগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন,


যেন বাংলার অতীত প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনা সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। যেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বুকভরা আশা নিয়ে আসা পর্যটকগণ কালের স্বাক্ষী হয়ে অবহেলায় দাড়িয়ে থাকা ইট-পাথরের জরাজীর্ণ ভবনগুলো দেখে এসে অনন্তঃ হতাশ না হন।

সুমিত বণিক,
উন্নয়নকর্মী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, ঢাকা।
sumitbanikktd.guc@gmail.com