‘সবাই খালি ছবিই তুইল্লা নেয়, কিন্তু ব্রিজটা তো আর অয় না’

সুমিত বণিক
Published : 21 Oct 2016, 07:26 AM
Updated : 21 Oct 2016, 07:26 AM

কাজ করতে গিয়ে যেটি অনুভব করতে পারলাম জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলাটি একটি বন্যা কবলিত ও অনুন্নত এলাকা। কাজের তাগিদেই উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের গাবেরগ্রাম বাজারের বেশ ছোট ছোট তক্তা দিয়ে তৈরি দীর্ঘ কাঁঠের ভাঙ্গা ব্রিজটি পার হতে হলো। পারে এসে ভাবলাম একখানা ছবি তুলে নেই, ফেসবুকে আপলোড করবো।


কিন্তু পারে এসে ছবি তোলার সময় ঐ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র মো. অন্তর (১০) বলে,'সবাই খালি ছবিই তুইল্লা নেয়, ব্রিজটা তো আর অয় না, যারাই আহে সবাই এইডার ছবি তুইল্লা লইয়া যায়।'


অন্তর আরো বলে, 'বানের পানি আইলে আমাগো আসা-যাওয়ায় খুব কষ্ট অয়, ভারি কোন জিনিস লইয়া আওন-যাওন করুন যায় না, জুনাইল দিয়া যাওন নাগে।' অন্তরকে ব্রিজের ব্যাপারে চেয়ারম্যান সাহেব কি বলে জানতে চাইলে অন্তর উত্তরে বলে,'ওনারা তো খালি অইবো অইবোই বলে, আর এখনও অইতাছে।'


সম্প্রতি পটুয়াখালী গভ. জুবিলী হাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস মির্জাগঞ্জ উপজেলায় পায়রা নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি লিখেছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী ওই চিঠির জবাবে বলেছিলেন, শীর্ষেন্দুর চিঠি পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। নৌকায় নদী পার হবার ঝুঁকি নিয়ে ছেলেটির উদ্বেগের প্রশংসা করেন তিনি।


কিন্তু মাদারগঞ্জের গাবেরগ্রামের ব্রিজটির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানোর মতো চিন্তা হয়তো অন্তরের মাথায় নেই, বা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এক জিনিস বারবার সাধারণত লাইম-লাইটে আসে না, তাই বলে কি মাদারগঞ্জের অন্তরদের দুঃখ দূর হবে না?


স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন কি সমস্যাটি সমাধানে এগিয়ে আসবেন না?

গাবেরগ্রাম, মাদারগঞ্জ থেকে-
সুমিত বণিক, উন্নয়নকর্মী,
ঢাকা।
sumitbanikktd.guc@gmail.com