সমাধান কোথায় বা কিসে?

সুমিত চৌধুরী
Published : 12 June 2012, 01:34 PM
Updated : 12 June 2012, 01:34 PM

এই মুহূর্তে একটা ব্যাপার আমার খুবই বাজে লাগছে। জানিনা কার কেমন লাগবে, আমি এখানে শুধু আমার মনের কথাটাই লিখছি তার বেশী কিছুই না।যদিও বিডি ব্লগে এটি আমার প্রথম পোষ্ট।

বর্তমানে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে সহিংসতা চলছে আর নিজেরদের জীবন বাঁচাতে অনেকেই নিজের দেশ মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে একদিকে সেটা যেমন আমাদের জন্য চাপের ঠিক তেমনি অপরদিকে মানুষ হিসেবে একের প্রতি অপরের সহানুভূতি দেখানো দরকার আমাদের।

ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে করে এরকম রোহিঙ্গা শরনার্থী এক প্রকার আমাদের জন্য ভয়াবহ।তারা তাদের জীবন বাঁচাতে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে পাড়ি জমাচ্ছে আমাদের দেশে,বলতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই সহায় সম্বলহীনভাবে আসছে তারা।যেহেতু তারা নিজেদের জীবন বাঁচানোর তাগিদেই এখানে আসছে সুতরাং তারা জীবন যাপনের জন্য যেকোন কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠবে তাদের মাথায় এখন একটাই চিন্তা থাকার জায়গা আর খাবার।

যেহেতু তারা নিজ দেশ সমাজ সবকিছু ছেড়ে এখানে চলে এসেছে আর যদি এখানেই বাকী জীবন কাটায় তাহলে তাদের কোন কাজের লজ্জা শরম থাকবে না।শুধু মাত্র নিজের জীবন বাঁচাতেই তারা ব্যস্ত হয়ে উঠবে আর যার ফলে আমাদের সমাজ এক অন্যরকম অন্যায়ের মুখোমুখি হবে।আর এ সকল সহায় সম্বলহীনদের নিজেদের অর্থের পাহাড় বানানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে এই সমাজের তথাকথিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।এমন সুযোগ তারা খুব ভালো করেই কাজে লাগাবে, এসকল অসহায়দের কাঁধে বন্দুক রেখে তারা এ সমাজে গুলি ছুড়তে থাকবে অহরহ,আর জীবন বাঁচানোর তাগিদে সে সকল অসহায়রা এসকল কাজ নির্দ্বিধায় করবে।

শুধু এখানেই শেষ নয় এমনিতেই ক্ষুদ্র আয়তনের এই দেশে অধিক জনসংখ্যার কারনে আজ সকল কিছুই ব্যয়বহুল,সকল কিছুই আজ চাপের মুখে।রাস্তা-ঘাট,নগর-বন্দর,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসালয়,ব্যবসা থেকে চাকরি বাজার আজ সব কিছুতেই জনসংখ্যার চাপের প্রভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এর মাঝে এই নতুন জনসংখ্যা, চাপের এই লাগামহীন ঘোড়াকে আরো বেগবান করবে।

দেশের অর্থনীতিতে এক বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এ জনসংখ্যা।এখানে শুধু যে তারা আসছে তার উপরেই কিন্তু হুমকি হবে না,হুমকি হবে তাদের জীবন যাপনের মানের উপর নির্ভর করে।
এমনিতেই মধ্যপ্রাচ্য সহ অন্যান্য দেশে এসকল রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে নানানরকম কাজ করাতে সেটির প্রভাব পড়ছে আমাদের প্রবাসী তথা আমাদের রেমিটেন্সের উপর এবার আসবে তা প্রাত্যহিক জীবনে।

তাহলে কি তাদের আমরা ছুঁড়ে ফেলে দিবো? সীমান্তের পাড়ে নাফ নদীতে গুলি করে মেরে ফেলবো তাদের? যখন তারা অবৈধভাবে প্রবেশ করতে চাইবে!

তাহলে তো আমাদের সাথে বিএসএফের তফাৎ রইল কোথায়?

একবার ভাবুন তো ১৯৭১ এর স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় যদি ভারত সরকার আমাদের দেশের অসহায় লোকদের সেখানে আশ্রয়ের জায়গা না দিতো তাহলে কি হতো?কোথায় যেতো তারা?
সেটা ভেবে দেখুন একবার?আজ আমরা যদি তাদের ঠেলে দেই বা বিমাতাসুলভ আচরন করি তাহলে সেই অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে?তারা তো শখ করে আর তাদের সর্বস্ব ত্যাগ করে এখানে পাড়ি জমাচ্ছে না।

এমনিতে সবাই ধর্ম ধর্ম ভাই ভাই করে করে জান প্রান দিয়ে দেয়, ধর্মের নানান কথা বলে বলে সারাদিন ঝান্ডা জ্বালায়ে রাখে এখন যদি আমি বলি আমরা স্রষ্টার সৃষ্ট শ্রেষ্ঠ জীব মানব জাতি হয়ে আমাদেরই আরেক মানব গোষ্ঠী যারা বিপদে পড়েছে তাদের সাহায্য করছিই না,আমাদের জ্ঞান দ্বারা আমরা বুঝতে পেরেও তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছি না তাহলে সে পরপারে অর্থাৎ যে পরপারের দোহাই দেয় কথায় কথায় সেখানে গিয়ে কি উত্তর দিবো?

এতক্ষন যা লিখলাম তাতে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুই পিট আমি আমার দৃষ্টিতে যা এসেছে তাই তুলে ধরলাম।

যদি তাই হয় তবে এর সমাধান কোথায়?
এসকল অসহায় মানুষদের কি আমাদের সমাজে এনে সমাজটাকে ভারী করবো নাকি তাদের ফেলে দিয়ে নিজেদের পাপ ভারী করবো কোনটা?