মানবতাবাদীরা আপনাদের বলছি

সুমিত চৌধুরী
Published : 27 June 2012, 04:33 PM
Updated : 27 June 2012, 04:33 PM

বেশকিছুদিন আগের কথা পাশের দেশ মায়ানমারে রাখাইনরা রোহিঙ্গাদের মারছিল, আর তাই তারা জীবন বাঁচাতে ছুটে আসে বাংলাদেশে, পাড়ি জমাতে চায় এদেশে, কিন্তু এদেশ তাদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায়।আর তাতেই মৌসুমী মানবতাবাদীরা ফুলে ফেঁপে উঠে ধর্ম থেকে শুরু করে মানবতার দোহাই দিয়ে নানান প্রক্রিয়ায় চেষ্টা করে তাদের এদেশে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে (এতে তাদের কি কি লাভ তা এখানে নাইবা তুলে আনলাম)।

কিন্তু তারা পারেনাই কারন সরকার যেহেতু তার সিদ্ধান্তে অটল আর সাথে আমার মতো অনেক অমানবতাবাদীরা ছিলো তাই।কি করেনি তারা ব্লগে ফেসবুকে যেখানে পেরেছে সেখানেই উগলেছে যেমনে পেরেছে সেভাবেই চেষ্টা চালিয়ে গেছে,আর তাতে উস্কানি দিতে ভুলে যায়নি আমাদের বর্তমান বিরোধী দলগুলোও।আন্তর্জাতিক মহলেরও কম চাপ ছিলো না।যাক সে কথা একটু মনে করিয়ে দিলাম আর কি।

এবার মূল কথায় আসি, সেই সময়কার মানবতাবাদীদের চোখ কি এখন অন্ধ নাকি তারা ডুবে গেছে?

চট্টগ্রাম,সিলেট এই দুই বিভাগে গত দুইদিনে অঝোরে বৃষ্টি হয়েছে আর যার ফলে ডুবে গিয়েছে চট্টগ্রাম,সিলেটের অনেক অনেক অঞ্চল আর তাতে প্রাণ হারিয়েছে সহস্রাধিক।

আজ তিনদিন হতে চললো কিন্তু সে বিষয় নিয়ে মানবতাবাদীদের কোনই মাথা ব্যাথা নেই।তারা সেদিকে দেখছেই না।তাহলে কি চট্টগ্রাম/সিলেটে মুসলমান নেই? নাকি এখানে মানুষ থাকে না? কোনটা?

খুব তো দেখেছি রোহিঙ্গাদের সময় মুসলমান ভাই-বোনদের বাঁচানোর জন্য আস্ফালন তবে এখন কোথায় আপনাদের সেই ধর্মবোধ? নাকি হাই-কমান্ড থেকে আদেশ আসেনি তাই আস্ফালন নেই, কোনটা?

বাংলাদেশের মূল আয়ের কতভাগ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আয় হয় তা কি জানেন? সিংহভাগ সরকারী আয় কোথা থেকে আসে?যেখান থেকে দেশ চলার এতো টাকা আসে আজ সেখানের দুরবস্থায় কোথায় আপনাদের মানবতাবোধ?

বাংলাদেশের কতভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় লন্ডনী প্রবাসীদের থেকে? আর লন্ডনীদের সিংহভাগ কোন অঞ্চলের মানুষ।

চট্টগ্রাম আর সিলেট এই দুই অঞ্চল মিলিয়ে কতো টাকা দেশের আয়ে যোগ হয় সেই হিসাবটা করে দেখবেন কেউ?

এই যে এতো সুন্দর পিছ ঢালাই রাস্তা, সেতু, হাসপাতাল,রেল ইত্যাদি ভোগ করেন কতো টাকা সারাদেশ থেকে আসে আর এই দুই বিভাগের আয় থেকে আসে সেই হিসাবটা কেউ করবেন?
কতজন রোহিঙ্গা মরেছে? দাঙ্গার কারনে আর কতজন লোক মরেছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে?সেই হিসাব তো কাউকে করতে দেখিনি কোথাও(চট্টগ্রামে ২১ জন, কক্সবাজারে ৩৭ জন এবং বান্দরবানে ৩৩ জন)। শুধু দেখেছি ৭ তলার উপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার করতে।


রোহিঙ্গাদের জন্য আপনাদের ত্রাণ-ভান্ডার তৈরী ছিলো তো সেই ত্রাণের ভান্ডার এখন কোথায়?

নাকি চট্টগ্রামের লোকেরা আপনাদের জঙ্গিবাদসহ অন্যান্য কাজে আসবেনা দেখেই ত্রাণের ভাণ্ডার হারিয়ে গেছে?

চট্টগ্রাম ও সিলেট দুই বিভাগে কতজন পীর-আউলিয়ার অবস্থান আর সারা দেশে কতজনের অবস্থান?নাকি এখানে নাস্তিক/কাফেরদের ছড়াছড়ি দেখে আপনাদের মানবতা গুটিয়ে গেছে কোনটা?
আপনাদের চট্টগ্রাম/সিলেটের সব মানুষদের খুঁজে খুঁজে ত্রাণ বিলাতে হবে না,শুধু ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল/গ্রামের দিকে তাকান।সেখানে এগিয়ে যান প্রমান করুন আপনারা মৌসুমী মানবতাবাদী নন।
রোহিঙ্গাদের জন্য যদি সরকারের নজর কাড়তে/বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারেন তাহলে এখন কোথায় সেই আওয়াজ শুনতে পাই না কেনো? কোথায় সেই মিছিল?

এখানে কি মানবেতর জীবন-যাপন করছে না কেউ? ঘর-বাড়িহীন হয়ে নেই কেউ?

ধিক ধিক ধিক আপনাদের সেই সকল মানবতাবোধে।