পর্যটন নগরী চায়ের দেশ ও করণীয় পদক্ষেপ (পর্ব-১)

সুমন দে
Published : 10 Sept 2017, 02:55 AM
Updated : 10 Sept 2017, 02:55 AM

.

পাহাড়, অরণ্য, হাওর আর সবুজ চা বাগান বেষ্টিত পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সোন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। রয়েছে শহরের সব স্থাপনার মাঝেই নান্দনিকতার ছাপ। সবুজের চাদরে মোড়ানো চা বাগান পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।

বাংলাদেশে মোট ৭টি ভ্যালী রয়েছে এর মধ্যে সিলেট বিভাগে রয়েছে ৬টি। এই ভ্যালীতে মোট চা বাগানের সংখ্যা ১৩৮টি। শুধু শ্রীমঙ্গলে রয়েছে ৩৮টি চা বাগান। এ জন্য শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানীও বলা হয়। দু'টি পাতা একটি কুঁড়ি দেশ হিসেবেও শ্রীমঙ্গলের রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। ৪২৫ দশমিক ১৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই জনপদের সঙ্গে সারা দেশের রেল ও সড়কপথে রয়েছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা।

.

১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়ায় যাত্রা শুরু হয় প্রথম চা বাগানের। পর্যায়ক্রমে বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন জেলা-থানায় ছড়িয়ে পড়ে চা চাষ। সিলেটের সীমানা পেরিয়ে চায়ের আওতায় চলে আসে চট্টগ্রামেরও কিছু এলাকা। বর্তমানে সীমিত পরিসরে হলেও উত্তর বঙ্গের পঞ্চগড়েও চা চাষের চল শুরু হয়েছে। এই চায়ের রাজধানীতেই ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান চা গবেষণা প্রতিষ্ঠান (পিটিআরএস)। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উন্নত গবেষণার প্রয়োজনে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয় পিটিআরএসকে। নাম রাখা হয় বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এটি অবস্থিত শ্রীমঙ্গলে।

.

দেশি এবং বিদেশী পর্যটকের বিশেষ আকর্ষণীয় স্থান শ্রীমঙ্গল। চা-বাগানের বাইরে রয়েছে আনারস বাগান, বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে- ১) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। ২) মৌলভীবাজার ফরেস্ট রেঞ্জের আওতাধীন শ্রীমঙ্গলেরই ন্যাশনাল পার্ক। ৩) শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওড়ের পূর্ব দিকের প্রায় ১০০ হেক্টর আয়তনের একটি জলাভূমির নাম বাইক্কা বিল। ৫) লাউয়াছড়া উদ্যান। ৬) রাশি রাশি আনারস বাগান। ৭) শিতেস বাবুর চিড়িয়াখানা। ৮) হামহাম ঝর্ণা সহ ৯) লেবু বাগান ১০) সাত রঙের চা ১১) বৈদ্যভূমী। শ্রীমঙ্গলের লেবুই সিলেট বিভাগের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, গেস্ট হাউস, রেস্তোরা, ট্যুরিজম ব্যবসা, ট্রেভেল ব্যবসা। বিদেশী পর্যটকের থাকার এবং খাবারের সু-ব্যবস্থা থাকলেও নেই বিদেশীদের মানি-এক্সচেঞ্জ এর কোন প্রতিষ্ঠান। মানিএক্সচেঞ্জ করতে হলে হয় মৌলভীবাজার অথবা ঢাকা অথবা সিলেটে যেতে হয়। বৈদেশীক মুদ্রা পরিবর্তনের সুবিদা বঞ্চিত হচ্ছে বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা। বিদেশীদের জন্য আলাদা করে গড়ে ওঠেনি বার/পাপ ইত্যাদি। যে কারণে ভারতীয় মাদক বাজার দখল করে আছে চড়া দামে! দেশিয় কেরু কোম্পানির লিকার শপ থাকলেও এগুলো সর্বরাহ করতে হয়  ট্যুরিজম ব্যবসা, ট্রেভেল ব্যবসার সংশ্লিষ্ঠ নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিদের; আর সেখানেই হয় পুলিশি ঝামেলা। বিদেশীদের জন্য পর্যটন কেন্দ্র চট্টগ্রামের কক্সবাজারে থাকলেও সে সকল সুবিধা বঞ্চিত শ্রীমঙ্গলের পর্যটক নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহ।

চলবে—