করোনাভাইরাস নিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার তার সীমিত সামর্থ্য ও সম্পদ নিয়েই লড়ে যাচ্ছে। যতোটুকু কাজ হয়েছে, সময় এসেছে সেই পুরো কাজটি গুছিয়ে, আরও সমন্বিত করার। কেননা সামনের কয়েক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন চিকিৎিসক হিসেবে পুরো সমন্বয়ের কাজটি করার ব্যাপারে আমার নিজস্ব কিছু প্রস্তাব রয়েছে। এ প্রস্তাবগুলো প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশকে এখনো করোনাভাইরাস সংক্রমণের মহামারীর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন, যার ফলে এখনো বাংলাদেশকে সংক্রমণের ৪র্থ ধাপের মারাত্নক ঝুঁকি থেকে বের করে আনার একটা শেষ সুযোগ আছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সমন্বয়হীনতার জন্য সব উদ্যোগ ব্যর্থ হতে চলেছে এবং দেশ মারাত্নক ঝুঁকির মধ্যে পরে গেছে। আমরা যদি সংক্রমণের চতুর্থ ধাপের মারাত্নক ঝুকি থেকে বাচতে চাই তাহলে নিচের ১ নম্বর থেকে ৮ নম্বর পর্যন্ত প্রস্তাবনাগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারলে এবং অন্য প্রস্তাবনাগুলি জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশকে কিছু দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে মুক্ত করতে পারা যাবে বলেই আমার বিশ্বাস।
কথা না বাড়িয়ে সরাসরি প্রস্তাবগুলোও চলে যাচ্ছি-
১. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় দূর্যোগ সংক্রান্ত কাউন্সিল জরুরী ভিত্তিতে গঠন। এর যৌক্তিকতা হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে অন্য মন্ত্রণালয়গুলো এখনো পুরোপুরি সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারছে না।
২. ঢাকার যে সব এলাকা এবং দেশের যেসব বিভাগ, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে তাদের পরিবার এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সকল ব্যক্তি এবং সংক্রমিত সকল এলাকার ওয়ার্ড/গ্রাম/মহল্লাভিত্তিক সন্দেহজনক সকল পরিবারকে আগামী পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ জনবল নিয়োগ করে করোনা টেস্ট করতে হবে এবং যাদের টেস্ট পজিটিভ হবে তাদেরকে দ্রুত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে এবং সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিতে হবে। এর যৌক্তিকতা হলো- আমাদের দেশের জনগণ নিজ বাড়িতে আইসোলেশন/ কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারে ততোটা সচেতন নয়, বরং প্রতিবেশী ও পরিবারের অন্যদের আক্রান্ত করে ফেলে।
প্রথম ধাপে শুধু মাত্র সংক্রমিত জেলা/ এলাকাগুলো করোনাভাইরাস টেস্টের আওতায় আনতে হবে, সে জন্য সংক্রমিত ৫২ টি জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতালে করোনা টেস্টের সেন্টার করতে হবে অথবা বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত সেন্টারগুলির মাধ্যমে পরীক্ষা করা এবং মেডিকেল কলেজ, সদর ও উপজেলা হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট ও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচপিদের মাধ্যমে সংক্রমিত এলাকার ঘরে ঘরে গিয়ে দ্রুত স্যাম্পল সংগ্রহ করা যাবে।
৩. বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে যাদের ন্যূনতম উপসর্গ আছে এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গ যারা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, সর্বোচ্চ জনবল নিয়োগ করে তাদের সবার আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা টেস্ট করতে হবে এবং রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তাদের সবাইকে আইসোলেশন/ কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার মত পিপিই ছাড়া করোনাভাইরাস টেস্ট বুথ বানিয়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করা যায় অথবা মেডিকেল কলেজ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট ও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচপিদের মাধ্যমে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে হবে, এতে সমগ্র দেশের যে কোন স্থানে দ্রুত সময়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করা যাবে। যাদের স্যাম্পল সংগ্রহের অভিজ্ঞতা নেই তাদেরকে দ্রুত অনলাইন /ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
৪. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এলাকা এবং জেলায় সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হলেও জনগণের অসচেতনতার জন্য অনেকেই লকডাউন সঠিকভাবে মানছে না, লকডাউন শতভাগ কার্যকরী করতে হলে এখনই কারফিউ অথবা জরুরি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ঘরে থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একটু কষ্ট করে সবাইকে ৭ থেকে ১০ দিন ঘরে রাখতে পারলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দুইটি টিম গঠন করে একটি টিমকে শুধু প্রতিরোধকমূলক কাজে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অন্য টিমকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার কাজে হাসপাতালগুলোতে দক্ষ জনবলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন নিতে হবে।
৫. যাদের সক্ষমতা আছে শুধু তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে এবং সকল গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ঘরে ঘরে বিনামূল্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি,পুলিশ, র্যাব,আনসার, জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। তাহলে খাবারের জন্য অথবা অন্য কোনো অজুহাতে ঘর থেকে কেউ বের হবে না এবং না খেয়ে কেউ কষ্ট পাবে না। ঘরে খাবার না থাকলে শত চেষ্টা করলেও মানুষ ক্ষুধার জ্বালায় ঘর থেকে বের হবে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান,ভিয়েতনাম, ভারতের কেরালা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সফল হয়েছে।
৬. বাংলাদেশে প্রচুর সংখ্যক এক্সপ্রেস ট্রেন, স্টিমার, উন্নত মানের হোটেল, আশুলিয়ার ইজতেমা মাঠ, স্টেডিয়াম, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বেড বর্তমানে অব্যবহৃত আছে। ট্রেনের বগি, স্টিমারের কেবিন, হোটেলের কেবিন, ইজতেমা মাঠ, ঢাকা সহ যেসব জেলায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে সেসব জেলার স্টেডিয়াম, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের (নির্দিষ্ট সংখ্যক বেডগুলি) অস্থায়ী করোনাভাইরাস হাসপাতাল অথবা আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টার করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ধরনের সেন্টারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগী রাখলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রন করা যাবে। বাসায় রেখে আইসোলেশন/কোয়ারেন্টিন শতভাগ কার্যকর করা সম্ভব না, কারণ সকলের বাসায় পৃথক একাধিক টয়লেট ও পর্যাপ্ত রুম নাই।
৭. দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন রাস্তায় জীবানু নাশক স্প্রে করতে হবে। বিশেষ করে যেসকল বিভাগ ও জেলা সংক্রমিত। সব যানবাহন বাইরে থেকে এসে বাসায়/অফিসে প্রবেশের পূর্বেই গেটের বাইরে চাকাসহ বডি জীবাণু নাশক দিয়ে স্প্রে করতে হবে এবং ঘরের বাইরে যারা যাবেন সবাই বাসার মেইন গেটের বাহিরে জুতা/ স্যান্ডেল স্প্রে করে জুতা ঘরের বাইরে রাখতে হবে। যানবাহনের চাকা ও জুতার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ফ্ল্যাট/ বাসায় সংক্রমিত করে।
৮. পয়লা মার্চ ২০২০ তারিখ থেকে যতজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে বিমানবন্দর, স্থল বন্দর, নৌ বন্দর, সমুদ্র বন্দর, রেলপথ দিয়ে প্রবেশ করেছে তাদের সকলের এবং তাদের পরিবারের করোনাভাইরাস টেস্ট করতে হবে (যাদের টেস্ট করা হয়েছে তারা ব্যতীত) অথবা বিদেশ ফেরত সবার ঘরে ঘরে গিয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যাদের করোনাভাইরাস টেস্ট পজিটিভ হবে তাদের সকলকে দ্রুত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নিতে হবে এবং করোনাভাইরাস রোগীর সংস্পর্শে যারা ছিল তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিতে হবে। এর যৌক্তিকতা হলো শুধু শরীরের তাপমাত্রা মেপে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যায় না। বিমানবন্দরসহ সব বন্দরে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রার মাধ্যমে স্ক্রিনিং করা হয়েছিল। তাদের সকলের স্যাম্পল সংগ্রহ করার প্রয়োজন ছিল।
এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, এপ্রিলের ২১ তারিখ পর্যন্ত ৩৩৮২ জন আক্রান্ত ব্যক্তি, তাদের পরিবার ও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সব ব্যক্তির টেস্ট করে দ্রুত পজিটিভ ব্যক্তিদের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন /প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া, বিদেশফেরত ব্যক্তি ও পরিবারের দ্রুত পরীক্ষা করা, বাসা থেকে কাউকে বের হতে না দেয়া, কঠোর ভাবে লকডাউন শতভাগ কার্যকর করা, সক্ষম ব্যক্তিদের অর্থের বিনিময়ে ও অক্ষমদের বিনামূল্যে সকলের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়াই এখন মূল কাজ।
(এই পর্যন্ত ধাপগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে উদ্যোগ নিয়ে করতে হবে। নিচের প্রস্তাবগুলো তার পরে যতো দ্রুত সম্ভব পূরণ করলে ভালো।)
৯. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্দেশিত ৩১ দফা কঠোরভাবে পালনের ব্যবস্থা করা।
১০. এ গ্রেডের অথবা সক্ষম সকল বেসরকারি হাসপাতালকে দ্রুত করোনাভাইরাস টেস্ট করার ও চিকিৎসা করার অনুমতি দেওয়া এবং টেস্ট ফি সরকার কর্তৃক নির্ধারণ অথবা বিনিমূল্যকরণের ঘোষণা। তাহলে করোনাভাইরাসের রোগী দ্রুত শনাক্ত হবে এবং করোনাভাইরাসের ভয়ে অন্য রোগীদের যে সেবা বন্ধ ছিল সেটা দ্রুত চালু হবে
১১. প্রতিটি এ গ্রেডের/সক্ষমতা সম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ন্যূনতম ২০টি আইসিইউ বেড করোনাভাইরাসের রোগীর জন্য প্রস্তুত করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১২. বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার, আকিজ গ্রুপের স্থাপনা, বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারকে ৫০০০ (পাঁচ হাজার) শয্যার অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তর করতে হবে, এই অস্থায়ী হাসপাতালে ন্যূনতম ১০০০ (এক হাজার) আইসিইউ বেড প্রস্তুত করতে হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২০- ৩০ শতাংশ রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগে, আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া গেলে বেশিরভাগ রোগীকে বাঁচানো যাবে।
১৩. সরকারের পক্ষ থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম ২০০০ ( দুই হাজার) বেডের আইসিইউ প্রস্তুত করতে হবে।
১৪. সমগ্র বাংলাদেশ লকডাউন করা, বিশেষ করে যে সকল জেলাতে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে সেসব জেলা, যে সকল জেলা এখনো সংক্রমিত হয় নাই সে সকল জেলাতে বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে না দেয়া এবং অন্য জেলায় যেতে না দেয়া। (যৌক্তিকতাঃ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম লকডাউন করে সফল হয়েছে।
১৫. সকল উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস রোগীর পৃথক বিভাগ খুলে চিকিৎসা প্রদান এবং করোনাভাইরাস রোগীদের হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য পৃথক রাস্তা প্রণয়ন ও প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা। যৌক্তিকতা হলো করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সঠিক সময় অক্সিজেন দিতে পারলে জীবন বাঁচানো সম্ভব।
১৬. প্রতিটি নাগরিককে বাসায় অবস্থান করার বিষয়ে বাধ্য করা; শুধু ওষুধ, চিকিৎসা ও খাদ্য সংগ্রহ ছাড়া বাইরে বের হতে না দেয়া।
১৭. চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, নেপাল, ভারতের কেরেলা যে ভাবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করেছে আমরা তাদেরকে অনুসরণকরতে পারি এবং এ সকল দেশের বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারি।
১৮. সরকারি ও বেসরকারি সকল চিকিৎসকের সমন্বয়ে টেলিমেডিসিন ও অনলাইন চিকিৎসা সেবা চালু করলে হাসপাতালের উপর চাপ কমবে এবং রোগীরা আতংক থেকে মুক্তি পাবে।
১৯. পিপিই-সহ সুরক্ষা সামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে সংগ্রহে রাখতে হবে। নাহলে আমেরিকা ও ইতালির মত চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটে পড়তে হবে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দেওয়া, কিছু চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের ভবিষ্যতের জন্য রিজার্ভ রাখা।
২০. অত্যাবশকীয় সেবাদানকারী অফিস ছাড়া সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, কারখানা করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না আসা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।
২১. ওষুধ, খাদ্য, কাঁচা বাজার, ফল ও মাছ মাংস ক্রয়ের সময় কেউ বাইরে গেলে এবং বাসায় ফিরে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করবে এবং এসব পণ্য বাসায় এনে কীভাবে জীবাণুমুক্ত করবে সেটার জন্য একটা গাইড লাইন প্রণয়ন করে সকল জনগণের জন্য প্রচার করতে হবে। ( টাকা, পোশাক, প্যাকেট, ব্যাগ থেকেও ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।
২২. বাংলাদেশে একজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী, বেশ কয়েক জন নবীন বিজ্ঞানী এবং ভারতের একজন চিকিৎসক মিনিভেন্টিলেটর তৈরি করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। এসব ব্যক্তিদের ভেন্টিলেটর কতোটা কাজের তা যাচাই করে স্বল্পমূল্যে মিনি ভেন্টিলেটরগুলি সংগ্রহ করা যায় এবং বাংলাদেশের মেডিকেল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এগুলো দ্রুতসময়ে প্রস্তুত করে নেওয়া যায়।
২৩. চীন যেহেতু করোনাভাইরাস ভালভাবে প্রতিরোধ করেছে সেহেতু চীন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে উন্নত চিকিৎসা প্রদান ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
২৪. শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে এবং আক্রান্তের সম্ভবনাও কম। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং করোনারভাইরাসের প্রতিরোধক হিসেবে প্রতিটি মানুষকে আদা,দারচিনি,লবঙ্গ, যষ্টিমধু, কালিজিরা, হলুদ, ত্রিফলা ও তুলসিপাতা জ্বাল দিয়ে চায়ের মতো সেবন, প্রতি বেলায় কুসুম গরম পানি সেবন ও গার্গেল করা এবং ভিটামিন সি অথবা ভিটামিন সি যুক্ত ফল দিনে দুই বার খাবার উপদেশ দিতে হবে। এ সব উপাদান জেলা প্রশাসক, ইউএনও, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধির মাধ্যমে সব ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।