অধ্যাপক জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত মানে দেশের মস্তিষ্কে ছুরিকাঘাত

সৈয়দ আনোয়ারুল হক
Published : 3 March 2018, 09:20 PM
Updated : 3 March 2018, 09:20 PM

আজ অত্যন্ত ভারাক্রান্ত ও যন্ত্রণাকাতর মন নিয়ে লিখতে বসেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, অধ্যাপক জাফর ইকবালের মত মানুষের মাথায় ছুরিকাঘাত! এমন একজন সরলমনা জ্ঞানী মানুষকে মাথায় ছুরি মারতে পারে যে দেশে, সে দেশে বসবাস করা কী সম্ভব? এ কিসের আলামত? বাংলাদেশের একজন বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী অধ্যাপক জাফর ইকবাল। এ দেশকে বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এসব ব্যক্তিই পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। বিপরীতে এদেশে অন্ধকার জগতের এক গোষ্ঠী আছে, যারা উন্নতি ও অগ্রগতির উল্টোচিত্র ধারণ করে। তারা বার বার এ ধরণের আলোকিত ব্যক্তিদের উপর হামলা করে। অতীতে এদের হামলায় বাংলাদেশে অনেক জ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীর প্রাণ বিয়োগ ঘটেছে।

[বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ঢাকায় ২০১৭ সালের আগস্টের ১০ তারিখ একটি অনুষ্ঠানে শিশুদের সাথে অধ্যাপক জাফর ইকবাল। ছবি: সৈয়দ আনোয়ারুল হক]

যারা এদেশের জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-সংস্কৃতি, প্রজ্ঞা ও মেধার ধারক বাহক তাদের উপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চলে। এসবের কয়েকটি কারণ আছে। ওদের উদ্দেশ্য জাতিকে মেধাশূন্য করতে পারলেই দেশে অজ্ঞতার অন্ধকার ছড়িয়ে দিতে পারবে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করলে দেশে একটা আতংক সৃষ্টি হবে এবং বাকী যারা আছে তারা ভয়ে ভয়ে থাকবে। ক্রমান্বয়ে দেশ মেধাশূন্য হতে থকবে এবং জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাহস হ্রাস পেতে থাকবে। যে সকল মেধাবী দেশের বাহিরে আছে তারা দেশে আসতে সাহস পাবে না। যে সকল মেধাবী দেশের মধ্যে আছে বা ভবিষ্যতে তৈরি হবে তারা দেশ ছেড়ে চলে যাবে।

এ রকম আরো কারণ থাকতে পারে। পরিশেষে তাহলে কী দাঁড়াল? এটাই প্রমাণ হয় যে, এরা সফল হতে পারলে এদেশে অসুরের রাজত্ব চলবে। তাহলে আমাদের মত সাধারণ শিক্ষিত মানুষ, সাধারণ জনগণ এবং যারা দেশের জ্ঞানী-বুদ্ধিজীবী শ্রেণির মানুষ অর্থাৎ সচেতন মানুষ কী করবো?

পথ একটাই- সকলেই একসাথে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করা এসব অপকর্মের। তাহলে আমরা জাতি হিসেবে বাঁচার পথ খুঁজে পাবো।