গ্রাম্য মেলা ও দুবলিয়ার অর্থনৈতিক মুক্তি

তানজির খান
Published : 24 Oct 2015, 05:44 AM
Updated : 24 Oct 2015, 05:44 AM

আমাদের ভালবাসার দুবলিয়া ছায়া-সুনিবিড়, মাটির পরতে পরতে যেখানে ভালবাসা জমে আছে। দুবলিয়ার কথা মনে হলেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত গানের কথা মনে পড়ে যায়।

ধন ধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা,
ওসে স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি,
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।

এক সময় যে জনপদ ছিল অবহেলিত, অর্থনৈতিকভাবে যা ছিল পঙ্গু তা আজ সারাদেশের জন্য আদর্শ একটি গ্রাম হয়ে উঠেছে। অন্ধকার একটি সমাজ কিভাবে বদলে যেতে পারে তার সবচেয়ে ভাল উদাহরন হতে পারে দুবলিয়া।অস্থির গ্রাম্য-রাজনীতি এক সময় জেঁকে বসেছিল যে জনপদে, তা আজ মুক্ত।যা সম্ভব হয়েছে শুধু মাত্র অর্থনৈতিক মুক্তি আর শিক্ষার প্রসারের ফলে। শিক্ষা প্রসারে অনন্য অবদান রেখে যারা আজকের এই আধুনিক দুবলিয়া্র স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন, রেখেছেন কার্যকারী ভূমিকা, তাদের মাধ্যে অন্যতম মরহুম নওশের আলী মন্ডল,বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম লুৎফর রহমান খান এবং মাহাতাব উদ্দীন বিশ্বাস।আর দুবলিয়ার অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে সহায়ক নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য মেলা। যা সারাদেশে দুবলিয়ার ব্যবসা, বাণিজ্যের জন্য বিশাল বাজার তৈরী করেছে।বিশেষ করে সারাদেশ থেকে আসা ব্যবসায়ীদের মাঝে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক (যোগাযোগ) তৈরীতে এই মেলা প্রধান নিয়ামক হিসাবে কাজ করে।যার সুফল পেয়েছে দুবলিয়ার স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। দুবলিয়ায় আসবারপত্র ব্যবসাকে ঘিরে গড়ে উঠছে বিশাল এক শীল্প। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পেয়েছে পণ্য বিক্রয়ের জন্য সারাদেশময় বাজার। দেশের বিভিন অঞ্চল থেকে আসছে কাজের ফরমায়েশ। খুব সহজেই বলা যায় এই মেলা একটি গ্রামীণ জনপদকে করেছে আধুনিক ও অর্থনৈতিক ভাবে মুক্ত।যা মানুষে মানুষে বিভেদ ভুলিয়ে দিয়েছে। এই মেলার সামাজিক মূল্যও অনেক।নৌকা বাইচ ঘিরে যে মেলার প্রচলন হয়েছিল তা কালের পরিক্রমায় দূর্গা পূজার দশমীর ঠিক পরের দিন শুরু হয়। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখে চলেছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা,ভালবাসা,সমর্মিতা ও সহনশীল সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠার পেছনে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক মুক্তি প্রধান ভূমিকা রেখেছে।

ছবি পাঠিয়েছেন ফটোগ্রাফার সারফুল আলম খান টুটুল।

তানজির খান
কবি, ব্লগার ও নাগরিক সাংবাদিক
mtanzirkhan@gmail.com