শান্তিতে নোবেল: একটি আন্তর্জাতিক অলংকার মাত্র

তানজির খান
Published : 19 Nov 2016, 05:05 PM
Updated : 19 Nov 2016, 05:05 PM

শান্তিতে নোবেল যে একটি আন্তর্জাতিক অলংকার মাত্র তা প্রফেসর ড. ইউনুস, অং সাং সুচি ও বারাক ওবামার কর্ম পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়। শ্রদ্ধেয় প্রফেসর সাহেব বাংলাদেশের কোনো ঘটনায় কোনো দিন শান্তির পক্ষে অবস্থান নেননি। পেট্রোল বোমায় মানুষ মরলো, নাসিরনগরে এত বড় হামলা লুট হলো, গাইবান্ধায় সাঁওতালরা ঘর ছাড়া হলো কোথাও তার কোনো অবস্থান নেই।আগুনে পোড়া চামড়ার গন্ধ প্রফেসর ইউনুসের ঘুম ভাঙাতে পারেনি, নাসিরনগরের কান্না উনার কানে যায় নাই, মহিমাগঞ্জের আর্তনাদ তিনি অনুভব করতে পারেন নাই!

বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন যারা প্রায় সব সময় বলেন প্রফেসর ড. ইউনুস কে ছোট করবেন না কারন উনিই একমাত্র বাংলাদেশি যিনি নোবেল পেয়েছেন! উনি আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন বহির্বিশ্বে! একজন সেলেব্রিটি তরুণ পলিটিশিয়ান যার বাবার বিরুদ্ধে চিনি চুরির অভিযোগ রয়েছে উনি সংসদে দাঁড়িয়ে প্রফেসর ড. ইউনূসের সাফাই গাইতে গিয়ে বলেছিলেন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ফোন আসে সেটি জয়নাল আবেদীনের (বিএনপি নেতা) আর প্রফেসর ড. ইউনূসের কাছে আসে হিলারি ক্লিনটনের ফোন! মানুষ কত বড় সেটি পরিমাপের জন্য এটি কোন ধরনের নিক্তি আমার জানা নেই। আমি নিজেও ব্যক্তিগত আক্রমণের বিরুদ্ধে কিন্তু ব্যক্তির কর্মের সমালোচনা করার পক্ষে। আপনি যখন নোবেল লরিয়েট তখন আপনার যে কোন কর্মের পর্যালোচনা করা আবশ্যক। সেই প্রেক্ষিতে আমাকে বলতেই হয় যথার্থ লোকের হাতে শান্তিতে নোবেল উঠেছে কিনা তা ভাববার বিষয়। আমার এই সমালোচনা আপনার কাছে পৌঁছবে না জানি। তবুও করলাম যদি কানে যায়, যদি আপনি নোবেল প্রাপ্তির যথার্তা প্রমাণ করতে এখনও সচেষ্ট হন তবে হয়তো দেশের উপকার হবে!

অং সাং সুচি কেও একইভাবে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। রোহিঙ্গাদের উপর বহুদিন ধরে নির্যাতন হচ্ছে অথচ তিনি তা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেননি বরং উনি এড়িয়ে গেছেন সমস্যাটি। এত মানুষের রক্ত বালিশে চাঁপা দিয়ে কিভাবে ঘুমান যখন তার দল ক্ষমতায়? এমন শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি কি মানবতায় কোনো অবদান রাখে?

বারাক ওবামার শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি প্রথমেই বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল। সেই বিস্ময় উনি বাকী জীবন বাঁচিয়ে রাখবেন তা বোঝা যায় বেশ! উনার ক্ষমতা কালীন সময়ে উনি শান্তির জন্য কি করেছেন তা উইকিলিকস আমাদের সামনে তুলে ধরেছে! মধ্যেপ্রাচ্য অস্থিতিশীল করে তুলেছেন, আই এস – এর মত সংগঠন জন্ম দিয়েছেন আমেরিকান অর্থে। প্রমাণ মিলেছে আই এসকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের।উনি গোটা বিশ্বে এক সুন্দর মকমলের চাঁদর বিছিয়েছেন যার তলে রক্তের বন্যা।

আমার খুব ইচ্ছে হয় নোবেল কমিটির কাছে জিজ্ঞেস করি শান্তি কোথায় স্থাপন করেছেন উনারা?

তানজির খান
কবি ও নাগরিক সাংবাদিক
www.facebook.com/tanzir.khan.3