রা.বি’র সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে অনাহুত পরিস্থিতি

অনার্য তাপস
Published : 4 April 2011, 02:53 PM
Updated : 4 April 2011, 02:53 PM

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে অনাহুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিভাগটির চেয়ারম্যান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মলয় কুমার ভৌমিকের পদত্যাগ না করাকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, মলয় কুমার ভৌমিকের সহকর্মী এবং বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা চাইছেন তিনি পদত্যাগ করুন। তারা তার বিরুদ্ধে লিখিত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনেছেন বলেও জানা যায়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, স্বেচ্ছাচারিতা এবং স্বজনপ্রীতি।

নাট্যজন হিসেবে পরিচিতি থাকার কারণে ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মলয় কুমার ভৌমিককে সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে প্রেশনে নিয়োগ প্রদান করে। প্রথমদিকে তেমন কোন সমস্যা দেখা না দিলেও ধীরে ধীরে বিভিন্ন কারণে ছাত্র এবং তার সহকর্মীদের বিরাগভাজন হতে থাকেন তিনি। এর প্রধান কারণ হিসেবে তার স্বেচ্ছাচারী মানসিকতা প্রধান ভূমিকা পালন করে বলে একাধিক শিক্ষক-ছাত্র জানিয়েছেন। বিভাগীয় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের সিদ্ধান্ত বিভাগের উপর চাপিয়ে দেয়া, তার নিজের নাট্যসংগঠন অনুশীলন নাট্যদলকে বিভাগীয় বিভিন্ন সুযোগসুবিধা প্রদান, ছাত্র-ছাত্রীদের অনুশীলন নাট্যদলে যোগদানের বিষয়ে প্রভাবিত করা, সহকর্মীদের বিভিন্ন কারণে হেয় প্রতিপন্ন করা, নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠা বিভাগীয় তবলা ইনস্ট্রাক্টর অমিতাভ চ্যাটার্জীকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করা, অমিতাভের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছাত্রদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা, পূর্বের নিয়ম/প্রথা না মেনে নতুন নিয়মে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করাসহ বিভিন্ন কারণে মলয় কুমার ভৌমিক তার সহকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের বিরাগভাজন হন।

সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, তিনি নাট্যকলা বিভাগের নিয়ম নীতির তেমন একটা তোয়াক্কা করতেন না। একাডেমিক কমিটিতে যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবার কথা সেগুলোর সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই গ্রহণ করতেন। নিয়ম রক্ষার জন্য মিটিং ডেকে তিনি সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানাতেন। এছাড়া বিভাগ থেকে পাশ করে যেসব ছাত্র বর্তমানে বিভাগেরই শিক্ষক হয়েছেন তাদের সাথেও তার তেমন কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, আমরা তো লেখাপড়া করেই শিক্ষক হয়েছি। কিছু না কিছু তো শিখেছিই। আমাদের এভাবে অপমান করার মানে কী।

বিভাগীয় শিক্ষক এবং ছাত্ররা ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন রা.বি'র ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে। ভাইস চ্যান্সেলর একটি সম্মানজনক পরিণতির আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত তার তেমন কোন আভাস পাওয়া যায়নি। এদিকে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের ছাত্র এবং শিক্ষকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে আজ।