অবিশ্বাস আর আত্মঅহমিকায় পুড়ছেন আমাদের নেতৃবৃন্দ

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 17 June 2012, 09:52 AM
Updated : 17 June 2012, 09:52 AM

আমাদের দেশে অনেক রাজনৈতিক নেতাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। যারা প্রায় সকলেই আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল। একটু লক্ষ করে দেখবেন এদের কেউই তেমন একটা বিতর্কিত নন। অন্যভাবে বলা যায় যারা বিতর্কিত তারা কেউই সহজে দল ছাড়ছেন না। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই এই পদত্যাগী নেতাদের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহও বেশি। তাদের পদত্যাগের পেছনে রয়েছে নানা কারন। যার অন্যতম প্রধান কারন, হল জ্বি হুজুর সংস্কৃতি কাহাতক সওয়া যায়। মেরুদণ্ড বলতেও তো একটা বস্তু আছে। তাদের যে-ই যখন পদত্যাগ করেছেন প্রতিবারেই জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। কখনো কখনো আশারও সঞ্চার হয়েছে।

প্রথমতঃ এবার বুঝি দলীয় প্রধান তার ভূল বুঝতে পারবেন।
দ্বিতীয়তঃ পদত্যাগী নেতা এবার কিছু একটা করে ফেলবেন।

কিন্ত বিধি বাম, দলীয় প্রধান যেমন; তার ভূল তো বুঝতে পারেনই না। বরং ঠোঁট উল্টে বলেন জানি কার কত মুরোদ, কিচ্ছুটি করতে পারবেন না। ঠিক তেমনি তার কথাকে সত্য প্রমাণিত করার জন্যই বুঝি পদত্যাগী নেতারাও এক একটি নতুন দল গঠন করেন। এবং নিজেরাই তার একক এবং একমাত্র অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন। ততদিনে মোহভঙ্গ হয় সাধারন মানুষেরও। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি সর্বস্ব দলে পরিনত হচ্ছে এই দলগুলো। তারা না পারছেন নিজেদের দলকে সুসংগঠিত করতে, না পারছেন দেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে দলকে জনমানুষের কাছে নিয়ে যেতে। বা দেশের জন্য কিছু করতে। ফলে কোন এক সময় পূনরায় কোন না কোন দলের ছত্রছায়ায় থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।

কার লাভ হল? দেশের বৃহৎ দুই দল তাদের নিয়ে কেউ জোট গঠন করছেন কেউ মহাজোট গঠন করছেন। আর সাধারন জনগন দেশের বৃহৎ দুই দলের কোন বিকল্প পাচ্ছে না। এবং দুই দলও বেশ বুঝতে পারছে তাদের কোন বিকল্প এ দেশে নেই আর হবেও না। ফলে স্বেচ্ছাচারিতার চরমে পৌঁছালেও তাদেরকেই নমশ্যঃ করা ছারা কোন উপায় নেই।

কেন এই দলছুটরা একা চলতে পছন্দ করেন। সেটা একমাত্র আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। বোধকরি তারা নিজেরাও জানেন না। ধরে নিলাম এটা শুধুমাত্র পদ পদবীর জন্য? যদি তাই হয় তাহলে বলব এই পদ পদবী তাদের কি দিল? দল আছে জনসমর্থন নেই। সে দল থেকে কি লাভ? আর তার প্রধান হয়েই বা কি লাভ? অথচ তারা চাইলেই পারেন এক ছাতার নিচে সমবেত হতে। গনতান্ত্রিক পন্থায় নিজেদের নেতা নির্বাচন করতে। যখন সাধারন মানুষ দেখবে প্রায় সর্বজন শ্রদ্ধেয়, ক্লিন ইমেজের রাজনৈ্তিক নেতারা এক হয়েছেন। তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় দলের নেতা নির্বাচন করছেন। সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে তাদের সহযোদ্ধা বানাচ্ছেন। তখন তারা নতুন আশায় উজ্জীবিত হতে পারত। এই নতুন ধারার রাজনৈতিক দল পেত সর্বমহলের অকুণ্ঠ সমর্থন। হয়ত পরিবর্তিত হতে পারত এ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির। সেই সাথে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে সৃষ্টি হত একটি নতুন ধারা। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের নেতারা এ পথে হাঁটেন না। এটা কি এইজন্য যে কেউ কার অনুগত হতে চান না। না সবাই নিজেদেরকে মনে করেন তিনিই সবার সেরা? তাহলে আর মুখে মুখে এত গণতন্ত্রের ফেনা তোলা কেন? এ দেশের সাধারন মানুষের কাছে পরিবর্তন আজ পরম আরাধ্য। সমস্যা হল পরিবর্তনটা আসবে কার হাত ধরে। কে হবেন নেতৃত্বের পুরোধা। অবিশ্বাস আর আত্মঅহমিকায় পূড়ছেন আমাদের নেতৃবৃন্দ। তারা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে। আমরা প্রজারা বলেই সারা জানি লাভ হবে না কোন। তবু বলব, বলতেই থাকব। যদি তারা একবার শুনতে পান। একবার বুঝতে পারেন গণমানুষের ভাষা। এই প্রত্যাশায়………………………।