লুই কান বা ঢাকার সৌন্দর্য কিংবা অর্থ এর কোনটাই বিবেচনায় আনবেন না দয়া করে, ।দেখবেন তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্য যেন নিশ্চিত হয়।

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 4 Dec 2012, 10:39 AM
Updated : 4 Dec 2012, 10:39 AM

ন্যাম ভবনকে স্থানান্তর করে সংসদ ভবনের কোল ঘেঁষে করা হোক অথবা সংসদ ভবনকে স্থানান্তর করে ন্যাম ভবনে নেয়া হোক। না আমি প্রলাপ বকছি না। আপনারা যারা লুই কানের দোহাই দিয়ে আমাকে বিকারগ্রস্ত বলে সাব্যস্ত করছেন তারা চরম স্বার্থপরতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করছেন। তারা একবারও ভাবছেন না। আমাদের মহান সংসদের মহানুভব সদস্যরা কি অবর্ণনীয় কষ্ট স্বীকার করেই না ন্যাম ফ্লাট থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত পৌঁছান।

এ ছাড়া আপনি-আমি তথা আপামর অপদার্থরা নিত্য যে পথকে করি ধূলিমলিন। সেই একই পথে তাদের হেটে যেতে হলে সেটা তাদের জন্য নিশ্চয়ই সম্মানের নয়? তার উপরে সড়ক দুর্ঘটনার শীর্ষ একটি দেশের সাংসদ বলে কথা। যদিও সাধারণত এই সড়কে দুর্ঘটনার খবর কমই পাওয়া যায়। আর তা ছাড়া এই দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর বিশ হাজারের বেশি লোক নিহত হলেও আচরটি পর্যন্ত লাগে না এই মহানুভবের গায়ে। এ কত বড় সৌভাগ্য আমাদের, বলুন!

আপনারা কি চান তাদের গায়েও সড়ক দুর্ঘটনার আঁচ লাগুক?
লুই কানের নকশা বা ঢাকার সৌন্দর্য হানীর কথা ভেবে এই কলঙ্ক তিলক পরতে কি আপনারা আগ্রহী?
আগে নির্ধারণ করুন কোনটা বড়, দেশ না নেতা?
নেতাই যদি না থাকে এ দেশ চালাবেটা কে শুনি?
আপনার আমারই বা কি হবে?
তাদের দক্ষিণাতেই যে আমরা বেচে আছি। কেন ভুলে যান?

৪ ডিসেম্বর "প্রথম আলো"য় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় সংসদ সচিবালয়ের অনুরোধে ন্যাম ফ্ল্যাট থেকে সংসদ ভবনে যাতায়াতের জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পদচারী-সেতু (ফুট ওভার পাস) নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে"। সংসদের অভিভাবক অভিভাবকের মতই পদক্ষেপ নিয়েছেন সন্দেহ নেই।

আমরা তো আর হোসে মুজিকার দেশে বাস করিনা। আর আমাদের এমন কোন বোকা(!) নেতাও নেই। যিনি রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও থাকেন জীর্ণ খামারবাড়িতে। বেতনের ৯০ ভাগ দান করেন সামাজিক সেবা মূলক কার্যক্রমে। ৭৭ বছর বয়সী এই বোকা(!) লোকটি রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও নিয়মিত স্বামী-স্ত্রী মিলে নিজেদের খামারে কৃষিকাজ করেন। বলছিলাম মধ্যম আয়ের একটি দেশ হিসেবে পরিচিত লাতিন রাষ্ট্র উরুগুয়ের রাষ্ট্রপ্রধানের কথা। আমরা নিশ্চয়ই এমন কোন বোকা(!) রাজার প্রজা হতে চাইনা?

মাননীয় স্পিকারের কাছে অনুরোধ, নির্দয় হবেন না। লুই কান বা ঢাকার সৌন্দর্য কিংবা অর্থ এর কোনটাই বিবেচনায় আনবেন না দয়া করে। চেষ্টা করুন সাংসদদের কষ্ট কতটা লাঘব করা যায়। তারা বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। তাদের স্বাচ্ছন্দ্যেই আমরা বর্তে যাই। তাদের আনন্দেই পুলকিত আমরা। একজন নাগরিকের এই গুনগুলো না থাকলে কি চলে? আর তাইতো আগুনে পুড়ে অঙ্গার হতে হতেও আমরা গেয়ে উঠি "আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে"। যদি একান্তই স্থাপনা দুটি স্থানান্তর করা সম্ভব না হয়। তাহলে অন্তত ২০১০ সালের পর্যালোচনা অনুযায়ী সাংসদদের সুবিধার্থে ওভার পাসে চলন্ত সিঁড়ি(এসকালেটর)সংযোজনের ব্যবস্থা করুন। সুখী নাগরিকের সুখী দেশের নেতা বলে কথা। কোন রকম কষ্টটি যেন তাঁরা না পান। দয়া করে লক্ষ রাখবেন।

kmgmehadi@yahoo.com