বাংলাদেশ খেলতে গিয়েছিল জিততে বা হারতে নয়। নির্ভেজাল খেলা যাকে বলে। খেলছিলও নিজেদের মত করে। কোন মাঠে খেলা হবে বা কি ধরনের উইকেট চাই এমন কোন দেন দরবার করে নয়। নিজেদের সামর্থ্যে ভাল খেলাটা উপহার দিতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের কপাল খারাপ একটা শেয়াল টাইপের দলের সাথে তাদের খেলতে হল। সমস্যা সেটাও ছিল না। খেলতে নেমে দেখল আরে আয়োজক কমিটিও তো আরেক শেয়াল। জোচ্চুরি একটা সওয়া যায়। একের পর এক নয়। প্রথমে তারা মানসিক গেম খেলল। তাদের সেলিব্রেটিরা নানা রকম নেতিবাচক কথা বল্ল। আগেই ভয় পাইয়ে দিতে যা কিছু করার তাঁর সবই করল। তাতেও পরাস্ত করতে না পেরে আম্পায়ারদের মাধ্যমে উলঙ্গ জোচ্চুরি শুরু করল।
রোহিত শর্মার নিশ্চিত আউটটি না দেয়ায় ভারতীয় অধিনায়ক ভিভিএস লক্ষণ তার টুইটারে বলেন,'খারাপ সিদ্ধান্ত ইয়ান গোল্ড। এটা কোনভাবেই কোমরের উপরে ছিল না। এটি ই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ম্যাচ শেষে'। ধারাভাষ্যে শেন ওয়ার্ন, হার্শা ভোগলে আম্পায়ার ইয়ান গুল্ডের সমালোচনা করেন। সৌরভ গাঙ্গুলি বলেন,' খেলার ওই রকম পর্যায়ে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত একটি দলের মানসিকতা ভেঙে দেয়। এরপরেও আরও দুটি ভুল সিদ্ধান্ত! অথবা ষড়যন্ত্র। এরপরেও ছেলেদের মন ফুরফুরে থাকবে?
এত কিছুর পরেও যদি আপনি বলেন আমাদের ছেলেরা ভাল খেলেনি তাহলে আপনিই বলুন একজন সাধারণ টিভি দর্শক হয়েও কি আপনার মন ভেঙ্গে যায়নি? তাহলে মাঠে যারা ছিল তারা কেন ভেঙ্গে পড়বে না। একটি দল যদি একবার মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে তাহলে সেই দল তো ভুল করবেই। কাজেই এই ছেলেদের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে একবার ভাবুন। কাজটা কি ঠিক হচ্ছে?
বিশ্ববাসী আরেকবার নতুন করে জানল বাঘ সত্যিই শিয়ালের ধূর্ততার কাছে হেরে যেতে পারে। কোন আবেগ নয় একেবারে মন থেকে বলছি এমন ক্রিকেট নষ্টামির মাঝেও খেলা চালিয়ে গিয়ে যে হার তা কোনভাবেই অগৌরবের নয়। বাংলাদেশ দলকে তাই অভিনন্দন। মাশরাফি খেলা শেষে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে "আজকের দিনটা বাদে সবাই খুশি থাকবে বলেই আমার মনে হয়। আমাদের অনেক খেলোয়াড় কেবলই ক্যারিয়ার শুরু করেছে। তাদের চেষ্টায় সবার খুশি থাকা উচিত।" মাশরাফিকে বলতে চাই বাংলাদেশের আজকের পারফর্মেন্সেও আমরা অনেক খুশি।
সবশেষে বলব ১৯ মার্চ ২০১৫ বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এ দিনের খেলায় কোন দলই জেতেনি হারেওনি কোন দল। এদিন হেরেছে ক্রিকেট হেরেছে সততা। জয়ী হয়েছে অসততা, জোচ্চুরি। ভদ্রদের খেলা থেকে খসে পড়েছে ভদ্রতার মুখোশখানি। আইসিসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু আজ তাঁর বহিঃপ্রকাশটা এতটাই নগ্ন হয়ে পড়ল যে, ক্রিকেট আর রেসলিং এর মধ্যে আর কোন পার্থক্যই থাকল না। এখন ক্রিকেটকে বাঁচাতে হলে আগে আইসিসির বাঁচতে হবে। আইসিসিকে আগে তিন মোড়লের কব্জা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। নয়ত ক্রিকেট তার আবেদন হারাতে বাধ্য।
kmgmehadi@gmail.com