কর আদায়ে বিকল্প পন্থা অবলবম্বন জরুরি

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 4 June 2015, 05:57 PM
Updated : 4 June 2015, 05:57 PM

আমরা যতটা নীতিকথা বলি মূলত তার থেকেও বেশি দুর্নীতি করি। আর এ কারণেই যারা আয় কর নিয়ে এত কথা বলেন তারা নিজেরাই সেই আয় করটি নিয়মিত দিচ্ছি না। অথচ সরকারের আয় ব্যয়ের হিসেব মেলাতে এই আয় করের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমি জানি না এ দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের আয় ব্যয়ের বা বাৎসরিক লাভ লোকসানের হিসেব সম্বলিত সঠিক কোন তালিকা আছে কি না।

যদি না থাকে তাহলে ঐ সব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সঠিক কর আদায়ই বা কি করে সম্ভব? যদিও সোল প্রোপ্রাইটর শিপের ক্ষেত্রে আয়কর গ্রহণে ব্যক্তিগত টিন নাম্বারই ব্যবহৃত হয় সে ক্ষেত্রে ইনকামের হিসেবটা কে করেন? আর কিভাবেই বা করেন?

এর সাথে আরেকটি বিষয় জড়িত তা হল ব্যক্তিগত আয় কর। আমরা যদি জানতে পারি যে, কোন প্রতিষ্ঠান কি পরিমাণ মুনাফা করছে তাহলে ঐ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাদের বেতন বা আয় সম্পর্কেও একটি ধারনা পাওয়া সম্ভব। আর সেখান থেকেই আমরা ধারনা করে নিতে পারতাম এ দেশে কত সংখ্যক লোক আয়কর প্রদানে সক্ষম। আর কত সংখ্যক লোক আয়কর প্রদান করছেন।

যদিও প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রার শুরুতে ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট জাতীয় কিছু কাগজপত্র করতে হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আর এ সবের তেমন কোন খোঁজ নেয়া হয় বলে শোনা যায় না। এমনকি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেও ট্রেড লাইসেন্স নেয়া যায় বলে জানা যায়। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে এর খোঁজ খবর নেয়ার তোঁ প্রশ্নই ওঠে না।

এ অবস্থায় জনগণকে আয়কর প্রদানে বাধ্য করার কোন বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। যেখানে কর্পোরেট ট্যাক্স বা ব্যবসায়ীদের আয়কর প্রদানের চিত্রই এই। সেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে আয়কর অতি মাত্রায় নীতিবান ছাড়া যে কেউ দেন না তা বলাই বাহুল্য।

কর আদায় নিশ্চিত করতে এ ক্ষেত্রে সরকার একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে তা হল, দেশের প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কর্পোরেট আয়কর প্রদান বাধ্যতামূলক করার সাথে সাথে ঐ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাবৃন্দের বেতনের অনুকূলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আয়কর পরিশোধের দায়ও ঐ প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। এ মর্মে সরকার একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক। বিধান করা হোক উক্ত প্রতিষ্ঠান তার কর্মকর্তাবৃন্দের বেতন থেকে নির্ধারিত অংকের টাকা কেটে রেখে সরকারী কোষাগারে জমা করবেন।
এ দেশে সঠিক ভাবে আয়কর প্রদান নিশ্চিতকরণের এটা একটি ভাল পন্থা হতে পারে।

তবে এ ক্ষেত্রে যদি কোন কর্মকর্তা নিজেই সরকারি কোষাগারে কর জমা করবেন বলে মনে করেন সে ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হবে কর প্রদান রসিদের অনুলিপি জমা রাখা। যা তাকে আয়কর প্রদানে বাধ্য করবে। শতভাগ না হোক; কর প্রদানে সক্ষম জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশও যদি সঠিকভাবে কর দিত। এ দেশের চেহারা আমূল বদলে যেত।

kmgmehadi@gmail.com