মাঝি বুঝবেন কবে?

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 8 Feb 2016, 06:16 PM
Updated : 8 Feb 2016, 06:16 PM

মেনে নিলাম তারা সব বিএনপি-জামায়াতের লোক আর তারা সরকারকে বিপদে ফেলতেই অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড করছেন।
আপনারা সব বুঝেও কেন চুপচাপ বসে আছেন? কেন প্রত্যেককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিচ্ছেন না? কেন সে শাস্তি প্রদানের কথা ফলাও করে প্রচার করছেন না?
দেশ চালাবেন আপনারা আর নির্বিঘ্নে সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে যাবে বিএনপি-জামায়াত। এটা খুব বেশী ছেলেমানুষি কথা হয়ে গেল না?
৫/২/১৬ তারিখের যুগান্তরেই দেখলাম লীগের কর্মী হওয়া স্বত্বেও লীগের ছেলেদেরই চাঁদা দেয়নি বলে তারা এমনতরই কুপিয়েছে যে মাথাসহ সারা শরীরেই তার জখম। মাথায় ২৬টি সেলাই। সারা শরীরে আরও ৩৭টি। দুই পায়ে বিদ্ধ হয়েছে তিনটি গুলি। তিনটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কিরিচের কোপে- ক্ষতবিক্ষত এই শরীর নিয়েই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন দিদার মার্কেট ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কর্মী সান তালুকদার। সিলেট থেকে সেই অস্ত্রের চালান পাঠিয়েছেন আবার আওয়ামীলীগেরই এক নেতা।
এবার বলুন এরাও কি বিএনপি-জামায়াতের লোক?


জানি এ ক্ষেত্রে আর সেটা বলতে পারবেন না। তবে একই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, এই নির্মম হত্যা চেষ্টাটি করা হয়েছে শিবির ক্যাডারদের সহযোগিতায়ই। যদি তাই হয় তাহলে এবার এতদিন ধরে যারা বলে এসেছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে জামায়াত-শিবির হটানোর জন্য ছাত্রলীগের প্রয়োজন তারা নিশ্চয়ই এখন থামবেন?
আর আজ আমাদেরও বলতে বাধা নেই যে আওয়ামীলীগের কেন্দ্র যাই চাক না কেন আসলে ক্যাডারদের কোন জাত নেই ওরা একে অপরের সহযোগী মাত্র। প্রকাশ্যে যিনি যে রূপই ধারণ করুণ না কেন। আড়ালে তারা খাবারটা খান একই পাতে।
ঐ একই পত্রিকার আজকের কয়েকটি শিরনাম দেখুন-
** এমপি রানা ভাই মুক্তিসহ ঢাকায় আত্মগোপনে; আছেন প্রভাবশালী দুই আওয়ামী লীগ নেতার শেল্টারে
** পুলিশি চাঁদার আগুনে মরলেন দোকানি
** সিলেট থেকে অস্ত্রের চালান পাঠান আ'লীগ নেতা; চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর হামলার নেপথ্যে
** পুলিশ হেফাজতে স্বামী নিহত, স্ত্রী নিখোঁজ ১ মাস
** ছাত্রলীগ কর্মী হত্যায় ১৫ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কার

কাজেই আল্লাহর ওয়াস্তে মোহমুক্ত হন। প্রকৃত অপরাধীর পরিচয় ভুলে গিয়ে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করুণ। গণতন্ত্রের তৃষ্ণা হয়ত উন্নয়নের ধারায় সাময়িকভাবে প্রশমিত হয়। কিন্তু সুশাসনের অভাব মেটেনা কোন কিছুতেই। বরং সে অভাবের অনল সব অর্জনকেই নিমেষে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে।
কাকে রক্ষা করতে গিয়ে আপনি কাকে মারছেন একজন সুশাসককে সে বিবেচনাই আগে করতে হয়।
একদিকে পুলিশের অতি বাড়াবাড়ি অন্যদিকে দলের নেতা কর্মিদের ধরাকে সরা জ্ঞান করা যে নিজেদের বিপর্জয়ের পালেই কেবল হাওয়া লাগাচ্ছে মাঝি বুঝবেন কবে, তরী ডুবলে পরে? এ তরী ডুবলে পরে দেশটা যে রসাতলে যাবে। উল্টো ট্র্যাকে সে যাত্রা কেই বা পুনরায় দেখতে চায়?

পুনশ্চঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সবকিছু আপনাকেই দেখতে হয় তখন আপনিই একটু নজর দিন। আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল তো আপনিই।