আমি ব্যাংকারও নই অর্থনীতিবিদও নই; বিষয়টা ভালো বুঝিও না। কিন্তু প্রশ্নটা মনের মধ্যে খচখচ করে। আমাদের দেশে একটা শব্দ প্রায়শঃই শোনা যায়, আর তা হল আন্ডার ইনভয়েসিং।
যারা বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকেন তারা এই শব্দটি সবথেকে বেশি ব্যবহার করেন। বোধ করি ভালোও বাসেন। কারণ এর সাথে জড়িয়ে থাকে তার ব্যবসায়িক লাভের হিসাব। যে পণ্যটি আপনি এক হাজার ডলারে কিনে আনছেন সেই পণ্যটির মূল্য ঘোষণা করছেন ১০০ ডলার। তাতে লাভটি হল সরকার ঐ একশত ডলারের রাজস্ব পেল। বাকি নয় শত ডলারের রাজস্ব হারাল। আর আমদানি কারক আমদানি করা পণ্যটি বাজার দরে অর্থাৎ পূর্ণ রাজস্ব দানের পরে যে মূল্য দাঁড়াত তার সাথে তার লাভ রেখেই বিক্রি করার সুযোগ লাভ করল। যা তাকে রাতারাতি কোটিপতি হতে সহায়তা করে।
এই আন্ডার ইনভয়েসিং করা মালের চালান মাঝে মাঝেই শুল্ক বিভাগে ধরা পড়ে তারা তখন পণ্যের মূল্য অনুযায়ী রাজস্ব নির্ধারণ পূর্বক একটা জরিমানা ধার্য করেন। তখন আমদানী কারক জরিমানা সমেত পুরো রাজস্ব দিয়ে তবেই তার পণ্য ছাড় করাতে বাধ্য হন।
এ পর্যন্ত আমার কোন প্রশ্ন নেই। আমার প্রশ্নটা হল শুল্ক কর্মকর্তারা যখন নিশ্চিত হলেন যে পণ্যটি আন্ডার ইনভয়েসিং করে আনা হয়েছে। তখন কি তিনি এটা বুঝতে পারেন না যে দশ ভাগ মূল্য দেখিয়ে যে পণ্যটি আমদানি করা হল তার নব্বই ভাগ পণ্য মূল্য অবৈধভাবে পরিশোধ করা হয়েছে। বিক্রেতা তো সঠিক পণ্য মূল্য পেয়ে তবেই পণ্যটি শিপমেন্ট করেছেন। সেক্ষেত্রে বাকি টাকাটা তার কাছে কিভাবে পৌঁছুল?
এ ক্ষেত্রে আমদানী কারককে শুধুমাত্র জরিমানা গুনেই ছেড়ে দেয়া উচিত নাকি মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত?
আমাদের সরকার এবং এনবিআর মানি লন্ডারিং নিয়ে অনেক কথা বলেন অথচ এর প্রতিকারের ক্ষেত্রে তাদের চোখে থাকে টিনের চশমা। এটা কি ইচ্ছাকৃত নাকি এ সব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময়ই তাদের নেই?
যেহেতু এটা আমার একটি প্রশ্ন সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কেউ কি আমায় সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে বাধিত করিবেন?
kmgmehadi@gmail.com