প্রসঙ্গ: নাগরিক নিরাপত্তা

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 20 April 2016, 06:59 AM
Updated : 20 April 2016, 06:59 AM

সিম নিবন্ধন এবং প্রশাসন কর্তৃক ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে খুব একটা সহযোগিতা করতে পারবে না। যতক্ষণ না সরকার মেট্রোপলিটন শহর গুলি ও তার কাছাকাছি অবস্থিত রেল স্টেশন ও রেলের জায়গায় অবস্থিত সকল অননুমোদিত আবাসন বন্ধ করতে সক্ষম হবেনা।

অননুমোদিত আবাসন বলতে আমি বস্তিকে নির্দেশ করছি। বস্তিতে যারা থাকেন তাদের অধিকাংশের নির্দিষ্ট কোন পেশা নেই। তাদের সঠিক তথ্যও প্রশাসনের কাছে থাকে না। এমনকি বস্তিবাসীদের মধ্যে যারা অপরাধে লিপ্ত তারা নির্দিষ্টভাবে কোন বস্তিতে থাকেও না।

যত বড় বা ছোট অপরাধই সংঘটিত হোক না কেন সকল অপরাধের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে এই সব ঠিকানা হীন মানুষগুলো। ভাড়াটিয়ার অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য যেহেতু বাড়ীওয়ালা অভিযুক্ত হন সেহেতু প্রতিটি বাড়ীওয়ালাই ভাড়াটিয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকেন। কিন্তু বস্তিগুলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। বস্তি যিনি স্থাপন করেন তিনি সর্বদাই থাকেন চোখের আড়ালে। আর তার এই অবৈধ স্থাপনায় যে বৈধ লোকের আবাসন করে দেবেন এমন চিন্তা করাও তো বাতুলতা মাত্র। কাজেই যারা সেখানে থাকেন তাদের কোন জবাবদিহিতা থাকে না। প্রকাশ্যে এরা কোন কাজের সাথেও যুক্ত নয় অথচ তারা দিব্যি জীবন ধারণ করছেন। তাদের আয়ের উৎস কি তা সহজেই অনুমেয়।

রেলের যাত্রীদের নিরাপত্তাও অনেক খানি বিঘ্নিত হয় রেলের জায়গায় অবস্থিত বস্তিবাসীদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের কাড়নে। শোনা যায় রেলে ছিনতাই এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদেরও আবাসও রেল লাইন ঘেঁষা বস্তিগুলো। ছিনতাই, রাহাজানি, দেহ ব্যবসা, রাজনৈতিক দলের হয়ে বোমাবাজি এমনকি হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত যারা ঘটায় তাদের প্রধান আশ্রয় স্থল এই বস্তি-ঝুপড়ী। কাজেই সরকারের এই দিকটায় নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরী।

কতটা সম্ভব জানি না তবে এ ক্ষেত্রে আমার প্রস্তাব হল ঢাকাসহ মেট্রোপলিটন শহর গুলিতে বসবাসরত প্রত্যেক নাগরিককে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচয় পত্র প্রদান করা হোক। যারা ঢাকায় থাকেন না কিন্তু কাজের তাগিদে প্রতিদিন যাওয়া আশা করেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তাদের পরিচয় পত্র বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।

কোন কোন প্রয়োজনে কারো কারো জন্য সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃক অস্থায়ী পরিচয়পত্রও প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কাজটি সহজ নয় মানি। তবে মেট্রোপলিটন শহরে বসবাসকারীদের নিরাপত্তায় এ ধরনের একটি ব্যবস্থা থাকলে বোধ হয় ভাল হত।

সেই সাথে এই সব উদ্বাস্ত মানুষগুলি মফস্বলে চলে গেলে সেসব যায়গায়ও কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যাবে। সার্বিকভাবে যা দেশের অর্থনীতির জন্যও মঙ্গলজনক।

kmgmehadi@gmail.com