আগে জীবনের মূল্য নির্ধারন করুন

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 21 Sept 2016, 06:20 PM
Updated : 21 Sept 2016, 06:20 PM

আস্থা-বিশ্বাস-ভালবাসা-পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ একটি সংসার দাঁড়িয়ে থাকে এই চারটি ভিতের উপর। এর একটি নড়বরে হয়ে গেলে বাকিগুলোতেও ঘুণ ধরে। তখন সে সংসার ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য।
সময়মত ঘুণ ধরা এই ভিতের মেরামত যদি না করা হয় তাহলে ঐ সংসারটাই হয়ে পরে অগ্নিগর্ভ। আর সে আগুনে পুড়ে মরে সংসারের প্রতিটি সদস্য।
কখনো যদি সেই ভিতগুলো মেরামত অযোগ্য বলে বিবেচিত হয় তখন সংসারটি ভেঙ্গে দেয়াই সমীচীন।

যদিও কথাটা অনেক রূঢ় শোনাচ্ছে তথাপিও এটাই বাস্তবতা। আজকের সময়ে নিত্য মা কর্তৃক শিশু খুন, সন্তান হত্যার পরে মায়ের আত্মহত্যা। স্বামী কর্তৃক স্ত্রী, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী খুন এর প্রায় সবটার পেছনে একই কার্যকারণ বিদ্যমান।
এই খুন গুলোর কোনটিই পরিকল্পিত থাকে না। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনিয়ন্ত্রিত রাগের ফসল এই সব হত্যাকাণ্ড। যা আমরা সচেতন হলে; একটু দায়িত্ববান হলেই এড়াতে পারি।
নিকটাত্মীয়দেরই এ ক্ষেত্রে মুল ভূমিকা পালন করতে হয়। আক্রান্ত সংসারের প্রত্যেকের নিরাপত্তার খাতিরেই তখন আলাদা বসবাসের ব্যবস্থা করে দেয়া বাঞ্ছনীয়। একই সাথে প্রত্যেককে নিজ নিজ পরিবারের সাহচর্যে রাখাটাও জরুরী। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা, প্রতিবেশীদের জী বন যাপন প্রক্রিয়াকে উদাহরণ হিসেবে টেনে এনে বিধ্বস্ত ঐ সদস্যকে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে তার নিবিড় মানসিক পরিচর্যা করতে পারেন। কে জানে আত্মপলব্ধি আর সঙ্গীর সাথে দূরত্ব উভয়ের মধ্যেই নতুন ভালবাসারও সঞ্চার করতে পারে। তারা একটি সময় আবার নিজ নিজ সংসারে ফিরে যাবার মত উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারে।
আর যদি একান্তই তাদের পুনর্বাসিত করা সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে একেবারে আলাদা হয়ে যাওয়াটাই উত্তম। সংসার যুদ্ধক্ষেত্র নয়, সংসার প্রশান্তির নিবাস। সেখানে কোণ কুটচাল বা জয় পরাজয়ের সুযোগ নেই।
আমাদের মনে রাখা উচিৎ জোড়াতালি দিয়ে জোর করে একটি সংসার টিকিয়ে রাখার থেকে পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা অনেক বেশী জরুরী। একটি সংসারের মূল্য কখনোই একটি জীবনের থেকে বেশী নয়। জেদের বশবর্তী হয়ে বা সামাজিক মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে আমরা যেন কাউকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে না দেই।

kmgmehadi@gmail.com