আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা: প্রাসঙ্গিক ভাবনা

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 5 Nov 2016, 12:51 PM
Updated : 5 Nov 2016, 12:51 PM

আমরা জানি না আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটা কেমন হওয়া উচিৎ। যে যেভাবে চাচ্ছে সে সেভাবেই একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। আর শিক্ষার্থীও ঠিক জুটে যাচ্ছে। কেউ ইংরেজিতে বাংলা পড়ায়। কেউ বাংলার ধারই ধারেন না, বিদেশী কারিকুলামেই শিক্ষা দিচ্ছেন। কেউ বা সব রেখে নিজেদের মত করে ধার্মিক বানাচ্ছেন(!)। ঐশ্বরিক গ্রন্থ বিদেশী ভাষায় ঠোটস্থ করিয়েও নাকি শিক্ষিত বানানো যায়! সেমত শিক্ষিত বানিয়ে চলেছেন আরেক দল।

এই যে ইচ্ছা মত শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বে এমন নজির আর কোন রাষ্ট্র রাখতে পারেনি। আমরা পেরেছি। আর পেরেছি বলেই আজ আমরা শতধা বিভক্ত। আমাদের দেশের সাধারণ যে শিক্ষা ব্যবস্থা তা কেবল অফিস কেরানীই বানাতে সক্ষম।

কওমি শিক্ষায় শিক্ষিতদের দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। আর ইংলিশ কারিকুলাম তো চালুই করা হয়েছে প্রবাস জীবনের জন্য।

অবশ্য যাদেরকে নির্দেশ করে কথাগুলো বলছি মূলত তাঁরা সকল মাধ্যমের সাধারণ শিক্ষার্থী। যারা এদের মধ্যে অসাধারণ তাঁরা শিক্ষক-অভিভাবক এবং সর্বোপরি স্ব ইচ্ছায় বাড়তি যত্ন আত্তি করে নিজেকে ভিন্ন মাত্রায় উপস্থাপন করতে সক্ষম হন। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা যে একেবারেই থাকে না তাও বলার উপায় নেই। বিষয়টা যেন এমন যে তুমি চাইলে রাষ্ট্রীয় সুযোগ নিতে পার। না চাইলে নয়।

সাধারন শিক্ষাথীদের জন্য উৎপাদনমূখি শিক্ষা বলতে রয়েছে কারিগরী শিক্ষা। সেক্ষেত্রে না আছে শিক্ষার্থীদের উব্দুদ্ধ করার ব্যবস্থা না আছে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা। শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই থাকছে বিভ্রান্ত।

কিন্তু এতে করে যে বিশাল সংখ্যক মেধার অপচয় হচ্ছে সেদিকে রাষ্ট্রের খেয়াল নেই। অভিভাবকদের অসচ্ছলতা, অসচেতনতা, শিক্ষার্থীর অমনোযোগিতা এসব তো সবদেশেই বিরাজমান তাই বলে কি রাষ্ট্র কোন ভূমিকাই নিবে না? যাতে সকলে সমান শিক্ষার সুযোগ পায়।

রাষ্ট্র কি সাধারণ মানুষকে এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবে না যাতে একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষা জীবন নিয়ে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যাতে একজন মানুষ শিক্ষা জীবন শেষে তার প্রিয় পেশাটা বেঁছে নিতে পারেন।

আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একমাত্র কাজ শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফলের ব্যবস্থা করে দেয়া। তাঁরা ব্যস্ত পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে। শিক্ষার মান নিয়ে তাদের ভাবার অবকাশ কোথায়?

আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি আজো ঠিক করতে সক্ষম হয়েছে যে এ দেশে আসলে কোন শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। শিক্ষার এই দৈন্য দশার সাথে যুক্ত হয়েছে নৈতিক শিক্ষার অভাব যা ক্রমাগত দেশকে নিয়ে যাচ্ছে সনদ প্রাপ্ত অশিক্ষিত দেশের দিকে। যেখানে সনদ প্রাপ্ত বেকার থাকবে, যেখানে সনদ প্রাপ্ত অমানুষ থাকবে। থাকবে না শুধু সুশিক্ষিত সজ্জন উৎপাদন ক্ষম ভালমানুষ ।