দান করছেন? সঠিক স্থানে দান করুন

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 19 Nov 2016, 05:53 PM
Updated : 19 Nov 2016, 05:53 PM


আপনি আমি প্রায়শই দান করি ২-৫-১০ করে প্রতিদিন ১০-২০-৩০ বা তারও বেশি। প্রতিদিনের এই দানের অঙ্কটা মাস শেষে ৫০০-১০০০ থেকে আরও বেশি হতে পারে। টাকাটা কোন একজন পেলে তাকে আর ভিক্ষা করে খেতে হত না। এ তো গেল একটি দিক আরেক দিক দিয়ে ভাবুন যাদের ভিক্ষা দিচ্ছেন তাঁরা কিন্তু পেশাদার। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই এই ভিক্ষার টাকাটা উত্তোলনকারীও নয় পেয়ে যায় একটি সিন্ডিকেট যারা ভিক্ষা করায়। এদের মধ্যে অক্ষমের সংখ্যাও নিতান্তই নগণ্য। অর্থাৎ আপনার দানের অর্থ কিন্তু প্রকৃত ভিক্ষুক বা অসহায় পাচ্ছে না।
এখন প্রশ্ন হল প্রকৃত অসহায় কারা বা আপনার দানের অর্থ আসলে কার পাওয়া উচিৎ। আপনার বাসার দারোয়ান যার কর্ম ঘণ্টা ২৪ ঘণ্টা তাঁর বেতন ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার। রাতের বেলা যে সব নাইট গার্ড আপনাকে স্বস্তিতে ঘুমাতে সাহায্য করছে তাঁর মাসিক বেতনও ৬ হাজার থেকে ১০ হাজারের মধ্যে।

আপনার কি মনে হয় এই লোকগুলো তাদের পরিবার নিয়ে এই বাজারে দুই বেলা খেয়ে পরে বাঁচতে পারছে? তাদের সন্তানদের পড়ালেখা করাতে পারছে? অথচ তাঁর বেতনের সাথে যদি আমার আপনার দানের টাকা যোগ করে দেই তাহলে দেখব একটি বাড়িতে যদি দশটি পরিবার থাকে তাহলে তাদের মূল বেতনের সাথে প্রতি মাসে আরও পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা যোগ হয়ে যাচ্ছে। ভাবুন তো তাঁরা কতটা ভাল থাকতে পারতেন।
আমি প্রতি সপ্তাহে জুমাবারে ইমাম সাহেবের একটি ঘোষণা শুনতে পাই যেখানে তিনি বলেন গত সপ্তাহে কত টাকা দান বাক্সে জমা হয়েছে। অংকটি ৩৫০০০ থেকে ৪৫০০০ একটি বার কি ভেবে দেখেছেন মহান আল্লাহ দান করতে বলেছেন কাকে? আর সে দানের উদ্দেশ্যই বা কি?

আমি এমনও দেখেছি রিকশাওয়ালার ভাড়া মিটিয়ে দেয়ার সময় ৫ টাকা বেশি দাবি করায় বেচারাকে যা নয় তাই বলে গালমন্দ করে বিদায় দিয়ে ঐ যাত্রীই ১০ টাকা এক ভিখিরির হাতে গুঁজে দিল। অথচ ঐ ভিখারি ছিল যথেষ্ট শক্ত সামর্থ্য। বলুন তো ঐ দানের টাকাটার আসল দাবিদার কে ছিল?

আমাদের ইবাদত হয়ে গেছে লৌকিকতা সর্বস্ব অবশ্য আদৌ যদি সে ইবাদত স্রষ্টার নির্দেশ পালনার্থে হয়ে থাকে। প্রশ্ন হল এই ইবাদত কি মহান স্রষ্টার কাছে গ্রহণ যোগ্য হবে? আর যদি এই দান জনস্বার্থেও হয়ে থাকে তাহলেও তা তো প্রকৃত অসহায়কেই করা উচিৎ। তাই নয় কি?