হুমকিটা সামন্ত প্রভুদের মতো হয়ে গেল না?

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 2 March 2017, 01:46 AM
Updated : 2 March 2017, 01:46 AM

ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং করলে ওই গাড়ির চালককে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার হুমকি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। (যুগান্তর ২২.২.১৭)।

মেয়র মহোদয়ের কাছে আমাদের প্রশ্ন। মূল সড়ক আটকে দিয়ে যারা গাড়ী পার্ক করে স্কুল শুরুর এবং ছুটির প্রতীক্ষা করে থাকেন তাদের কি শাস্তি দিবেন? যদি সে গাড়িতে স্বয়ং গাড়ীর মালিক বসে থাকেন তাহলেই বা শাস্তিটা কাকে দিবেন?

মূল সড়কের পাশে পুরো বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে কোন রকম গাড়ী পার্কিং এবং অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা না করেই যারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন তাদেরই বা কে শাস্তির আওতায় আনবে? আর এভাবে স্কুল পরিচালনার অনুমতি যারা দিলেন, তাদেরই বা কি শাস্তি হবে?

সবথেকে বড় কথা; যে চালককে আপনি বেধে রাখার হুমকি দিলেন তার দায়টা কোথায়? গাড়ির মালিকের নির্দেশের বাইরে তো তার এক পাও চলার ক্ষমতা নেই। গাড়ির মালিক তাকে যেভাবে চালাতে বলবে এবং যেখানে যতক্ষণ পার্ক করে রাখতে বলবেন সে ঠিক ততক্ষণ সেখানে গাড়ী পার্ক করে রাখবে। শাস্তিটা তো প্রাপ্য গাড়ির মালিকের। চালককে কেন হুমকি দিচ্ছেন?

ছবিটি উত্তরা, সেক্টর ১৩ গাউছুল আজম এভিনিউতে অবস্থিত মাস্টার মাইন্ড স্কুলের সামনে থেকে নেয়া। ১/৩/১৭ দুপুর ২টা।

মাননীয় মেয়র মহোদয়, মন ভোলানো কথা বলতে গিয়ে যে ক্রমশঃ নিজেদের সামন্ততান্ত্রিক চেহারাটাই বেড়িয়ে আসছে। সে খেয়াল আছে তো? কদিন আগেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নাগরিক সাংবাদিকদের সাথে ড্যাফোডিল টাওয়ারে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র মহোদয় বসেছিলেন। বলছিলেন নাগরিকের রাস্তা নাগরিকদের ফিরিয়ে দেব। যদিও আমি ঢাকা উত্তরের বাসিন্দা তথাপিও মেয়র মহোদয়কে বললাম, মেয়র মহোদয় আপনি যখন বলছেন, নাগরিকের রাস্তা নাগরিকদের ফিরিয়ে দেব ঠিক তখনই আমরা উত্তরা বাসি দেখতে পেলাম মূল সড়ক জুড়ে স্কুল ভবনের অনুমতি দেয়ায় সকাল বিকাল মূল সড়কগুলি দখলে নিয়ে নিচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়িগুলো। সাধারণ মানুষকে পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে একঘন্টা সময় লাগছে। এমন কি আশেপাশের বাসা বাড়ীর ছাত্র ছাত্রীরা যে রিকশায় বা পায়ে হেটে বাসায় ফিরবে সে জায়গাটাও অবশিষ্ট থাকে না। অফিসগামী মানুষগুলো চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। এর সমাধান কি? আপনার মাধ্যমে উত্তরের মেয়র মহোদয়ের কাছে আমার প্রশ্ন।

উত্তরে মেয়র মহোদয় ভীষণ আশাবাদী কন্ঠে আমায় আশ্বস্ত করলেন, তিনি বললেন উত্তরের মেয়রকে আজই তিনি বিষয়টি জানাবেন। তিনি আশা করছেন সমাধান পেয়ে যাব। আসলেই কি সমাধান পাব? সেটা সময়ই বলে দেবে তবে সংযুক্ত ছবিগুলো আজ বেলা ২টায় নেয়া।


ছবিগুলো যেন বিদ্রুপ করে বলছে, মেয়র মহোদয়গণ যেমন সামান্ত প্রভুদের কন্ঠে কন্ঠ মেলাতে পারেন, তেমনি সামান্তপ্রভুদের স্বার্থ সংরক্ষণেও তারা যথেষ্ট যত্নশীল।