ছাত্রসমাজ আজ বড় বেশি অসহিষ্ণু

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 18 April 2012, 06:18 AM
Updated : 18 April 2012, 06:18 AM

ছাত্রসমাজ আজ যে এত অসহিষ্ণু। এর জন্য দায়ী আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। আমাদের কারিকুলামে কতটুকু নৈতিকতা শেখানো হয়? ক'জন আদর্শ ব্যক্তির জীবনী পড়ানো হয়? কি শেখানো হয়?আজ যদি একটি খুদে শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করা হয়, বড় হয়ে সে কি হতে চায়। সে বলছে বড়লোক (ধনী) হতে চাই। বড়মানুষ বলছে না। আসলে বড়মানুষ বলতে যে কি বোঝায় সেটাই সে জানে না। কারন আমরা ব্যর্থ তাদের শেখাতে। সামান্যতম সংযম তাদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। সেটা পরিবহনে ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্র থেকে শুরু করে ছোট – বড় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের এই অসহিষ্ণুতা প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হয়। এ তো গেল ছাত্রদের কথা এ ছারা রয়েছে ছাত্র নামধারী অছাত্র এবং রাজনৈতিক দলের ক্যাডার। যাদের যন্ত্রনায় বর্তমানে সাধারন ছাত্রদের ত্রাহি অবস্থা। এরা প্রতিবাদের ভাষা বলতে কেবল ধ্বংসকে বোঝে, যা কখনোই প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। কথায় কথায় গাড়ী ভাংচুর, মারামারি বা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা এটা কোনো সভ্য সমাজের কাজ হতে পারে না। আস্তে আস্তে যা ছড়াচ্ছে সাধারন ছাত্রদের মাঝেও। ছাত্ররা যদি নিজেদের এই কাতারে শামিল করে ফেলে তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে অবরোধ, হতে পারে মানব বন্ধন, হতে পারে অবস্থান কর্মসূচী এমনকি অনশন। গাড়ী কেন ভাঙছেন? কার গাড়ী ভাঙলেন? ঐ গাড়িতে তো আপনার বা অন্যকারো অসুস্থ মা-বাবা থাকতে পারেন। হয়ত আপনার জন্যই তিনি মারা গেলেন। কি করে ক্ষমা করবেন নিজেকে। একবার ভাবুন? আপনি ছাত্র আপনি নিজেকে তৈ্রী করতে এসেছেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। কি শিখাবেন তাদের? ধ্বংস না সৃষ্টি, শান্তি না অশান্তি? তার উপর নির্ভর এ দেশের ভবিষ্যৎ। সামান্য লাভের আশায় বিকিয়ে দিচ্ছেন নিজের এবং আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎ। ঠিক করছেন? ভাবুন। আজ আমরা যেমন সংসদে দেখি নবীন সদস্যরা যখন অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে তখন তাদের নেতা-নেত্রীরা টেবিল চাপরে উৎসাহ দেন। ঠিক তেমনি এই সব তথাকথিত ছাত্রদের পেছনেও একটি অশুভ শক্তি কাজ করে যার ফলশ্রুতিতে তারা লাগামহীন। বলা হয় দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রদের উজ্জ্বল ভূমিকার কথা। তাদের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, ভেবে দেখুন কোনো আন্দোলন সফল করতে কি ছাত্রদের আলাদা সংগঠনের প্রয়োজন হয়? হয় না। বরং বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্ত করে। ৫২,৬৯,৭১,৯০ বা গত তত্ত্বাবধায়কের সময়ে সংগঠিত যে ছাত্র আন্দোলন তাতে কোন ব্যানারই কার্যকর ছিল না। আর সে ক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন সাধারন ছাত্ররা। যারা লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির বাইরে। আসলে বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রদের ব্যবহার করছে তাদের পেশীশক্তি হিসেবে। আর তাই প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ছাত্ররাজনীতির পক্ষে। এর থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে ছাত্রদের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় হয়ত এমন দিন আসবে যখন ছাত্র পরিচয় দেয়াই হবে লজ্জার। এমন দিন যেন কখনোই না আসে।