সাংবাদিক নির্যাতন আর কত? জবাব চাই!

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল
Published : 4 Jan 2012, 04:06 AM
Updated : 4 Jan 2012, 04:06 AM

গতকাল রাতে বসে সংবাদ দেখছিলাম । একটা খবরে এসে চোখ আটকে গেল । বেসরকারী টিভি চ্যানেল আর টিভির সাংবাদিক অর্পণা সিংহ কে সহ আরো কয়েকজনকে সাংসদ কামাল হোসেন লাঞ্ছিত করেছেন । পড়ে বৈশাখী টিভি চ্যানেলে রিপোর্টারস ডায়রীতে আরো অনেকক্ষণ দেখলাম । একজন সাংবাদিকের কাজ হল যে কোন সত্য উম্মোচন করে জনগনের সামনে তুলে ধরা । এজন্য সাংবাদিকদেরকে জাতির দর্পণ বলা হয়ে থাকে । সেই দর্পণে আমরা সত্যকে দেখি কিংবা দেখতে পাচ্ছি প্রতিনিয়ত । একজন প্রভাবশালী লোক যদি সেই দর্পণ ভেঙ্গে দেন তাহলে কি বলব ?

অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য ওই স্কুলে গিয়েছিলেন সাংবাদিকেরা।ভর্তিতে বেশি টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিবেদন তৈরি করতে আরটিভির সাংবাদিক অপর্ণা সিংহ, জ্যেষ্ঠ ক্যামেরাম্যান সাইদ হায়দার ও স্থানীয় প্রতিনিধি ওসমান গণি ওই স্কুলে যান। অভিযোগের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে তাঁরা স্কুলে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। প্রথমে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে তাঁদের বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভেতরে ঢুকলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হাত দিয়ে ক্যামেরা সরিয়ে দেন এবং তাঁদের ধাক্কাতে ধাক্কাতে প্রধান ফটকের বাইরে বের করে দেন।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুলে এ বছর থেকে দ্বিতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পুরাতন শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে সরকার-নির্ধারিত সেশন ও ভর্তি ফি ছাড়াও 'ডোনেশন' (অনুদান) বাবদ দেড় থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আর নতুন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ২৭ হাজার টাকা। স্কুলে সেশন ও ভর্তি ফি জমা দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে বাড়তি টাকা জমা দিতে হয়। কিন্তু এ জন্য স্কুল থেকে কোনো প্রাপ্তিস্বীকার রসিদ দেওয়া হয় না। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এক লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হয়। এ সমস্যার কথা সাংবাদিকদের জানানোর পর তাঁরা প্রতিবেদন তৈরি করতে এসেছিলেন।

একজন সাংসদ সদস্যের কাছ থেকে আমরা কখন ও এমন আচরন আশা করি না । যেখানে তিনি ব্যাপারটি নিজে দেখতে পারতেন , তিনি সেটা না করে উলটো সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন । টিভি ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা গেছে তিনি অর্পণা সিংহের বুম কিভাবে ফেলে দেন । একে তো চুরি তার উপর সিনা জূরি বোধহয় একেই বলে ।

সরকার এবং প্রশাসন যদি এসব সংবাদ কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যারথ হয় তাহলে এরা কোথায় যাবে । কিভাবে সত্য বের করে আনবে । শিক্ষামন্ত্রি এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমি বলি শুধু দুঃখ প্রকাশ নয় , এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোশী ব্যাক্তিদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দেওয়া হোক । সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি সময় থাকতে এসব ঘটনা গুলোর তদন্ত করে বিচারের ব্যাবস্থা করুন না হলে , সেই টিপু সুলতানের মত ঘটনার আবার জন্ম হবে । সরকার তখন দেশে বিদেশে জবাব দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলবেন ।