বাবার হাতে মেয়ে খুন

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল
Published : 7 Jan 2012, 01:19 PM
Updated : 7 Jan 2012, 01:19 PM

এ কোন ধরনের মানসিকতা । এসব খবর দেখলে শিউরে উথি মনের অজান্তে । এরপর ও পত্রিকা কিংবা কোন টিভি চ্যানেলে এমন নিউজ দেখলে মানব জন্মের জন্য দুঃখ হয় । বাবা জন্ম দাতা জীবন দান করেন যিনি , তিনি কেমন করে নিজের সন্তান কে হত্যা করতে পারেন । আজকের দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন নিউজে কুষ্ঠীয়া থেকে এই খবরটি আসে । আহাকামুল নামের এক পিতা তার কেজী ওয়ানে পড়ুয়া মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেন । সেই সময় তার স্ত্রী পাশের রান্নাঘরে রান্না করছিলেন ।

আহকামুল স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা 'পালক'-এর প্রোগ্রাম অফিসার। আর তানজিদা শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনের কেজি ওয়ানের ছাত্রী। ঘরের মেঝেতে বসে পুতুল নিয়ে খেলছিল ছয় বছরের ছোট্ট মেয়ে তানজিদা হক। বাবা আহকামুল আলম তখন ঘুমে। আর পাশেই রান্না ঘরে সকালের খাবার তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন মা রাকিমা পারভীন। হঠাত্ করেই মেয়ে তানজিদার আর্তচিত্কার। রান্নাঘর থেকে তড়িঘড়ি করে এসে মা রাকিমা দেখেন ঘুম থেকে উঠেই তানজিদার গলা চিপে ধরে আছে তাঁর বাবা। মেয়েকে বাবার হাত থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেন মা। কিন্তু বাবা যখন গলা ছেড়ে দিলেন, তানজিদার দেহ তখন নিথর হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। শরীরে কোনো স্পন্দন নেই, নেই আর কোনো চিত্কারও। নিষ্ঠুর বাবা আহকামুল নিজ হাতে মেয়েকে হত্যা করে বসে আছেন পাশেই।

আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের রামগোপাল মজুমদার লেনের একটি বাসায় এ নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটে। আহকামুলকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তানজিদার মা রাকিমা প্রথম আলো অনলাইনকে বলেন, 'আমার মেয়ে দুনিয়ার লক্ষ্মী মেয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পুতুল-হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে খেলা করছিল। মেয়ের চিত্কার শুনে ঘরে গিয়ে দেখি তানজিদার গলা টিপে ধরে আছে আহকামুল। ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি।'

এদিকে আহকামুল হক বলেছেন আমি আমার মেয়েকে কুরবানী দিয়েছি , কিন্তু কেন সে এমন করল সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছুই জানায়নি । কেন দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। এ সময় তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজনদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'মেয়েকে দাফন করার ব্যবস্থা করো।' এদিকে আহকামুলের ভাই এবং তার স্ত্রী বলেছেন তার নাকি মানসিক সমস্যা ছিল এবং এজন্য সে নিয়মিত ওষুধ খেত ।
সত্যি কি আহকামুল মানসিক রোগী ছিলেন নাকি অন্য কোন কারনে নিজের সন্তান কে হত্যা করেছেন সে ব্যাপারটি এখনো স্পষ্ট নয়। মাঝে মাঝে আমাদের সমাজে এমন ঘটনা ঘটে , কিন্তু আমারা কেউ এমন হিংস্র ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইনা ।