আমাদের গোলটেবিল বৈঠকে ডাকা হয় না অথচ শিক্ষাব্যবস্থা নাকি আমাদের জন্যই!

তুহিন৯১
Published : 19 Oct 2011, 08:15 AM
Updated : 19 Oct 2011, 08:15 AM

পর্ব-১

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ভাষা কোনটি হওয়া উচিত? ইংরেজি না বাংলা। আমরা এমন এক জাতি যে জাতি তার সব কিছুতেই সম্ভবত মিশ্রণ পছন্দ করে। নইলে একজন ছাত্র (অবশই বাংলা মিডিয়ামের) তার জীবনের বারোটি বছর বাংলায় পড়াশুনা করে হঠাৎ করেই ইংরেজিতে পড়াশুনা করতে বাধ্য হয়। এমনটি কেন হবে?

কোন ছাত্র যদি তার ছাত্র জীবনের বারোটি বছর শেষ করে দেশের বাইরে পড়াশুনা করতে যায় তখনই বোঝা যায় বছরে কত দিন আছে। আপনাদের মনে হতে পারে দেশের ছাত্রদের ও তো একই কাহিনী। আসলে বাস্তবতা কিন্তু তা নয়। কারন দেশে যখন আপনি পড়াশুনা করবেন আপনার ক্ষেত্রে বিষয়টা অনেক সহজ। কারন ভাষা ইংরেজি হলেই আপনার পরিবেশটা কিন্তু বাংলা। হয়ত আপনাকে ইংরেজিতে পড়তে হবে কিন্তু আপনার শিক্ষক কিন্তু বাংলাদেশী, বন্ধুরাও তাই। এক্ষেত্রে আপনি তাদের সাহায্য নিয়ে হয়তো কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন কিন্তু বিদেশগামী ওই ছাত্রের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না।

এখন আশা যাক মূল আলোচনায়। এই পার্থক্য করে লাভটা কি? আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করেও আসলে বের করতে পারি নি। আমরা যারা কথায় কথায় উদাহরণ টানি আমেরিকানদের, ব্রিটিশদের ওরা পড়াশুনা করে ওদের মাতৃভাষা ইংরেজিতে। এর পর যদি আসেন চীনাদের কথায় ওরা পড়াশুনা করে চাইনিজ ভাষায়। জাপানিরা জাপানিজ, রাশিয়ানরা রুশ ভাষায়। আমরা? বারো বছর পড়বো বাংলায় বাকি সময়টুকু ইংরেজিতে।

আমরা যারা ছাত্র আমরা ইতিহাস বিকৃত করি না। আমরা ইতিহাস জানি। বায়ান্ন, একাত্তর আমরা ভুলি নি। এই ইতিহাস মাথায় রেখেই বলছি দেশের স্বার্থে যে কোন একটা পথ আমাদের বেছে নিতে হবে। হয়তো শিক্ষা জীবন পুরটাই মাতৃভাষায় হবে নয়তো ইংরেজিতে। এখন কথা হল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আসলে কোনটা হওয়া উচিত?

আমি বলবো অবশই ইংরেজি। জগতের সকল জ্ঞানবিজ্ঞান যে ভাষায় ওই ভাষা গ্রহনই কি শ্রেয় নয়। অন্তত অষ্টম শ্রেণী থেকে ইংরেজি হওয়া উচিত আমাদের শিক্ষা গ্রহণের ভাষা। কারণ ওখান থেকেই মূলত শুরু হয় আসল যাত্রা। এরপর ই কেউ হয়তো বিজ্ঞান এ পরবে, কেউ বা বাণিজ্য এ আর কেউ মানবিক এ। বাংলা অবশ্যই থাকবে কিন্তু ওইভাবে এখন যেমন ইংরেজি আছে।

আপনারা যারা ইন্টারনেট ব্যাবহার করেন তারা সকলেই জানেন যে আমরা যদি বাংলায় কোন শব্দ লেখে গুগল এর দ্বারস্থ হই আমাদের নিরাশ হতে হয়। কারণ আমাদের যে ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করতে পারি কিন্তু পারি না আমাদের মাতৃভাষাকে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করাতে। যেখানে সব জাতি ইন্টারনেট থেকে জ্ঞান নিচ্ছে মাতৃভাষায়। আর আমরা? মনে হতে পারে আমার এই কথা গুলো কি পারস্পরিক সাংঘর্ষিক নয়। এতক্ষণ আমি ইংরেজির সাফাই গাইলাম আর এখন বাংলার কথা বলছি। আসলে দুটোই আমাদেরই প্রয়োজনের খাতিরে।

(চলবে……………)